নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের যথেচ্ছা অপব্যবহার ধর্ষনের তিন মাস পর মামলা আর একমাস পর ডাক্তারী পরীক্ষা !

Share Now..

ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
২২ বছরের এক যুবতী নারী তাকে কোটচাঁদপুরের একটি আবাসিক হোটেলে আটকে রেখে ধর্ষন করা হয়েছিল বলে অভিযোগ করে কোটাচঁদপুর থানায়। অভিযোগে বলা হয়, বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে গত ৩ মার্চ কোটচাঁদপুর শহরের সোনিয়া আবাসিক হোটেলের ১৭ নং কক্ষে নিয়ে ধর্ষন করে মহেশপুর উপজেলার মথুরানগর গ্রামের মান্দার মন্ডলের ছেলে রাশেদ। কথিত ধর্ষন কান্ডের প্রায় ৩ মাস পরে ওই যুবতী বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৩২ (ক) ধারায় কোটচাঁদপুর থানায় মামলা করেন। যার মামলা নং ০৭। আর মামলা দায়েরের এক মাস ৩ দিন পর বৃহস্পতিবার দুপুরে তাকে এক নারী কনস্টেবলের সঙ্গে ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। তারপরও ডাক্তারী পরীক্ষা হয়নি। ওই যুবতী পরীক্ষা না করেই বাড়ি ফিরে গেছেন। এখন ধর্ষনের তিন মাস পর মামলা ও এক মাস পর ডাক্তারী পরীক্ষার হেতু নিয়ে জনমনে প্রশ্ন উঠেছে। এ ক্ষেত্রে ওই যুবতী কি সত্যই কি ন্যায় বিচার প্রার্থী ? নাকি নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের অপব্যবহার করার জন্য এই মামলা ? তথ্যানুসন্ধান করে জানা গেছে, একই গ্রামে বাড়ি হওয়ায় ওই যুবতীর সঙ্গে ঘরে প্রথম স্ত্রী ও সন্তান থাকার পরও বিয়ে করেন রাশেদ মিয়া। এ নিয়ে দাম্পত্য কলহ শুরু হলে রাশেদ দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেয়। প্রথম স্ত্রীকে নিয়ে আবার ঘর সংসার করতে থাকে রাশেদ। দ্বিতীয় স্ত্রীকে তালাক দেওয়ার পরও তার সঙ্গে আবারো সম্পর্কে জড়ায় রাশেদ এবং গত ৩১ মার্চ কোটচাঁদপুরের বলুহর গ্রামের জনৈক কাজীর বাড়ি গিয়ে একটি নীল কাগজে দুজনে সাক্ষর করে বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হয়। রাশেদ তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে দ্বিতীয়বার বিয়ে করে কোটচাঁদপুরের সোনিয়া আবাসিক হেটেলের ১৭ নং রুমে ওঠে। একাধিকবার শারীক সম্পর্কের পর রাশেদ জানায় তাদের বিয়ে হয়নি। এটা ছিল প্রতারণা। ঘটনার প্রায় তিন মাস পর ওই যুবতীয় গত ৫ জুন কোটচাঁদপুর থানায় মামলা করেন। ধর্ষন মামলা দায়ের হওয়ার দ্রুততম সময়ের মধ্যে ডাক্তারী পরীক্ষা করার বিধান থাকলেও এক মাস তিনদিন পর গতকাল বৃহস্পতিবার ওই যুবতীতে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু ওই যুবতী ডাক্তারী পরীক্ষা না করিয়ে চলে যান। এক খবর নিশ্চিত করেন হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ মিথিলা ইসলাম জানান। ওই যুবতী মুঠোফোনে জানান, একই গ্রামে বসবাস, তাই আর ঝামেলা করতে চাই না। আমার পিতার অনুরোধে ডাক্তারী পরীক্ষা না করেই বাড়ি ফিরে যাচ্ছি। তিনি স্বীকার করেন গ্রামের মাতুব্বররা মামলাটি ৪৭ হাজার টাকায় আপোষরাফা করে দিয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিকালে কোটচাঁদপুর থানার ওসি মাঈনুদ্দীন জানান, “আমরা ওই মেয়েকে বারবার নোটিশ করেছি ডাক্তারী পরীক্ষার জন্য। কিন্তু তিনি আসেনি। মেয়েটির দুইবার বিয়ে হয়েছে। তিনি বলেন, ধর্ষন ও মামলা দায়েরের পর এ পর্যন্ত যা কিছু হয়েছে সবই বলেতে পারেন এক রকম প্রসিডিউর। কারণ ওই মেয়ের পিতা গ্রাম্য ভাবে মামলাটি আপোষ করে নিয়েছেন। তিনি বলেন নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ২০২০ এর ৩২ (ক) ধারায় মামলা করে এই আইনের অপব্যবহার করা হয়েছে বলে তিনি মনে করেন। তিনি বলেন, আমরা সোনিয়া হোটেলের সিসিটিভির ফুটেজ দেখেছি। মেয়েটি কার সঙ্গে কথা বলতে বলতে রুমে প্রবেশ করছে। আবার ৭ মিনিট পর এলাকার মেম্বররা এসে দুইজনকে আটক করছে। বিষয়টি রহস্যজনক বা সাজানো বলে মনে হয়েছে”।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *