যশোর মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা হাসপাতালের দাবিতে সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি

Share Now..

যশোর জেলা প্রতিনিধিঃ

যশোর মেডিকেল কলেজ স্থাপনের এক দশকেও হাসপাতাল নির্মাণ না হওয়ায় মাঠে নেমেছে যশোরবাসী। মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা হাসপাতালের দাবিতে যশোরে সমাবেশ ও মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে। একইসাথে দাবি বাস্তবায়নে যশোরের জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়েছে। যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির ব্যানারে রবিবার এসব কর্মসূচি পালিত হয়। কর্মসূচিতে জেলার বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ একত্মতা প্রকাশ করেন।
যশোর কালেক্টরেট চত্বরে অনুষ্ঠিত মানববন্ধন ও সমাবেশে সূচনা বক্তব্য দেন যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির আহবায়ক অ্যাড. আবুল হোসেন ও সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান ভিটু। দাবি বাস্তবায়নে একত্মতা প্রকাশ করে বক্তব্য দেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির (মার্কসবাদী) সাধারণ সম্পাদক ইকবাল কবির জাহিদ, জনউদ্যোাগ যশোরের
আহবায়ক প্রকৌশলী নাজির আহমেদ, যশোর সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ফারাজী আহমেদ সাঈদ বুলবুল, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট যশোরের সভাপতি অধ্যাপক সুকুমার দাস, সাবেক সভাপতি তরিকুল ইসলাম তারু, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র যশোরের সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুর রহমান মজনু, শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক অ্যাড. মাহমুদ হাসান বুলু, আইডিইবি যশোরের সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম, জয়তী সোসাইটির নির্বাহী পরিচালক অর্চনা বিশ্বাস আইইডি যশোরের ব্যবস্থাপক বিথিকা সরকার, এসএসসি-৯১ এর সমন্বয়ক রাশেদ চৌধুরী প্রমুখ।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, ২০১১ সালে যশোরে মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হলেও দীর্ঘ ১০ বছরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল নির্মাণ প্রক্রিয়া আলোর মুখ দেখেনি। যদিও যশোরের পরে স্থাপিত পাশের জেলা সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়ায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এ অবস্থায় মেডিকেল শিক্ষার্থীদের যথাযথ শিক্ষা কার্যক্রম ব্যাহত হওয়ার পাশাপাশি বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের সাধারণ মানুষ অধিকতর চিকিৎসাসেবা লাভে বঞ্চিত হচ্ছেন। এ কারণে অবিলম্বে যশোরবাসীর প্রাণের দাবি যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল স্থাপন করতে হবে।
মানববন্ধন শেষে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রধান করেন নেতৃবৃন্দ। স্বারকলিপিতে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে যশোর মেডিকেল কলেজ স্থাপন করা হয়। প্রাথমিক অবস্থায় যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে কলেজটির সকল কার্যক্রম পরিচালনা করা হতো। পরবর্তীতে শহরের শংকরপুর এলাকায় নিজস্ব ক্যাম্পাসে কলেজ স্থানান্তর করা হয়। বর্তমানে কলেজে চার শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছেন। তবে দীর্ঘ ১০ বছরেও এখানে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল চালু করা হয়নি। যদিও যশোরের পরে স্থাপিত পাশের জেলা সাতক্ষীরা ও কুষ্টিয়ায় মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে।
স্মারকলিপিতে আরো বলা হয়েছে, মেডিকেল কলেজের সাথে হাসপাতাল না থাকলে সেই মেডিকেল কলেজ পূর্ণাঙ্গ হয় না। কারণ শিক্ষার্থীদের তত্তি¡য় বিষয়ের পাশাপাশি ব্যবহারিক শিক্ষাও অনিবার্য। আর এই শিক্ষার জন্য মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের কলেজ থেকে প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে যেতে হয়। কিন্তু এই হাসপাতালে পর্যাপ্ত সুবিধা না থাকায় শিক্ষার্থীরা অনেক ক্ষেত্রেই বিড়ম্বনায় পড়েন। সাধারণ মানুষও বঞ্চিত হন মেডিকেল কলেজের মতো পূর্ণাঙ্গ হাসপাতালের চিকিৎসাসেবা থেকে। এজন্য যশোরে মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা করা হলে শিক্ষার্থীদের উপকারের পাশাপাশি বৃহত্তর যশোর অঞ্চলের সাধারণ মানুষ বর্তমানের চেয়ে অধিকতর চিকিৎসাসেবা লাভ করবে।
উল্লেখ্য, যশোর মেডিকেল কলেজে ৫০০ শয্যা হাসপাতালের দাবিতে ৬ সেপ্টেম্বর প্রেসক্লাব যশোর মিলনায়তনে এক মতবিনিময় সভা থেকে ১০১ সদস্যের এই কমিটি গঠন করা হয়। একই সাথে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল বাস্তবায়ন সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব জিল্লুর রহমান ভিটু বলেন, ‘যশোরের মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি ৫০০ শয্যা বিশিষ্ট মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল। তবে এক দশকের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও তাদের চাওয়া পূরণ হয়নি। একারণেই আমরা এই কর্মসূচি দিয়েছি। আন্দোলন কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রথম দিন জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে মানববন্ধন ও সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করা হল। পরে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী বরাবর আমরা স্মারকলিপি পাঠালাম। দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত এ সংগ্রাম চলবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *