জনরোষের মুখে জর্জিয়া সরকারের নতি স্বীকার
রাশিয়ার আদলে ভিন্নমত দমন করতে ‘স্বৈরাচারী’ আইন প্রণয়নের বিরুদ্ধে জর্জিয়ায় তীব্র প্রতিবাদ ও বিক্ষোভের পর সরকার আইনের খসড়া প্রত্যাহার করে নিয়েছে। শুধু ইউক্রেন নয়, সাবেক সোভিয়েত প্রজাতন্ত্র জর্জিয়াও এবার সংকটের মুখে। তবে বাইরে থেকে হামলা নয় বরং সরকারের বিতর্কিত সিদ্ধান্তকে ঘিরে গণবিক্ষোভ সে দেশে অস্থিরতার কারণ। ঠিক যেন রাশিয়ার পদাঙ্ক অনুসরণ করে জর্জিয়ার সরকার মত প্রকাশের অধিকার খর্ব করার উদ্যোগ নিচ্ছে বলে বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ। তাদের আশঙ্কা, ইউরোপীয় মূল্যবোধের দিকে এগোনোর বদলে সরকার স্বৈরাচার ও রাশিয়ার নিয়ন্ত্রণ মেনে নেবার পথে এগোচ্ছে। উল্লেখ্য, ২০০৮ সালে রাশিয়ার হামলার জের ধরে জর্জিয়ার দুইটি অঞ্চল বিচ্ছিন্নতাবাদীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ায় জর্জিয়ার সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মস্কোর বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব দেখিয়ে আসছে।জর্জিয়ার সরকার সংসদে এমন এক আইন পেশ করেছিল, যার আওতায় কোনো সংগঠন বিদেশ থেকে ২০ শতাংশের বেশি অর্থ পেলে সেটিকে ‘বিদেশি এজেন্ট’ হিসেবে সরকারের কাছে নথিভুক্ত করতে হবে। না করলে মোটা অংকের ফাইন দিতে হবে।
এমন উদ্যোগের বিরুদ্ধে প্রবল প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ শুরু হয়েছিল। রাজধানী টিবিলিসিতে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ও স্টান গ্রেনেড ব্যবহার করে দ্বিতীয় দিনের বিক্ষোভ ভাঙার চেষ্টা করেছে। তবে মঙ্গলবারের (৭ মার্চ) মতো বিক্ষোভকারীরা পুলিশের দিকে লক্ষ্য করে পেট্রোল বোমা বা পাথর ছোড়েনি।
সেদিন ৭৭ জনকে আটক করা হয়েছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে। বুধবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যায় হাজার হাজার মানুষ সংসদ ভবনের সামনে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ইউক্রেনের পতাকা হাতে বিক্ষোভ দেখান। তাদের স্লোগান ছিল ‘রাশিয়ার আইন আমরা মানবো না’।
ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কি তার দেশের পতাকা ওড়ানোর জন্য জর্জিয়ার মানুষের প্রতি ধন্যবাদ জানান। ইউক্রেনের সঙ্গে জর্জিয়াও ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হয়ে উঠবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।
প্রবল জনরোষের মুখে জর্জিয়ার সরকার বৃহস্পতিবার (৯ মার্চ) সকালে বিতর্কিত আইনের খসড়া প্রত্যাহার করে নিয়েছে। ক্ষমতাসীন ‘জর্জিয়ান ড্রিম’ পার্টির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, যে এই আইনের ফলে সমাজে মতবিরোধ সৃষ্টি হয়েছে। সে কারণে এই আইনের খসড়া প্রত্যাহার করা হচ্ছে।