আবারো বার্সেলোনায় ফেরার প্রতিজ্ঞা মেসির

Share Now..

মঞ্চটা আগে থেকেই সাজানো ছিলো। অবশেষে ক্যাম্প ন্যুর সংবাদ সম্মেলনে এলেন বিশ্বসেরা ফুটবলার লিওনেল মেসি। তবে এই অনুষ্ঠানে কি হতে যাচ্ছে তা আগে থেকেই সবার জানা ছিলো যদিও কারো এটা কাম্য ছিলো না।

সংবাদ সম্মেলনকক্ষে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গে অনেকে তাঁদের আসন ছেড়ে উঠে দাঁড়ালেন। মেসির হৃদয়ের অনেকটা জুড়েই বার্সেলোনা, সেই ক্লাবকে বিদায় বলাটা এত সহজ নয়। তবে মেসি কোনো কিছু না বলেই অঝরে কাঁদলেন। এসময় বিশ্ব ফুটবল ভক্তদের হৃদয় ভেঙে চোখের পানিও ঝরলো।
নিজেকে সামলে নিতে একটু সময় নিলেন। এরপর শুরু করলেন কথা। প্রশ্নোত্তর পর্ব শুরুর আগে বিদায়ী বক্তব্যের শুরুতে মেসি বললেন, ‘গত কয়েক দিনে অনেক ভেবেছি, কী বলব এখানে। সত্যিটা হচ্ছে, কী বলব বুঝে উঠতে পারছি না। জীবনের এতগুলো বছর এখানে কাটানোর পর আমার জন্য এই দিনটা অনেক বেশি কঠিন।’মেসি কিছুতেই কান্না আটকে রাখতে পারছিলেন না। কথা বলতে বলতেই আবার কাঁদতে শুরু করেন। আবার থামেন, চোখ মুছে নিজেকে সামলে নিয়ে আবার বলতে শুরু করেন, ‘আমি এ ক্লাবেই বেড়ে উঠেছি। আমি আজ যা, তা এখানে এসেই হয়েছি। কখনো যে এমন দিন আসবে, তা আমি ভাবতেই পারিনি। বার্সেলোনা বিশ্বের সেরা ক্লাব।এরপর আর চাপাকান্না নয়, বিদায়ের কথা বলতে গিয়ে মেসি অঝোরে কাঁদতে শুরু করেন। বাকিদের চোখেও তখন জল। বিদায় নামের কঠিন কথার মানে হয়তো এখনো বুঝে উঠতে পারেনি মেসির ছোট ছেলে। চেয়ারে বসে নড়াচড়া করছিল সে। কিন্তু বাবার চোখে জল দেখে আর বাবাকে বিদায় বলতে শুনে একদমই চুপ হয়ে যায় বড় আর মেজ ছেলে!

মেসি বক্তৃতা শেষ করেন আবারও বার্সেলোনায় ফিরে আসার প্রতিজ্ঞার কথা জানিয়ে, ‘দেড় বছর ধরে মাঠে আমাদের সমর্থকদের দেখতে পাইনি। তাঁদের না দেখে বিদায় নিতে হচ্ছে, এই ব্যাপারটাই বেশি কষ্ট দিচ্ছে। তবে আমি এখানে আবার ফিরব, এটা আমার ঘর। আমার সন্তানদেরও আমি কথা দিয়েছি, আমি আবার এখানে ফিরে আসব।’

ফুটবল দুনিয়ায় এমন বিদায় আর দেখা গেছে কিনা কেউ জানে না। বিশ্ব ফুটবলের সবচেয়ে বড় তারকা লিওনেল মেসির বিদায় হলো চোখের জলে। সাফল্যের মালা গেঁথে বার্সার যে পতাকাটি মেসি এতোদিন উড়িয়ে ছিলেন সেই পতাকা ভিজল তারই চোখের জলে। তার প্রিয় ক্লাব ছাড়তে গিয়ে মেসি অঝোরে কেঁদেছেন।
বার্সেলোনা হতে মেসির এমন বিদায় অকল্পনীয়। ক্লাব ফুটবলে এই মেসিকে জন্ম দিয়েছিল বার্সেলোনা। আর সেই বার্সেলোনা এভাবে মেসিকে ঘরহিন করবে সেটা কারো কল্পনায় ছিল না। বার্সার সঙে মেসির আত্মার বন্ধন। বার্সাতে দুই হাত ভরে সাফল্য এনে দিয়েছেন মেসি। মেসির পায়ের যাদুর কারণে বার্সেলোনা ভুরিভুরি স্পন্সর পেয়েছে। বার্সার অর্থ ভাণ্ডার মোটা তাজা হয়েছে মেসিকে দিয়ে। মেসি ফুটবলের সুনিপুন কারিগর। তার নৈপুণ্য ফুটবল দুনিয়াকে মোহিত করে রেখেছিল গত ২১টি বছর। মেসির কারণে বার্সার দরজায় টাকার বস্তা নিয়ে স্পন্সররা লাইন দিয়েছিল। বার্সা আজ যতটা আলোকিত তার পুরোটাই মেসির কৃতিত্ব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *