যুক্তরাষ্ট্রের উদ্বেগ বাড়াতে সৌদি আরব যাচ্ছেন শি
জো বাইডেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে সৌদি আরবের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের দীর্ঘদিনের মৈত্রী ক্ষয় হয়ে গেছে বলে মনে হচ্ছে। এছাড়া ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসন শুরুর পর তেলসহ বিভিন্ন ইস্যুতে রিয়াদের সঙ্গে ওয়াশিংটনের বিদ্যমান দূরত্ব উত্তেজনায় পরিণত হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আর চীন ও ভারতের মধ্যে উত্তেজনা বিরাজ করছে। এই পরিস্থিতিতে বেইজিং ও রিয়াদের মধ্যে উত্তেজনার মধ্যেই সৌদি আরব সফরে যাচ্ছেন চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। খবর সিএনএনের।প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি সপ্তাহেই এই সফর হতে পারে। আগামী বৃহস্পতিবার (৮ ডিসেম্বর) তিনি মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশে পৌঁছাতে যাচ্ছেন বলে জানা গেছে।
বেশ কয়েকটি সূত্রের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সৌদি আরবের রাজধানী রিয়াদ সফরের সময় একটি চীন-আরব শীর্ষ সম্মেলন হবে। সম্মেলনে ১৪টি আরব দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া দুই দিনের সফরে চীন-জিসিসি সম্মেলন হওয়ার কথা রয়েছে।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার সবচেয়ে বড় মিত্র সৌদি আরব সফরের গুঞ্জন কয়েক মাস ধরে শোনা যাচ্ছিল। তবে সৌদি আরব ও চীন সরকারের পক্ষ থেকে এখন পর্যন্ত বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।
গত সপ্তাহে সৌদি সরকার সঠিক তারিখ নিশ্চিত না করেই শীর্ষ সম্মেলন কভার করার জন্য সাংবাদিকদের নিবন্ধন ফর্ম পাঠিয়েছে। এছাড়াও শি জিনপিংয়ের সফর ও নির্ধারিত শীর্ষ বৈঠক সম্পর্কে তথ্যের জন্য সিএনএন দ্বারা যোগাযোগ করা হলে সৌদি সরকার মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানায়।
সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, তেল উৎপাদন কমানোর কারণে যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরবের মধ্যে সম্পর্ক তলানিতে এসে ঠেকেছে। সাড়ে নয় মাসের রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত। রাশিয়ার স্বার্থে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সন্দেহ প্রকাশ করছে পশ্চিমা দেশগুলো।
সম্প্রতি শীর্ষ তেল উৎপাদকদের জোট ওপেক প্লাস দৈনিক ২০ মিলিয়ন ব্যারেল তেল উৎপাদন কমাতে ঐকমত্যে পৌঁছেছে। যা ২০২০ সালের পর সর্বোচ্চ। এছাড়া ওপেক প্লাস তেল উৎপাদন কমানোর এই হার বিশ্বব্যাপী সরবরাহের প্রায় ২ শতাংশের সমান।
ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের কারণে যুক্তরাষ্ট্রসহ পশ্চিমা দেশগুলো মস্কোর বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এ প্রেক্ষাপটে যুক্তরাষ্ট্র তেল উৎপাদন বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা প্রকাশ করলেও সৌদি আরবের নেতৃত্বে তেল উৎপাদনকারী দেশগুলোর জোট তেল উৎপাদন কমানোর সিদ্ধান্ত নেয়।
মার্কিন মিত্র হওয়া সত্ত্বেও রিয়াদের সিদ্ধান্ত কার্যত হয় রাশিয়ার পক্ষে। এটি বাইডেন প্রশাসনকে ক্ষুব্ধ করেছে। যুক্তরাষ্ট্র ও সৌদি আরব এখনও তেল উৎপাদন নিয়ে উত্তপ্ত বিরোধে রয়েছে। তেল উৎপাদন কমানোর বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক প্রচারণা সত্ত্বেও এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।