অনলাইন গেমসে আসক্তি, উত্তরণের উপায়

Share Now..

বর্তমানে প্রযুক্তি এগিয়েছে বহুদূর। দৈনন্দিন জীবনে যার প্রভাবকে এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই। প্রযুক্তির ছোঁয়া লেগেছে দেশের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে। শিশু, কিশোর-কিশোরীরা ঝুকে পড়েছে অনলাইন গেমসে। অধিকাংশ ভিডিও গেমস যেমন- পাবজি, ফ্রি-ফায়ার, মডার্ন কমব্যাট এগুলোর কনটেন্ট যুদ্ধ, সংঘাত রক্তপাত নিয়ে। এগুলো কোমলমতি শিশুদের মানসিক বিকাশের অন্তরায়।

করোনা মহামারিতে দীর্ঘদিন স্কুল-কলেজ বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা অনলাইন গেমসে প্রায় আসক্ত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে তারা এতটাই আসক্ত যে, পড়াশুনায় পিছিয়ে পড়ছে। অসহায় হয়ে পড়েছে বাবা-মায়েরা।

সারাদিন গেমস নিয়ে ব্যস্ত, মা–বাবার সঙ্গে কোনো জায়গায় যেতে চায় না। ডিজিটাল পর্দার গেম ছাড়া আর কোনো কিছুতে আগ্রহ নেই। বাসায় কয়েক মুহূর্তের জন্য ওয়াই–ফাই বন্ধ থাকলে উৎকণ্ঠা বেড়ে যায়। অস্থিরতা শুরু করে, গালমন্দ শুরু করে দেয়। বলছিলাম হোসাইন নামের এক শিশুর কথা।

হোসাইনের মতো আরও অনেক শিশু-কিশোর ঝুঁকে পড়ছে মোবাইল অনলাইন গেমসে। শুধু-শিশু কিশোর না, আসক্তিতে পড়েছে বড়রাও।

হোসাইনের বাবা মা জানায়, সে অনলাইন গেমসের প্রতি এতটাই আসক্তি যে, তাকে খেলতে না দেওয়া হলে প্রচণ্ড রেগে যায়, অকথ্য ভাষায় গালাগাল করে এবং মাঝে মাঝে জিনিসপত্র ভাঙচুর করে।

মূলত সন্তানদের শান্ত রাখতে কিছু বাবা মায়েরা সন্তানদের মোবাইল চালাতে দেন। এভাবেই তারা মোবাইলের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে। শুধু তাই নয়, ইদানিং বাবা মায়েরাও মোবাইল ফোনে ব্যস্ত হয়ে যাওয়ায় শিশুরা আসক্ত হয়ে পড়ছে।

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফ্যাকাল্টি সাইরা মাতিন জানান, শিশুদের অনলাইন গেমের আসক্তি তাদেরকে পড়াশুনা বিমুখ করে তুলছে। তাদের মেধা বিকাশে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

কখন অনলাইন গেমসে আসক্তি বলা যায়:

দিনের শুরুতেই গেমস খেলার তিব্র আগ্রহ। পড়াশুনার প্রতি অনিহা, স্কুল কলেজে যেতে না চাওয়া। বিনোদনের উৎস বলতে অনলাইন গেমসকে বুঝানো  গেমসে ব্যাঘাত ঘটলে উগ্র ও অস্বাভাবিক আচরন করা।

এছাড়া সামাজিকতা কমে যাবে। কারও সঙ্গে মিশবে না। নিজেকে গুটিয়ে রাখবে। খাওয়া দাওয়া ও ঘুমে অনিহা ইত্যাদি। বাবা-মাসহ পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে সম্পর্ক খারাপ হতে থাকবে। সামাজিক সম্পর্কগুলোর মূল্য কমতে থাকবে।

প্রতিরোধের উপায়:

ইন্টারনেট ব্যবহার করতে শিশুকে একটি সময়সীমা বেঁধে দিন। সন্তানদের একটি রুটিনের মধ্যে আনুন, যাতে নিয়মগুলো পালন করে। তার দিকে খেয়াল রাখুন। সময় কথা মেনে চলতে উৎসাহিত করুন।

বাসার ডেস্কটপ কম্পিউটারটি প্রকাশ্য স্থানে রাখুন। শিশু যাতে আপনার সামনে মুঠোফোন, ট্যাব, ল্যাপটপ ইত্যাদি ব্যবহার করে, সেদিকে গুরুত্ব দিন। শিশুদের সময় দিন।

এর আগে বাবা মায়েদের যদি মোবাইলের প্রতি আসক্তি থাকে তাহলে সেটা বর্জন করুন। শিশুদের ইনডোর, আউটডোর গেমসে উৎসাহিত করুন। তাদের বিভিন্ন বিনোদনমূলক স্থানে ঘুরতে নিয়ে যান।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এখন থেকেই শিশুদের অনলাইন গেমস থেকে সরিয়ে আনতে হবে। বাবা মায়ের উচিত শিশুরা কী করছে, কাদের সাথে মিশছে, সেদিকে সমানতালে নজর দেওয়া। শিশু-কিশোরদের অনলাইন গেমস থেকে সরিয়ে আনাই হোক লক্ষ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *