করোনার সংক্রমণ বাড়ছেই
ওমিক্রনের ধাক্কায় দেশে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি অব্যাহত আছে। আর এতে দেশে মোট শনাক্ত রোগী ছাড়িয়ে গেল ১৭ লাখ। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, সোমবার সকাল ৮টা পর্যন্ত ২৪ ঘণ্টায় ৪৯ হাজার ৪৯২টি নমুনা পরীক্ষা করে ১৬ হাজার ৩৩ জনের মধ্যে সংক্রমণ ধরা পড়েছে, মৃত্যু হয়েছে ১৮ জনের।
এক দিনে এর চেয়ে বেশি রোগী শনাক্ত হয়েছিল সর্বশেষ ডেলটা ভ্যারিয়েন্টের দাপটের সময়, গত বছরের ২৮ জুলাই। সেদিন ১৬ হাজার ২৩০ জনের সংক্রমণ ধরা পড়েছিল, মহামারির মধ্যে এটাই সর্বোচ্চ। নতুন রোগীদের নিয়ে দেশে মোট শনাক্ত কোভিড রোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৭ লাখ ১৫ হাজার ৯৯৭ জনে। তাদের মধ্যে ২৮ হাজার ২৫৬ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনা ভাইরাসে।
সরকারি হিসাবে গত এক দিনে দেশে সেরে উঠেছেন ১ হাজার ৯৫ জন। তাদের নিয়ে এ পর্যন্ত ১৫ লাখ ৫৮ হাজার ৯৫৪ জন সুস্থ হয়ে উঠলেন। এই হিসাবে দেশে এখন সক্রিয় কোভিড রোগীর সংখ্যা ১ লাখ ২৮ হাজার ৭৮৭ জন। অর্থাত্ এই সংখ্যক রোগী নিশ্চিতভাবে সংক্রমিত অবস্থায় রয়েছে। আগের দিন এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১১ হাজার ৮৬৭। গত ১৮ জানুয়ারি ছিল ৫০ হাজার ৮৪৫ জন। অর্থাত্, মাত্র এক সপ্তাহে সক্রিয় রোগী বেড়েছে ১৫০ শতাংশের বেশি। মহামারির বছর গড়ানোর পর ডেলটার দাপটে বাংলাদেশে দিনে রোগী শনাক্তের হার ৩২ শতাংশে উঠেছিল ২০২১ সালে। তবে এরপর সংক্রমণের হার কমতে কমতে ২ শনাক্তের নিচে নেমেছিল। সেই হার আবার বাড়তে বাড়তে মঙ্গলবার ৩২ দশমিক ৪০ শতাংশে দাঁড়িয়েছে, যা গত ছয় মাসের সর্বোচ্চ। শনাক্তের হার এর চেয়ে বেশি ছিল সর্বশেষ গত বছরের ২৪ জুলাই, সেদিন প্রতি ১০০টি নমুনা পরীক্ষায় ৩২ দশমিক ৫৫টিতে কোভিড পজিটিভ আসে। আর ২০২০ সালের ১২ জুলাই শনাক্তের হার ছিল ৩৩ দশমিক ০৪ শতাংশ, যা এ মহামারিকালের রেকর্ড। মহামারির মধ্যে সার্বিক শনাক্তের হার দাঁড়িয়েছে ১৪ দশমিক ০৫ শতাংশ। আর মৃত্যুর হার ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ। গত এক দিনে শনাক্ত রোগীদের মধ্যে ১০ হাজার ৪৭৮ জনই ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা, যা মোট আক্রান্তের ৬৫ দশমিক ৩৫ শতাংশগত কয়েক মাস ধরেই দৈনিক শনাক্ত রোগীর একটি বড় অংশ থাকে ঢাকার। তবে গত কয়েক দিন ধরে দেশের অন্যান্য জেলায়, বিশেষ করে সীমান্তবর্তী এলাকায় রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। গত এক দিনে যে ১৮ জনের মৃত্যু হয়েছে, তাদের ১২ জন পুরুষ, ছয় জন নারী। তাদের মধ্যে আট জন ছিলেন ঢাকা বিভাগের বাসিন্দা। এছাড়া চট্টগ্রাম বিভাগের ছয় জন, রাজশাহী বিভাগের এক জন, খুলনা বিভাগের এক জন, বরিশাল বিভাগের এক জন এবং সিলেট বিভাগের বাসিন্দা ছিলেন এক জন। গত ২৪ ঘণ্টায় মৃতদের মধ্যে ৯ জনের বয়স ৬০ বছরের বেশি, পাঁচ জনের বয়স ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে, দুই জনের বয়স ৪১ থেকে ৫০ বছর এবং এক জনের বয়স ১০ বছরের কম ছিল।