কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সএ তথ্য সংগ্রহ কালে সাংবাদিক এ-র উপরে হামলা।
কয়রা( খুলনা) প্রতিনিধি।
কয়রা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তথ্য সংগ্রহকালে ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধি কর্তৃক দৈনিক সাতঘরিয়া পত্রিকার কয়রা প্রতিনিধি রিয়াজুল আকবর হামলা শিকার হয়েছে বৃহস্পতিবার (১০ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ইমার্জেন্সি বিভাগের সামনে এ ঘটনা ঘটে। সাংবাদিক রিয়াজুল আকবর (২৪) উপজেলার ঘুগরাকাটি গ্রামের জি এম আকবর আলীর ছেলে।
ভুক্তভোগী সাংবাদিক রিয়াজুল জানান, বৃহস্পতিবার সকালে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুতের জন্য গত ১ মাসে হাসপাতালে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীদের মোট ভর্তির সংখ্যা এবং সে বিষয়ে বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গেলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুদীপ বালা রোগী দেখায় ব্যস্ত থাকায় তিনি ইমার্জেন্সি বিভাগের সামনে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় ইমার্জেন্সি বিভাগের সামনে বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির প্রতিনিধিরা নিষেধাজ্ঞা না মেনে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগীদের ব্যবস্থাপত্রের ছবি নিতে অপেক্ষা করছিল।
এ সময় রেজাউল নামে একমি কোম্পানির এক বিক্রয় প্রতিনিধি তার হাসপাতালে কী- বলেই তাকে আকস্মিক চড়, কিল, ঘুষি মারতে থাকে। এ সময় রিয়াজুল তাকে মারপিটের কারণ জানতে চাইলে সে আরো ক্ষিপ্ত হয়ে অকথ্যভাষায় গালিগালাজ ও বেধড়ক মারপিট করতে থাকলে অন্য বিক্রয় প্রতিনিধিরা ও হাসপাতালের কর্মচারীরা রেজাউল নামে ওই ব্যক্তিকে ধরে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে যায়। এরপর সে ওই ঘটনা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তাকে জানালে তিনি তাকে প্রথমিক চিকিৎসা দিয়ে অভিযুক্ত রেজাউলকে ডেকে ঘটনা বাইরে জানাজানি হলে হাসপাতালের সুনাম ক্ষুণ্ন হবে জানিয়ে রেজাউলকে মানবিকভাবে ক্ষমা করে দিতে বলেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক হাসপাতালের এক কর্মচারী জানান, ওই সাংবাদিক কী তথ্য নিতে স্যারের জন্য বাইরে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছিলেন। এ সময় আকস্মিক রেজাউল নামে ওষুধ কোম্পানির ওই বিক্রয় প্রতিনিধি তার ওপর হামলা করে। তবে ঘটনার পর স্যার উভয়পক্ষকে মিলিয়ে দিয়ে সাংবাদিককে পাঠিয়ে দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত রেজাউলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মানুষের মন মেজাজ সব সময় ভালো থাকে না। আর ওই সাংবাদিকের সাথে যা হয়েছিল তা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মিটিয়ে দিয়েছেন।
সরকারি হাসপাতালে ওষুধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের রোগীদের ব্যবস্থাপত্রের ছবি নেয়ার বৈধতার ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি কোনো সদুত্তর না দিয়ে চাকরি বাঁচাতে হাসপাতালের অনেককে ম্যানেজ করে তাদের চলতে হয় বলে দাবি করেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. সুদীপ বালা সকাল থেকে বাইরে থাকায় ঘটনার ব্যাপারে জানেন না দাবি করে খোঁজ নিয়ে জানাবেন বলে মোবাইলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন।
সর্বশেষ মারপিটের শিকার সাংবাদিক রিয়াজুল বর্তমানে চরম নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন জানিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানিয়ে প্রশাসনের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছে।