শৈলকুপায় ইলা মিত্রের পৈতৃক বাড়িসহ জমি আজও দখলমুক্ত হয়নি
শৈলকুপা প্রতিনিধি ঃ ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার ছোট্ট গ্রাম রায়পুর। উপজেলা শহর থেকে পূর্ব-দক্ষিণে ১০ কিলোমিটার দূরে এগ্রামের অবস্থান। গ্রামের ভিতরে একেবারেই চলাচলের অযোগ্য কাঁচা রাস্তার পাশে চুন-সুরকি দিয়ে গাঁথা পুরনো একটি দ্বিতল বাড়ি আর এই বাড়িটি তেভাগা আন্দোলনের নেত্রী নাচোলের রানী ইলা মিত্রের পৈতৃক বাড়ি। ইতিহাসের স্বাক্ষী হয়ে আজো ইলা মিত্রের শেষ স্মৃতি বাড়িটি দাঁড়িয়ে থাকলেও তা এখন বে-দখল হয়ে গেছে । ভেঙে পড়তে শুরু করেছে ইটের গাথুনিগুলো। চওড়া প্রাচীরের অনেক অংশ ভেঙে ফেলেছে দখলদাররা। শুধু বাড়ি নয়, দখল করা হয়েছে ইলা মিত্রের বাবা নগেন্দ্রনাথ সেন, মা মনোরমা সেন, দাদা রাজমোহন সেনের নামে রেখে যাওয়া শত শত বিঘা জমি।
ইলা মিত্রের পৈত্রিক বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, পুরাতন এই বাড়িতে বসবাস করছেন হাজি কিয়ামউদ্দিনের তিন সন্তান। তার ছেলে আঃ রশিদ জানান, তারা বাগুটিয়া ১১৬ নং মৌজার ২৩৪৫ দাগের জমির উপর বাড়িটিসহ ৮৪ বিঘা জমি ক্রয় করেছেন। বাবা হাজি কিয়ামউদ্দিন বহু আগে ইলা মিত্রের বাবা নগেন্দ্রনাথ সেনের শাশুড়ি সরোদিনি সেনের কাছ থেকে এই জমি ক্রয় করেন। সরোদিনি সেন কিভাবে এই জমির মালিক হলেন তা তিনি বলতে পারেন না বলে জানান। তিনি আরো জানান, আমরা যেহেতু এই বাড়িতে বসবাস করি তাই আমাদের পুনর্বাসন করে ইলা মিত্রের পৈতিক ভিটা সংরক্ষণ করা হলে আমাদের কোন আপত্তি থাকবে না। আমরা এই বাড়ি নিয়ে অনেকবার জেলা প্রশাসক এর সাথে বসেছি কিন্তু কোন ফল পাইনি।
ইলা মিত্রের পরিবার সম্পর্কে ওই গ্রামের বাসিন্দা রফিকুল ইসলাম জানান, তারা শুনেছেন নগেন্দ্রনাথ সেন নামে এক ব্যক্তি তাদের এলাকার জমিদার ছিলেন। বাগুটিয়াসহ পাশবর্তী বেশ কয়েকটি মৌজায় জনৈক নগেন্দ্রনাথ সেন, তার স্ত্রী মনোরমা সেন,পুত্র নৃপেন্দ্রনাথ সেন নামীয় বেশ কিছু জমি ১৯৬৫ সালের ভিপি তালিকাভুক্ত হয়। এর মধ্যে পুরাতন ওই ভবনটিও রয়েছে। তাদের অঢেল জমি ছিল যা বর্তমানে এলাকার প্রভাবশালীরা দখল করে নিয়েছে। কিয়াম উদ্দিন ছাড়াও আমিনুল ইসলামের দখলে রয়েছে নগেন্দ্রনাথ সেনের সিংহভাগ জমি। তার দাবি বাড়িটি যদি ইলা মিত্রের হয় তাহলে এটি সংরক্ষণ করা জরুরি। কারণ ইলা মিত্রকে ঘিরে কৃষক বিদ্রোহের অনেক ইতিহাস রয়েছে।
শৈলকুপা উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি) পার্থ প্রতিম শীল বলেন, শুনেছিলাম প্রত্নতত্ব বিভাগ ঢাকা থেকে সংরক্ষনের জন্য চিঠি জেলা প্রশাসক বরাবরে এসেছিল কিস্তু চিঠিটা আমাদের পর্যন্ত পৌছায়নি। তারপরেও বাড়িটি সরকারের খাতায় ভিপি তালিকাভুক্তি হয়নি যার জন্য আমরা পরবর্তী পদক্ষেপ নিতে পারেনি।