অতিরিক্ত ভাজাপোড়া নয়

Share Now..

অতিরিক্ত তেল জাতীয় খাবার কিংবা অতিরিক্ত ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার যেকোন মানুষের কিংবা যেকোনো বয়সের স্বাস্থ্যের জন্যই ক্ষতিকর। এই ধরনের খাবার থেকে হতে পারে হাজার হাজার রোগ। এর মধ্যে সামনে আসছে মাহে রমজান মাস।

সবদিক থেকেই নানান রকমের প্রস্তুতি শুরু করতে হয়। এই সময় সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে বিষয়টি নিজের স্বাস্থ্যের ওপর নজর রাখা। ১০-১২ ঘণ্টার রোজা রাখার পর নানান রকমের মুখরোচক ভাজাপোড়া খেতে ভালো লাগলেও তার স্বাস্থ্যের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। অতিরিক্ত ভাজাপোড়া এবং নানান ধরনের কোমল পানীয় একটা মানুষের স্বাস্থ্যের অভ্যন্তরীণ এবং বাহ্যিক নানান ক্ষতি করে থাকে। 

দীর্ঘ সময় রোজা রাখার পর সরাসরি যদি এই ধরনের খাবার খাওয়া হয়।  তা ছোট ছোট সমস্যার প্রথমদিকে ধারণ করলেও সেই সমস্যার আকার পরবর্তীতে বিশাল বড় হবে। 

তবে এর মানে এই নয় যে সম্পূর্ণ দমে কিংবা পুরোপুরিভাবে ভাজাপোড়া নিষেধ।  যতটা সম্ভব এই ভাজাপোড়া বিষয়টা বর্জন করা যায় তা স্বাস্থ্যের জন্য ঠিক ততটাই ভালো। 

এছাড়াও শুধু ভাজাপোড়ায় যে স্বাস্থ্যের ক্ষতি করে তা নয় অনেকেই রোজা ভাঙার পরপর অতিরিক্ত বেশি খেয়ে ফেলে। তবে অনেকক্ষণ রোজা রেখে অতিরিক্ত বেশি খেলেও স্বাস্থ্যের নানান ধরনের ক্ষতি হতে পারে। 

যারা কম খান বা মিতহারী, তারাই পৃথিবীতে বেশি দিন সুস্থভাবে বাঁচেন। আর যারা বেশি খান, তাদের আয়ুষ্কাল স্বল্প। সুস্থভাবে বাঁচতে চাইলে আপনাকে কম খেতে হবে এবং রোজা এসেছে সুস্থ রাখার জন্য। রোজার বৈজ্ঞানিক তাৎপর্যের ওপর ইতিবাচক গবেষণা হয়েছে। এই আমরা যখন খাবার থেকে বিরত থাকি, দেহের কোষগুলো খাবার পায় না। এতে দেহের কোষগুলো জমা হয়ে থাকা খারাপ খাবার বা নষ্ট সেলগুলো খেয়ে ফেলে। এতে সুস্থ থাকতে সহায়তা করে। 

অতিরিক্ত ভাজাপোড়া স্বাস্থ্যের যে ধরনের ক্ষতি করতে পারে: 

বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা বলছেন,  

  • তেলে ভাজা নানান খাবার মারাত্মক বিপদ ডেকে আনছে।  বাড়িয়ে দিচ্ছে হৃদরোগ, ফ্যাটিলিভারের মতো রোগের ঝুঁকি।
  • পেটের বামপাশে ব্যথা, বুক জ্বালাপোড়া,পেট জ্বালাপোড়া, পেট ফেঁপে থাকা, মাথা ঘুরানো,বমি বমি ভাব।
  • GERD এর ক্ষেত্রে বুকে ব্যথা, অধিক হারে ঢেঁকুর ও বমিভাব। 
  • ডিউডেনাম আলসার হলে পেটের মাঝামাঝি ব্যথা এবং ব্যথা পুরো পেটে ছড়িয়ে পড়া। 
  • গ্যাস্ট্রিক আলসারের সবচেয়ে অপরিচিত উপসর্গ হচ্ছে খাবার খাওয়ার চাহিদা বেড়ে যাওয়া। অধিকহারে খাবার পরেও রোগীর ক্ষুধা লাগবে। কারণ আলসারের কারণে অনেক সময় দেখা যায়, পাকস্থলি থেকে ব্রেইনে হাঙ্গার সেন্টারে নার্ভ সিগনাল সঠিকভাবে পরিচালিত হতে পারেনা। তাই রোগী পেট ভরে খেলেও হাঙ্গার সেন্টার সঠিক মেসেজ না পাওয়ার কারণে ক্ষুধার পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়। 

কোমল পানীয় অনেকেরই খুব পছন্দ। বিশেষ করে তরুণ-তরুণীরা এটি খুব পছন্দ করে। এসব সফট ড্রিংক খাওয়া গ্যাস্ট্রাইটিসের অন্যতম কারণ এবং অনেক সময় গ্যাস্ট্রাইটিস বাড়িয়ে দেয়। সাময়িক ভালো লাগলেও এটি শরীরের জন্য ভালো নয়। সেইসাথে অ্যালকোহলজাতীয় পানীয়তে আরো ঝুঁকি থাকে। লিভারেরও ক্ষতি করে এসব পানীয়। কোমল পানীয় পান করলে এলার্জিজনিত নানান সমস্যাও দেখা দিতে পারে। 

তাই যতটা সম্ভব চেষ্টা করুন ভাজাপোড়া জাতীয় খাবার বর্জন করতে। এছাড়াও ফলমূল, দই, চিড়া ফলের রস, অল্প তেলে রান্না করা কোন খাবার এ ধরনের খাবারগুলো খাদ্য তালিকায় রাখুন। 

প্রচলিত একটি কথা রয়েছে,  ‘স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল’।  এ কথাটি অক্ষরে অক্ষরে সত্যি। যতক্ষণ শরীর ভালো থাকবে, ততক্ষণ মানসিক শারীরিক জোড় পাওয়া যাবে। সুস্থতা, সুস্থ জীবন সুন্দর জীবন প্রত্যেকটা মানুষেরই কাম্য। তাই সে অনুযায়ী কিছু নিয়ম দিক-নির্দেশনা মেনে চলা উচিত। জীবনকে ততই বেশি উপভোগ করা যাবে যত বেশি সুন্দরভাবে জীবনকে পরিচালনা করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *