কানের দুলের জন্য স্কুলছাত্রীকে হত্যা, গৃহবধূর কারাদণ্ড

Share Now..


লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে সোনার কানের দুল খুলে নেওয়ার সময় মুখ চেপে স্কুলছাত্রী হত্যায় রুনা আক্তার আঁখি নামের এক নারীকে আমৃত্যু সশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত। একই সঙ্গে তার ১০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।সোমবার (২০ মার্চ) দুপুরে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. রহিবুল ইসলাম এ রায় দিয়েছেন। জানা গেছে, ঘটনার ৩ মাস আগেই রুনা ও এমরান সাগরদি গ্রামের কাতারপ্রবাসী আবুল কাশেমের বাড়িতে ভাড়া আসেন।

লক্ষ্মীপুর জজ আদালতের সরকারি কৌঁসুলি (পিপি) জসিম উদ্দিন জানান, তিন আনা সোনার কানের দুলের লোভে স্কুলছাত্রী পপিকে হত্যা করে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়েছে। রুনার স্বামীও এ মামলার আসামি ছিলেন। তিনি হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। এতে আদালত তাকে বেকসুর খালাস দেন। রায়ের সময় তারা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।

খালাস পাওয়া এমরান গাছ কাটার শ্রমিক ছিলেন। তিনি উপজেলার কেরোয়া ইউনিয়নের পূর্ব কেরোয়া গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে। রুনা ওই গ্রামের আবদুল মতিনের মেয়ে।

এজাহার সূত্রে জানা যায়, ২০২১ সালের ২ সেপ্টেম্বর সকালে প্রাইভেট পড়ে এসে বাড়ির পাশেই পপি খেলছিল। তখন রুনা তাকে ডেকে ঘরে নিয়ে যান। একপর্যায়ে তার কানের দুলগুলো খুলে নেয়। এতে পপি কান্না শুরু করে। কান্নার শব্দ যেন কেউ শুনতে না পায় এজন্য তার মুখ-গলা চেপে ধরলে পপি মারা যায়। পরে তার লাশ চৌকির নিচে লুকিয়ে রাখা হয়। বাড়ি ফিরলে রুনা তার স্বামীকে বিষয়টি জানায়। এতে পপির লাশ গুম করার পরিকল্পনা করে তারা। পরে ঘরের দুটি দরজার ১টির বাইরে তালা ও অন্যটি ভেতর দিয়ে আটকে রেখে রুনা ও এমরান ঘরে অবস্থান করে।

এদিকে ভাত খাওয়ানোর জন্য পপিকে তার মা ববিতা রানী সাহা ডাকলেও কোনো সাড়া পাচ্ছিল না। আশপাশসহ সম্ভাব্য স্থানে খুঁজেও তাকে পাওয়া যাচ্ছিল না। অন্যদিকে দুপুরে রুনা ও এমরানের ঘর বন্ধ দেখে লোকজনের সন্দেহ হয়। এক নারী জানালার ফাঁক দিয়ে ঘরের ভেতর তাদের দেখতে পায়। পরে দরজা ভেঙে লোকজন ঘরে ঢুকে। এ সময় রুনা ও তার স্বামী পালাতে গেলে লোকজন আটক করে।

পরে চৌকির নিচে তাকালে বাম দিকে ঘাড় বাঁকানো অবস্থায় পপিকে বসে থাকতে দেখা যায়। তাকে বের করতে গেলে বুঝা যায় পপির নিথর দেহ কৌশলে চৌকির নিচে বসিয়ে রাখা হয়েছে। স্থানীয় লোকজন অভিযুক্তদের বাড়ির সামনে গাছের সঙ্গে বেঁধে রাখে।ওইদিন রাতে ববিতা বাদী হয়ে রায়পুর থানায় মামলা দায়ের করেন। পরদিন রুনা ও এমরানকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠায় পুলিশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *