একসময় বড়ছেলের দায়িত্ব পালনকারী মুনিফা এখন পরিবারের বোঝা

Share Now..


বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, ইবি-
অভাবী বাবা-মায়ের সংসারে পড়াশোনার পাশাপাশি বড়ছেলের দায়িত্ব পালন করে আসছিল মুনিফা। পড়াশোনার পাশাপাশি মুনিফা যশোর শহরের অলিতেগলিতে নিয়মিত টিউশনি করছিল। র্তা ইচ্ছা ছিলো বিশ^বিদ্যালয় থেকে গ্রাজুয়েশন সম্পন্ন করে একজন ফরেইন বিসিএস ক্যাডার হওয়ার। সমাজের মানুষের জন্য কিছু করার। কিন্তু কে জানত ওর ভাগ্যের এই নির্মম পরিহাস হবে! লকডাউন চলমান। মুনিফার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ, টিউশনিও নেই। সারাদিন ঘরে শুয়েই দিন কাটে তার। কীভাবে চলবে সবকিছু! ও যে আজ মারাত্মকভাবে রোগাক্রান্ত! সম্প্রতি মুনিফার পিত্তথলিতে পাথর ধরা পড়েছে। চিকিৎসক বলেছেন দ্রুত অপারেশন না করলে ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে।
মুনিফা বর্তমানে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) ইংরেজি বিভাগের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের মাস্টার্স শেষবর্ষে অধ্যয়নরত। যশোরের ষষ্টিতলায় রেলরোডে তার বাড়ি। তার বাবা-মা দুইজনই রোগাক্রান্ত ও শয্যাশায়ী।
বিশ^বিদ্যালয়ে ভর্তির পর প্রথমবর্ষ শেষ হতে না হতেই তার শরীরে নানা রোগ দেখা দেয়। এলার্জিজনিত এ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, গ্যাস্ট্রিক ও লিভারে আলসার রোগে দীর্ঘদিন যাবৎ ভুগছেন তিনি। এছাড়া খাদ্যনালী সরু হওয়া, হার্টের সিস্টোলিক ডিসফাংশন, পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্্েরামেও ভুগছেন তিনি। এসব রোগের কারণে তিনি ঠিকমতো বিশ^বিদ্যালয়ের ক্লাস-পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি। অধিকাংশ সময় বাড়িতে শয্যাশায়ী অবস্থায় দিন কেটেছে তার। এসব রোগের চিকিৎসায় তার অভাবী পরিবারের লক্ষাধিক টাকা খরচ হয়েছে। বর্তমানে তারা রিক্ত, নিঃস্ব অবস্থায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন।
মুনিফা বর্তমানে কিডনি ও ইউরিনারির জটিল সমস্যায় ভুগছেন। যা অর্থাভাবে সঠিকভাবে ডায়াগনোসিস সম্ভব হচ্ছে না। সম্প্রতি আল্ট্রাসনোতে তার পিত্তথলিতে পাথর ধরা পড়েছে। ছোট ছোট পাথরে পিত্তথলি ভরে উঠেছে। চিকিৎসক বলেছেন দ্রুত অপারেশন না করলে ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে। এমতাবস্থায় অপারেশনসহ অন্যান্য রোগের চিকিৎসা খরচ ও নিয়মিত ওষুধ সেবন বাবদ অনেক টাকা প্রয়োজন।
মুনিফা বলেন, ‘চিকিৎসক বলেছেন অপারেশন করাতে হলে অন্যরোগের চিকিৎসা আগে প্রয়োজন। কিডনিতে ব্যথা, ইউরিনারি সহ অন্যান্য রোগ কিছুটা উপশম হলে অপারেশন করানো যাবে। আমার এ অভাবী পরিবারের পক্ষে এতো চিকিৎসা ব্যয় বহন করা অসম্ভব। সমাজের বিত্তবানরা এগিয়ে আসলে হয়তো আমি, আমার পরিবার আবার নতুন জীবন ফিরে পাবো।’
অভাবী সংসারে ওদের দ্বারা কীভাবে সম্ভব এতো টাকা জোগাড় করা! তবে কী সেদিনের সেই হাসিমাখা মুখ, মুনিফার হাসি এতো অল্পতেই ঝরে যাবে! আমরা কী পারিনা ওর স্বপ্ন বাস্তবায়নে ওকে সুস্থ করে তুলতে সহযোগীতার হাত বাড়াতে?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *