‘আবার ভাঙনের কবলে পড়লে যাওয়ার জায়গা থাকবে না’

Share Now..


গেল বর্ষার শরীয়তপুরে সবচেয়ে বেশি পদ্মার ভাঙনের শিকার হয়েছে জাজিরা উপজেলা। ওই সময় ৭ কিলোমিটার এলাকা ব্যাপক ভাঙনের মুখে পড়ে। প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়। তাই বর্ষা যতো এগিয়ে আসছে জাজিরার পদ্মা পাড়ের মানুষের মধ্যে ততই আতঙ্ক বাড়ছে।শরীয়তপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) কর্তৃক পদ্মা বহুমুখী সেতুর উজানে নির্মিত ক্রসড্যাম অপসারণ করার ফলে ভাটিতে পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের পৈলান মোল্লা কান্দি এলাকায় ৫০০ মিটার; পালের চর ইউনিয়নের মোহন ফকির কান্দি, কাথুরিয়া কান্দি, পদ্মা ক্লাব এলাকায় প্রায় ২০০০ মিটার; বড়কান্দি ইউনিয়নের সরদার কান্দি, খলিফা কান্দি, দুর্গারহাট, বড়কান্দি মডেল একাডেমি বিদ্যালয় এলাকায় প্রায় ৪০০০ মিটার; জাজিরা ইউনিয়নের পাথালিয়া কান্দি এলাকায় ৫০০ মিটার; মোট সাত হাজার মিটার এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) কর্তৃক আপদকালীন জরুরি ঘোষণার মাধ্যমে তিন হাজার ৯৮৯ মিটার এলাকার ভাঙনরোধে পদক্ষেপ নিলেও বর্ষাকালে কাজগুলো বাস্তবায়ন হওয়ায় তা ফলপ্রসু হয়নি।প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে এক লাখ ৪৬ হাজার ৬২৪টি ২৫০ কেজি ওজনের বালু ভর্তি জিওব্যাগ এবং তিন হাজার ৮৫৯টি ছয় মিটার দৈর্ঘে্যর, এক দশমিক ২৫ মিটার ব্যাসের বালু ভর্তি জিও টিউব যথাযথভাবে ডাম্পিং করা হলেও পদ্মা নদীর স্রোত বৃদ্ধি এবং স্কাউরিংয়ের ফলে কাজটি দীর্ঘস্থায়ীভাবে মজবুত হয়নি।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম গত বছর ১০ সেপ্টেম্বর ভাঙন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে বক্তব্য তিনি ঘোষণা করেন, আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই জাজিরার পদ্মা নদীর ডান তীরের ভাঙন রোধকল্পে তিনি যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন এবং স্থায়ী প্রকল্প অনুমোদন করিয়ে কাজ শুরু করবেন।

উপমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ড, শরীয়তপুর অফিস একটি স্থায়ী প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড, ঢাকা দপ্তরে জমা দিয়েছে। পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের মাঝিরঘাট জিরো পয়েন্ট এলাকা, বিবিএ কর্তৃক ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত কাজের শক্তিশালীকরণ করা হয়েছে। পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের ওকিল উদ্দিন মুন্সি কান্দি, পৈলান মোল্লা কান্দি, পালের চর ইউনিয়নের কাথুরিয়া কান্দি, মোহন ফকির কান্দি, পালের চর বাজার এলাকায় চার কিলোমিটার। বড়কান্দি ইউনিয়নের সরদার কান্দি, খলিফা কান্দি, দুর্গার হাট এবং জাজিরা ইউনিয়নের পাথালিয়া কান্দি এলাকায় চার দশমিক ৬৭০ কিলোমিটার মোট আট দশমিক ৬৭০ কিলোমিটার কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১৭৩ কোটি টাকা।

তবে, স্থায়ী প্রকল্প পাস না হলে এবং যথাসময়ে কাজ শুরু না হলে আগামী বর্ষা মৌসুমে জাজিরায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিতে পারে। কারণ পদ্মা বহুমুখী সেতুর উজানে এবং ভাটিতে বর্তমানে ব্যাপকভাবে অস্থায়ী চর পরিলক্ষিত হচ্ছে। ইতোপূর্বে পদ্মা নদীর মূল প্রবাহ বাম তীর বরাবর হলেও বর্তমানে সেখানে নতুন চর জেগে উঠেছে। ফলে বর্ষাকালে উজানের পানি প্রবাহ ডান তীরের মূল ভূখণ্ডে ভাঙন প্রবণতা বৃদ্ধি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পালেরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা জামাল মিয়া বলেন, আমাদের বাপ-দাদার ভিটা পদ্মানদীর বুকে চলে গেছে, আমরা ত্রাণ নয় স্থায়ী বেরি বাঁধ চাই।

একই এলাকার জলিল ফকির বলেন, গত বর্ষায় আমার বসতভিটা ও গাছপালাসহ আড়াই বিঘা জমি পদ্মা নদীতে চলে গেছে। নদীর পাড়ে অবশিষ্ট জমিতে আবার ঘর তুলে বাস করছি। আসছে বর্ষায় আবার ভাঙনের কবলে পড়লে যাওয়ার আর জায়গা থাকবে না। ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।

পালেরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ফরাজী বলেন, আমাদের ইউনিয়ন পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে, গত বছর কয়েকটি গ্রাম পদ্মা নদীতে চলে গেছে, এবার যদি সরকার স্থায়ী পদক্ষেপ অর্থাৎ বেরি বাঁধ না দেওয়া হয় তাহলে পালেরচর ইউনিয়নকে রক্ষা করা যাবে না।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান সোহেল বলেন, অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পদ্মা নদীতে ভেঙে গেছে আরো কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। সরকারের উচিৎ অতিদ্রুত স্থায়ী প্রকল্প পাশ করা, না হলে জাজিরার ভৌগোলিক সীমানা চেঞ্জ হয়ে যাবে।
শরীয়তপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, শরীয়তপুর জেলার মধ্যে জাজিরা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দেয়। স্থায়ী ভাঙনরোধে আমরা উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) জমা দিয়েছি। প্রকল্পটি মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। প্রকল্পটি পাস হলে ভাঙন রোধে স্থায়ীভাবে কাজ করতে পারবো। এছাড়া ভাঙন রোধ সম্ভব না। ‘আবার ভাঙনের কবলে পড়লে যাওয়ার জায়গা থাকবে না’
গেল বর্ষার শরীয়তপুরে সবচেয়ে বেশি পদ্মার ভাঙনের শিকার হয়েছে জাজিরা উপজেলা। ওই সময় ৭ কিলোমিটার এলাকা ব্যাপক ভাঙনের মুখে পড়ে। প্রায় পাঁচ শতাধিক পরিবার ভিটেমাটি হারিয়ে নিঃস্ব হয়। তাই বর্ষা যতো এগিয়ে আসছে জাজিরার পদ্মা পাড়ের মানুষের মধ্যে ততই আতঙ্ক বাড়ছে।শরীয়তপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ড জানায়, বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ (বিবিএ) কর্তৃক পদ্মা বহুমুখী সেতুর উজানে নির্মিত ক্রসড্যাম অপসারণ করার ফলে ভাটিতে পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের পৈলান মোল্লা কান্দি এলাকায় ৫০০ মিটার; পালের চর ইউনিয়নের মোহন ফকির কান্দি, কাথুরিয়া কান্দি, পদ্মা ক্লাব এলাকায় প্রায় ২০০০ মিটার; বড়কান্দি ইউনিয়নের সরদার কান্দি, খলিফা কান্দি, দুর্গারহাট, বড়কান্দি মডেল একাডেমি বিদ্যালয় এলাকায় প্রায় ৪০০০ মিটার; জাজিরা ইউনিয়নের পাথালিয়া কান্দি এলাকায় ৫০০ মিটার; মোট সাত হাজার মিটার এলাকায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দেয়। বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড (বাপাউবো) কর্তৃক আপদকালীন জরুরি ঘোষণার মাধ্যমে তিন হাজার ৯৮৯ মিটার এলাকার ভাঙনরোধে পদক্ষেপ নিলেও বর্ষাকালে কাজগুলো বাস্তবায়ন হওয়ায় তা ফলপ্রসু হয়নি।প্রায় ১১ কোটি টাকা ব্যয়ে এক লাখ ৪৬ হাজার ৬২৪টি ২৫০ কেজি ওজনের বালু ভর্তি জিওব্যাগ এবং তিন হাজার ৮৫৯টি ছয় মিটার দৈর্ঘ্যরে, এক দশমিক ২৫ মিটার ব্যাসের বালু ভর্তি জিও টিউব যথাযথভাবে ডাম্পিং করা হলেও পদ্মা নদীর স্রোত বৃদ্ধি এবং স্কাউরিংয়ের ফলে কাজটি দীর্ঘস্থায়ীভাবে মজবুত হয়নি।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপমন্ত্রী এ কে এম এনামুল হক শামীম গত বছর ১০ সেপ্টেম্বর ভাঙন এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন শেষে বক্তব্য তিনি ঘোষণা করেন, আগামী বর্ষা মৌসুমের আগেই জাজিরার পদ্মা নদীর ডান তীরের ভাঙন রোধকল্পে তিনি যথাযথ ব্যবস্থা নিবেন এবং স্থায়ী প্রকল্প অনুমোদন করিয়ে কাজ শুরু করবেন।

উপমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, বর্তমানে পানি উন্নয়ন বোর্ড, শরীয়তপুর অফিস একটি স্থায়ী প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ড, ঢাকা দপ্তরে জমা দিয়েছে। পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের মাঝিরঘাট জিরো পয়েন্ট এলাকা, বিবিএ কর্তৃক ইতোমধ্যে বাস্তবায়িত কাজের শক্তিশালীকরণ করা হয়েছে। পূর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের ওকিল উদ্দিন মুন্সি কান্দি, পৈলান মোল্লা কান্দি, পালের চর ইউনিয়নের কাথুরিয়া কান্দি, মোহন ফকির কান্দি, পালের চর বাজার এলাকায় চার কিলোমিটার। বড়কান্দি ইউনিয়নের সরদার কান্দি, খলিফা কান্দি, দুর্গার হাট এবং জাজিরা ইউনিয়নের পাথালিয়া কান্দি এলাকায় চার দশমিক ৬৭০ কিলোমিটার মোট আট দশমিক ৬৭০ কিলোমিটার কাজে ব্যয় ধরা হয়েছে এক হাজার ১৭৩ কোটি টাকা।

তবে, স্থায়ী প্রকল্প পাস না হলে এবং যথাসময়ে কাজ শুরু না হলে আগামী বর্ষা মৌসুমে জাজিরায় ব্যাপক ভাঙন দেখা দিতে পারে। কারণ পদ্মা বহুমুখী সেতুর উজানে এবং ভাটিতে বর্তমানে ব্যাপকভাবে অস্থায়ী চর পরিলক্ষিত হচ্ছে। ইতোপূর্বে পদ্মা নদীর মূল প্রবাহ বাম তীর বরাবর হলেও বর্তমানে সেখানে নতুন চর জেগে উঠেছে। ফলে বর্ষাকালে উজানের পানি প্রবাহ ডান তীরের মূল ভূখণ্ডে ভাঙন প্রবণতা বৃদ্ধি করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।

পালেরচর ইউনিয়নের বাসিন্দা জামাল মিয়া বলেন, আমাদের বাপ-দাদার ভিটা পদ্মানদীর বুকে চলে গেছে, আমরা ত্রাণ নয় স্থায়ী বেরি বাঁধ চাই।

একই এলাকার জলিল ফকির বলেন, গত বর্ষায় আমার বসতভিটা ও গাছপালাসহ আড়াই বিঘা জমি পদ্মা নদীতে চলে গেছে। নদীর পাড়ে অবশিষ্ট জমিতে আবার ঘর তুলে বাস করছি। আসছে বর্ষায় আবার ভাঙনের কবলে পড়লে যাওয়ার আর জায়গা থাকবে না। ভাঙন রোধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই।

পালেরচর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ফরাজী বলেন, আমাদের ইউনিয়ন পদ্মা নদীর তীর ঘেঁষে, গত বছর কয়েকটি গ্রাম পদ্মা নদীতে চলে গেছে, এবার যদি সরকার স্থায়ী পদক্ষেপ অর্থাৎ বেরি বাঁধ না দেওয়া হয় তাহলে পালেরচর ইউনিয়নকে রক্ষা করা যাবে না।

জাজিরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুল হাসান সোহেল বলেন, অনেকগুলো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পদ্মা নদীতে ভেঙে গেছে আরো কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, হাট-বাজার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ভাঙনের হুমকিতে রয়েছে। সরকারের উচিৎ অতিদ্রুত স্থায়ী প্রকল্প পাশ করা, না হলে জাজিরার ভৌগোলিক সীমানা চেঞ্জ হয়ে যাবে।
শরীয়তপুর জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিব বলেন, শরীয়তপুর জেলার মধ্যে জাজিরা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ভাঙন দেখা দেয়। স্থায়ী ভাঙনরোধে আমরা উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাব (ডিপিপি) জমা দিয়েছি। প্রকল্পটি মন্ত্রণালয়ে যাচাই-বাছাই চলছে। প্রকল্পটি পাস হলে ভাঙন রোধে স্থায়ীভাবে কাজ করতে পারবো। এছাড়া ভাঙন রোধ সম্ভব না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *