হেরেও ফাইনালের স্বপ্ন টিকে রইল বাংলাদেশের
সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে প্রথমার্ধ সমানতালে এগিয়ে যাওয়া বাংলাদেশ দ্বিতীয়ার্ধে খেই হারিয়ে ফেলে। স্বাগতিকদের আক্রমণ বেশ ভালোভাবে সামাল দিলেও দ্বিতীয়ার্ধে ২ গোল হজম করতে হয় লাল-সবুজের বাংলাদেশকে। ফলে এবারের সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে প্রথমবারের মতো হারের স্বাদ গ্রহণ করলো জামাল ভূঁইয়ার দল।
এই হারের পরেও বাংলাদেশের ফাইনাল খেলার স্বপ্ন এখনো টিকে আছে। ২ ম্যাচ খেলে ৬ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের শীর্ষে নেপাল। ৩ ম্যাচ খেলে ৪ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে বাংলাদেশ। ২ ম্যাচ খেলে মালদ্বীপের পয়েন্ট ৩। সমান ম্যাচ খেলে ভারতের পয়েন্ট ২। ফাইনালে কারা খেলবে সে জন্য হয়তো অপেক্ষা করতে হবে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত। সেদিন শেষ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ।
এই ম্যাচে অতিমাত্রায় ফাউলের কারণে লাল-সবুজ দলের একাধিক খেলোয়াড়কে দেখতে হয়েছে হলুদ কার্ড। প্রতি আক্রমণ নির্ভর ফুটবল খেলে শুরুর দিকে সুযোগ পেয়েছিল অস্কার ব্রুজনের দলই। ২ মিনিটে বিপলু আহমেদের শট সরাসরি গোলকিপার মোহাম্মদ ফয়সালের তালুতে জমা পড়ে। ৯ মিনিটে আবারও বিপলুর বক্সের বাইরে থেকে নেওয়া শট ক্রস বারের ওপর দিয়ে গেলে হতাশ হতে হয় দলকে। ২২ মিনিটে জামালের কর্নার থেকে বল পেয়ে বক্সের বাইর থেকে জোরালো শট নিয়েছিলেন ইব্রাহিম। কিন্তু লক্ষ্যে থাকেনি সেটি। এরপর থেকে মালদ্বীপ গোল করতে মরিয়া হয়ে উঠলেও সফল হতে পারেনি।
৪৪ মিনিটে আলী আশফাকের ফ্রি-কিক থেকে আলী ফাসিরের প্লেসিং ক্রস বারের অনেক ওপর দিয়ে যায়। যোগ করা সময়ে আবার আলী আশফাকের ফ্রি-কিক গোলকিপার জিকো ডান দিকে ঝাঁপিয়ে পড়ে রুখে দেন।
বাংলাদেশের রক্ষণভাগের জন্য আতঙ্কের নাম ছিল আলী আশফাক ও হামজা মোহাম্মদ। তাঁদের পায়ে বল গেলেই বাংলাদেশের কয়েকজন মিলে আটকানোর চেষ্টা করেছেন। তবুও ২৯ মিনিটে সহজ একটি গোলের সুযোগ তৈরি করে নেয় মালদ্বীপ। মিডফিল্ডার হুসাইন নিহানের শট সাইড পোস্ট ঘেঁষে বাইরে চলে যায়। বিরতিতে যাওয়ার আগে দুর্দান্ত সেভ করে দলে বাঁচিয়েছেন গোলরক্ষক আনিসুর রহমান। আশফাকের বাম পায়ের বাঁকানো ফ্রি কিক ডান দিকে ঝাঁপিয়ে রক্ষা করেন তিনি।
তবে বিরতির পর আর স্বাগতিকদের আটকে রাখা যায়নি। ৫৫ মিনিটে এগিয়ে যায় মালদ্বীপ। হুসেইন নিহানের হেড থেকে হামজা মোহামেদ দারুণ বাইসাইকেল কিকে দূরের পোস্ট দিয়ে বল জালে জড়িয়ে দেন। গোলকিপার জিকো কিছুই করতে পারেননি। এক গোলে পিছিয়ে থেকে বাংলাদেশ একাদশে তিনটি পরিবর্তন আনে। মাঠে নামেন জুয়েল রানা, মাহবুবুর রহমান সুফিল ও সুমন রেজা। এতে করে রক্ষণাত্মক কৌশল থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা ছিল। তার পরেও হতাশ হতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
বরং ৭৩ মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করে নেয় মালদ্বীপ। আগুয়ান নাইজ হাসানকে ফেলে দেন সোহেল রানা। অভিজ্ঞ আলী আশফাক সহজেই লক্ষ্যভেদ করেন। এনিয়ে সাফে বাংলাদেশের বিপক্ষে তৃতীয় লক্ষ্যভেদ ৩৬ বছর বয়সী আশফাকের।
৭৫ মিনিটে আলী ফাসিরের শট গোলকিপার জিকো রুখে দিয়ে ব্যবধান আর বাড়তে দেননি। তবে শেষের দিকে চেষ্টা করেছে বাংলাদেশ। যোগ করা সময়ে মতিনের শট পোস্টের সামান্য বাইর দিয়ে গেলে হতাশই হতে হয়। শেষ পর্যন্ত ব্রুজনের অধীনে লাল-সবুজ দল প্রথম হার নিয়ে মাঠ ছেড়েছে।