অজ্ঞানের ডাক্তার ও ডায়গনস্টিক সিস্টেম না থাকায় ২০১৮ সাল থেকে সিজার বন্ধ

Share Now..


স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদঃ
২০১৮ সালের ফেব্রয়ারি মাস থেকে সিজার হয় না ঝিনাইদহ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র্রে। নরমাল ডেলিভারির সংখ্যাও কমেছে আশংকাজনক হারে। ফলে ক্লিনিকগুলোর এখন পোয়াবারো। মা ও শিশু কল্যান কেন্দ্রের সেবার মান কমে যাওয়ায় ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে হতদরিদ্র পরিবারগুলো। হাসপাতালটিতে ১০ জন সরকারী কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকলেও সেবার প্রতি তাদের আস্থা নেই এমন অভিযোগ উঠেছে। অথচ সরকারি এই প্রতিষ্ঠানে নানা প্রকল্পের মাধ্যমে রয়েছে উদ্বুুদ্ধকরণ ও প্রচারণায় বাজেট। সিভিল সার্জন অফিসের দেওয়া তথ্য মতে ঝিনাইদহ জেলায় বর্তমানে সচল প্রাইভেট ক্লিনিক রয়েছে ৬৬টি। ডায়গনস্টিক সেন্টার রয়েছে ৮৮টি। জেলা শহরের হাসান ক্লিনিক, শামীমা ক্লিনিক, ইসলামী প্রাইভেট হাসপাতাল লিমিটেড, আল ফালাহ প্রাইভেট হাসপাতাল, প্রিন্স হাসপাতাল, রাবেয়া ক্লিনিক ও তাছলীম ক্লিনিকে গড়ে ৫/৬ জন নবজাতকের জন্ম হয় প্রতিদিন। কিন্তু ঝিনাইদহ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে ২০২০ সালে নরমাল ডেলিভারি হয়েছে ১৬১টি এবং ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ৯৪টি। জেলা পরিসংখ্যান অফিসের উপ পরিচালক মুহাম্মদ রফিকুল ইসলাম জানান জেলায় বর্তমান জনসংখ্যা ২০ লাখ ৭৫ হাজার ৫১৩ জন। নবজাতক জন্মের হার প্রতি হাজারে প্রামে ২০.০৪ জন ও শহরে ১৫.০৩ জন। সিংহভাগ নবজাতকের জন্ম হয় প্রাইভেট ক্লিনিকে। প্রাইভেট ক্লিনিকে ডাক্তার-সেবিকাদের তত্বাবধান ও পরীক্ষা নিরীক্ষার সুযোগ থাকায় সিজারিয়ান পদ্ধতিতেই আস্থা পাচ্ছে প্রসূতিরা। একটি বেসরকারি সংস্থ্যার তথ্য রয়েছে বর্তমানে সিজারিয়ান ডেলিভারি হয় শতকরা প্রায় ৮৫ ভাগ। যে কারণে ফ্রি হলেও মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে সেবা নিতে যাওয়া রোগীর সংখ্যা কম। অনেকেই অভিযোগ করেছেন এখানে দরিদ্র সন্তান সম্ভবা নারীরা আসলে তাদের প্রাইভেট ক্লিনিক বা সদর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়। ঝিনাইদহ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের মেডিকেল অফিসার ডাঃ তাঞ্জুয়ারা তাসছিলা জানান, ঝিনাইদহ মেটানিটিতে অ্যানেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ না থাকায় সিজার হয়না ২০১৮ সালের ফেব্রয়ারি মাস থেকে। এখানে ডায়গনস্টিক সিস্টেম না থাকায় রোগীর পরিবার রিস্ক নিয়ে এখানে রাখতে চায় না। অনেকেই একবার দুবার সিজারের পরে আসেন। আবার অনেকেই পানি ভাঙার পরে আসে। যার কারণে আমরাও অনেক সময় সদর হাসপাতালে পাঠিয়ে দিই। ঝিনাইদহ জেলা পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপ পরিচালক ডাঃ জাহিদ আহমেদ জানান, সারা বাংলাদেশের অনেক জেলায় মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে। আমরা চালু রেখেছি। নরমাল ডেলিভারি করা হচ্ছে। অ্যানেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ না থাকায় এখানে সিজার করা হয় না। নতুন করে অ্যানস্থেসিয়া ডাক্তার নিয়োগ না হলে সিজার করা সম্ভব নয়। তবে আমরা জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সেবা ও কিশোর-কিশোরী সেবা চালু রেখেছি। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, ঝিনাইদহ মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রের অপর মেডিকেল অফিসার ডাঃ সহিদুর রহমান একই সাথে ৩টি দায়িত্ব পালন করছেন। তিনিও ঠিক রকম এখানে বসতে পারেন না। ফলে রোগীরা হয়রানীর শিক্র হচ্ছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *