ধর্মীয় কটুক্তির দায়ে ইবি শিক্ষার্থীর শাস্তি দাবি
বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, ইবি-
ধর্মীয় কটুক্তির দায়ে তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থী রিজভী আহমেদ ওশান। তিনি বিশ^বিদ্যালয়ের আইন ও ভূমি ব্যবস্থাপনা বিভাগের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী এবং নড়াইল জেলা ছাত্রলীগের সদস্য। বিষয়টি নিয়ে বিশ^বিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীসহ সাধারণ শিক্ষার্থীরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিন্দার ঝড় তুলেছেন এবং তার শাস্তি দাবি করেছেন।
জানা যায়, সম্প্রতি চন্দ্রনাথ পাহাড়ে আযান দেয়া এবং সেই ভিডিও ফেসবুকে পোস্ট করায় দুজন মাদ্রাসা ছাত্রকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সেই জের ধরে বৃহস্পতিবার (২ সেপ্টেম্বর) ওশান তার নিজ ফেসবুক আইডি থেকে নবীকে তাচ্ছিল্য করে একটি স্ট্যাটাস দেন। স্ট্যাটাসে তিনি ‘‘চন্দ্রনাথে একদিন ইসলামের পতাকা উড়াবো বলা যদি অপরাধ না হয় তাহলে মহানবীকে কটুক্তি করাও কোন অপরাধ নয়’’ দাবি করেন।
তার এমন স্ট্যাটাসে ছাত্রলীগ নেতা রেজওয়ানুল ইসলাম বলেন, ব্যক্তিগতভাবে তাকে না চিনলেও জানতে পারি সে ইসলাম ধর্মের মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে বিভিন্ন সময় ফেসবুকে কটাক্ষ করে। সম্প্রতি রাসূলুল্লাহ (সাঃ) কে নিয়ে জড়িয়ে দেয়া স্ট্যাটাস অত্যন্ত আপত্তিকর। আমার ধারণা মতে সংগঠনকে বিতর্কিত করা এবং নৈরাজ্য সৃষ্টি করাই তার লক্ষ্য।
ছাত্রলীগ কর্মী নূর আলম বলেন, চন্দ্রনাথ পাহাড়ের ঘটনাটি যেমন ধর্মীয় অনুভূতির শামিল তদ্রুপ ওশান সেই ইস্যুটির সঙ্গে আমাদের প্রিয় নবীকে নিয়ে যে বিদ্রুপ করেছে সেটাও ধর্মীয় অনুভূতির শামিল। বঙ্গবন্ধুর ধর্ম নিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। সব ধর্মের সমান সুযোগই হলো ধর্মনিরপেক্ষতা। বাংলাদেশে প্রচলিত আইন অনুযায়ী আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবী করছি।
রাকিব হাসান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ব্যাপারটা কখনো অন্যধর্মের মুখোশ পরে, কখনো নাস্তিকতার ভাব ধরে, কখনো সত্যের ধারক সেজে, কখনো মানবাধিকার কর্মীর রুপে, কখনো সবজান্তা মনোভাব দেখিয়ে ঘুরিয়ে-পেঁচিয়ে ইসলামের বিপক্ষে।’
এদিকে ওই শিক্ষার্থীর বিচার চেয়ে প্রক্টর বরাবর অভিযোগ দায়ের করেছে বিশ^বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার (০৬ সেপ্টেম্বর) দুপুরে অভিযোগপত্র জমাদানের সময় সাধারণ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরাও উপস্থিত ছিলেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়, ওই শিক্ষার্থী কথিত ছাত্রলীগ কর্মী পরিচয়ে শেষ নবীকে কটুক্তি ও ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে বিদ্বেষপূর্ণ মনোভাব ফেসবুকে প্রকাশ করেছে। তার এসব কর্মকাণ্ড সংবিধান বিরোধী ও ছাত্রলীগকে ইসলাম বিদ্বেষী প্রমাণ করার এজেন্ডাস্বরুপ বলে ইবি ছাত্রলীগ ও সাধারণ শিক্ষার্থীরা মনে করে।
এসমম্পর্কে ইবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম পলাশ বলেন, ধর্মীয় কটুক্তি সবথেকে কষ্টকর বিষয়। সে ছাত্রলীগের কর্মী বা যেই হোক না কেন অপরাধী তো অপরাধীই। সাংগঠনিকভাবে তার শাস্তির দাবি জানাচ্ছি।
এ বিষয়ে বিশ^বিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, অভিযোগপত্র হাতে পেয়েছি। বিষয়টি নিয়ে ভিসি স্যারের সঙ্গে কথা বলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।