ভুতুড়ে গ্রাম মঙ্গলপুর, শতবছর ধরে বসবাস করে না কেউ

Share Now..

কোটচাঁদপুর প্রতিনিধি 

কোটচাঁদপুর উপজেলা শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত গ্রাম। যার নাম মঙ্গলপুর। বিশ্বাসই হবে না এই গ্রামে সবই আছে শুধু মানুষের বসবাস নেই। এভাবে পার হয়ে গেছে ৮ দশক। শুনতে অবাক লাগলেও ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার এলাঙ্গী ইউনিয়নের গ্রামের তালিকায় রয়েছে এই নামটি।

আজব এক গ্রাম মঙ্গলপুর। একেবারেই নিস্তব্ধ, শুনশান চারিদিক। কিছু জায়গায় চাষ হলেও এখনও কালো অন্ধকার জঙ্গলের অস্তিত্ব দেখা যায়। যেখানে চোখে পড়বে একটি ঈদগাহ।

ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা যায়, প্রায় একবর্গ কিলোমিটার আয়তনের এ গ্রামে এখনও রাতে মানুষ ঢোকে না কোনো এক অজানা ভয়ে। এলাঙ্গী ইউনিয়নের ৬৬ নম্বর মৌজায় অবস্থিত গ্রামটি। তবে ২০২২ সালে প্রধানমন্ত্রীর দেয়া ঘরে ৯টি পরিবার বসবাস শুরু করেছে।

পাশের গ্রামের ইসলাম মিয়া জানান, এই গ্রামে একসময় অনেক মানুষ বসবাস করতো। যার অধিকাংশ মানুষ ছিল হিন্দু সম্প্রদায়ের। কিন্তু হঠাৎ গ্রামে মহামারী আকারে কলেরা ছড়িয়ে পড়ে এবং বহু মানুষ মারা যায়। তখন সবাই বিশ্বাস করতে শুরু করে গ্রামে অমঙ্গল কিছুর প্রবেশ হয়েছে। গ্রামের মানুষ অন্যত্র যেতে শুরু করে। কেউ আবার ভারতে চলে যান। একবারেই শূন্য হয়ে যায় মঙ্গলপুরে মানুষের বসবাসের কোটা। এখন এই গ্রামে শুধুই করা হয় চাষাবাদ। অনেক মানুষ কৌতুহলবশত একনজর দেখতে আসে গ্রামটিতে। আবার বেলা থাকতেই বেরিয়ে পড়ে।

কোটচাঁদপুর এলাঙ্গী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের মিজানুর রহমান খান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আসলেই তারা এমনই গল্প শুনেছেন। কোনো এক মহামারি গ্রামটিকে জনশূন্য করে দেয়। অনেকেই মারা যায়। কেই আর থাকেনা সেখানে। এখন শুধুই চাষাবাদ হয়। প্রায় সবই খাসজমি।

তিনি আরও বলেন, গ্রামের ভেতর মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে রাস্তা তৈরি করে দেয়া হয়েছে। সুপেয় পানির অভাব মেটাতে টিউবওয়েল পোতা হয়েছে। রাস্তায় সড়ক বাতি দেয়া হয়েছে যাতে মানুষের চলাচলে অসুবিধা না হয়। তারপরও মানুষের চলাচল খুবই কম। নিতান্ত প্রয়োজন ছাড়া মানুষ সেখানে যায় না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *