এবার বন্ধ হচ্ছে আলু আমদানি

Share Now..

পেঁয়াজের পর এবার ভারত থেকে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে আলু আমদানি। আমদানির অনুমতিপত্রের (আইপি) মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় আলু আমদানি বন্ধ করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। এ অবস্থায় দেশীয় বাজারে আবারও আলুর মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা।

বিষয়টি ইত্তেফাককে নিশ্চিত করে হিলি শুল্ক বন্দরের ডেপুটি কমিশনার মো. বায়োজিদ হোসেন বলেন, ‘স্বাভাবিকভাবে আলু আমদানির মেয়াদ শেষ হয়ে গেলে বাজারে মূল্যবৃদ্ধি হবে। সেক্ষেত্রে বাজার মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে। অনেকে এই সুযোগে দাম বাড়িয়ে দিতে পারেন। আবার অনেকে স্টক করেও রাখতে পারেন।’

বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে আরও ১৫ দিন আমদানির অনুমতির মেয়াদ বাড়াতে বন্দরের আমদানিকারকদের দাবি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘সরকার যদি মনে করে মেয়াদ বাড়ানো দরকার, তবে বাড়াতেই পারে। এটা তাদের সিদ্ধান্ত।’

বাড়তে পারে আলুর দাম
সূত্র জানায়, বন্দর দিয়ে ভারত থেকে আলু আমদানি অব্যাহত রয়েছে। বর্তমানে বন্দর দিয়ে ৩ ধরনের আলু আমদানি করা হচ্ছে। এগুলো হলো পুরনো লাল বর্ণের কার্ডিনাল জাতের আলু, পুরনো সাদা বর্ণের আলু ও নতুন আলু। বর্তমানে বন্দরে কার্ডিনাল জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৫-৩৬ টাকা কেজি দরে; যা কয়েক দিন আগেও ৪১-৪২ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল।

বেশির ভাগ আমদানিকারকের ১৫ ডিসেম্বর থেকে আলু আমদানি বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। যে কারণে বাড়তি দামে বিক্রির আশায় আলু বিক্রি বন্ধ রেখেছেন। তারা ৩৮-৪০ টাকা দাম হাঁকছেন ওই জাতের আলু, তবে ওই দামে বিক্রি হয়নি। সাদা বর্ণের গোল আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৬-৩৭ টাকা কেজি দরে, যা কয়েক দিন আগেও একই দামে বিক্রি হয়েছিল।

এছাড়া নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৩৩-৩৪ টাকা কেজি দরে, যা আগে ৪১-৪২ টাকা দরে বিক্রি হয়েছিল।

এদিকে হিলি বাজারে খুচরায় কার্ডিনাল জাতের আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, আর নতুন আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজি দরে। সরবরাহ সংকটের অজুহাতে হঠাৎ দেশে অস্থিতিশীল হয়ে ওঠে আলুর বাজার। জরিমানা অভিযানসহ সরকারের নানামুখী পদক্ষেপের পরও আলুর বাজার স্থিতিশীল হয়নি। এ অবস্থায় আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে গত ৩০ অক্টোবর আলু আমদানির অনুমতি দেয় সরকার। এরপর ২ নভেম্বর থেকে হিলি স্থলবন্দর দিয়ে ভারত থেকে আলু আমদানি শুরু হয়। এতে দেশের বাজারে আলুর দাম অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে চলে আসে।

যা বলছেন বিশেষজ্ঞরা
হিলি স্থলবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা সোহরাব হোসেন বলেন, ‘হিলি স্থলবন্দর দিয়ে আলু আমদানি অব্যাহত রয়েছে। বন্দর দিয়ে ৩৫-৪০ ট্রাক করে আলু আমদানি হলেও চলতি সপ্তাহের প্রথম থেকেই আলু আমদানি বেড়েছে। বন্দর দিয়ে চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন গত শনিবার ৫৮টি ট্রাকে ১ হাজার ৫৯১ টন আলু আমদানি হয়েছে। এছাড়া রোববার বন্দর দিয়ে ৫৬টি ট্রাকে ১ হাজার ৫১৬ টন আলু আমদানি হয়েছে। সোমবার বন্দর দিয়ে ৫৭টি ট্রাকে ১ হাজার ৫৭১ টন আলু আমদানি হয়েছে। মঙ্গলবার বন্দর দিয়ে ৭৬টি ট্রাকে ২ হাজার ১১ টন আলু আমদানি হয়। আজ বুধবার রেকর্ড সংখ্যক ৮৬টি ট্রাকে ২ হাজার ২৬০ টন আলু আমদানি হয়েছে।’

হিলি স্থলবন্দর উদ্ভিদ সংগনিরোধ কেন্দ্রের উপ-সহকারী সংগনিরোধ কর্মকর্তা ইউসুফ আলী বলেন, ‘দেশে আলুর বাজার নিয়ন্ত্রণে আনতে গত ৩০ অক্টোবর সরকার আলু আমদানির অনুমতিপত্র বা ইমপোর্ট পারমিট দেয়। সেই ইমপোর্ট পারমিটের মেয়াদ ছিল গত ৩০ নভেম্বর, যা এর মধ্যেই শেষ হয়ে গেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ব্যবসায়ীদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ও বাজার নিয়ন্ত্রণে আমদানির মেয়াদের সময়সীমা ১৫ দিন বাড়িয়ে ১৫ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করে সরকার। এখন পর্যন্ত সেই নির্দেশনাই আছে। ফলে ১৫ ডিসেম্বরের পর বন্দর দিয়ে আর আলু আমদানির সম্ভাবনা নেই। তবে সরকার যদি আমদানির মেয়াদ বাড়ায়, সে ক্ষেত্রে আবারও আলু আমদানি হতে পারে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *