সরকারী হাসপাতালে যেতে বাধা দালালদের খপ্পরে পড়ে প্রসুতির মৃত্যু হলো ক্লিনিকে

Share Now..


স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
বিউটি খাতুন (২৪) নামে এক নারীর প্রসব বেদনা শুরু হলে প্রথমে নিয়ে যাওয়া হয় নিকটস্থ শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। কিন্তু বিধি বাম! সরকারী হাসপাতালের সেবা থেকে বঞ্চিত হয় বিউটি। হাসপাতাল গেটের সামনে অপেক্ষমান দালালরা বিউটিকে সরকারী হাসপাতালে ঢুকতে দেয়নি। প্রসব বেদনায় ছটফট করতে থাকা বিউটি খাতুনকে সেখান থেকে জোর পুর্বক ভাগিয়ে নিয়ে শৈলকুপা প্রাইভেট হাসপাতাল নামে একটি বেসরকারী ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়। তখন শনিবার (২৬ জুন) ভোর ছয়টা। ক্লিনিকে ভর্তির পর কোন ডাক্তার ছিল না। ছিল না কোন প্রশিক্ষিত নার্স। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিউটি খাতুনের প্রসব বেদনা বাড়তে থাকে। ৩ ঘন্টা প্রসব বেদনায় ছটফট করতে থাকেন ওই প্রসুতি। বেদনায় নীল হয়ে পড়ে তার শরীর। এক পর্যায়ে চিকিৎসা না পেয়ে গর্ভবতী বিউটি সকাল ৯টার দিকে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন। বিউটি খাতুন শৈলকুপা পৌরসভার বাজারপাড়া গ্রামের রিপন হোসেনের স্ত্রী। এদিকে বিউটির মৃত্যুর পর ক্লিনিকের ছয় মালিক ও ম্যানেজার গাঢাকা দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে ক্লিনিকের সামনে মোতায়েন করা হয় পুলিশ। বিষয়টি নিয়ে শৈলকুপা থানার ওসি (তদন্ত) মহসীন আলী জানান রোগীর পরিবার থেকে এখনো কোন লিখিত অভিযোগ করা হয়নি। সে কারণে আমরা কোন ব্যাবস্থা নিতে পারেনি। তবে পরিস্থিতি মোকাবেলায় ক্লিনিকে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য পরিবার ও পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রাশেদ আল মামুন জানান, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী সিন্ডিকেট থাকায় দালালরা রোগীদের সরকারী হাসপাতালে ঢুকতে বাধা দেয়। রোগীদের ভুলভাল বুঝিয়ে ক্লিনিকে ভাগিয়ে নিয়ে যায়। বিউটির ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তবে হাসপাতাল কতৃপক্ষ দালালদের বিরুদ্ধে অজ্ঞাত কারণে ব্যবস্থা গ্রহন করে না বলে অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ পাওয়া গেছে শৈলকুপা উপজেলার কোন ক্লিনিকেই সার্বক্ষনিক ডাক্তার থাকেনা, থাকে কাগজে কলমে। শৈলকুপা হাসপাতালের প্রধান গেটের সামনেই গড়ে উঠেছে এই আধুনিক মানের কথিত ক্লিনিক। দেখে বোঝার উপায় নেই যে, এখানে সেবার মান শুন্যের কোঠায়। আলীশান ডেকোরেশনসহ সবকিছু থাকলেও শুধু নেই সার্বক্ষনিক ডাক্তার ও ডিপ্লোমা নার্স।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *