অর্থের বিনিময়ে ইচ্ছেমতো ‘প্লেজার ম্যারেজ’, সমালোচনার ঝড়

Share Now..

অর্থের বিনিময়ে অস্থায়ীভাবে কোনো পুরুষ পর্যটক নারীদের বিয়ে করতে পারবেন! শুনতে অবাক করার মতো হলেও ইন্দোনেশিয়ায় চলছে এমন ঘটনা। এ নিয়ে ইতোমধ্যে অনলাইনে তুমুল আলোচনা সমালোচনা শুরু হয়েছে। বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) সাউথ চায়না মর্নিং পোস্টের এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।  

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দেশটির পশ্চিমাঞ্চলীয় অঞ্চল পুনকাক আরব পর্যটকদের জন্য জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে। সেখানেই প্রত্যন্ত অঞ্চলের গরিব নারীদের পর্যটকদের কাছে অর্থের বিনিময়ে সাময়িক সময়ের জন্য বিয়ে দেওয়া হচ্ছে।  সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট বলছে, পাহাড়ি রিসোর্ট কোটা বুঙ্গাতে পুরুষ পর্যটকদের সঙ্গে বিভিন্ন এজেন্সির মাধ্যমে স্থানীয় নারীদের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়। এরপর দুইপক্ষই রাজি হলে দ্রুত এবং ঘরোয়াভাবে তাদের বিয়ে পড়ানো হয়। এক্ষেত্রে পুরুষ পর্যটককে ক্ষতিপূরণ হিসেবে অর্থ দিতে হয়। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বিয়ের পর তারা স্বামী-স্ত্রীর মতো সময় কাটাবেন এবং স্ত্রীকে ঘরের কাজ করতে হবে। এরপর ওই পুরুষ পর্যটকের যখন সফর শেষ হবে এবং তিনি দেশে চলে যাবেন তখন এই বিয়েও বাতিল হবে। এমন বিয়েকে প্লেজার ম্যারেজ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। লস অ্যাঞ্জেলেস টাইমসের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই বিয়ে পদ্ধতি পুনকাকের পর্যটন খাতকে বৃদ্ধি করেছে। স্থানীয় অর্থনীতিও চাঙ্গা হয়েছে। 

প্রথমদিকে মেয়েদেরকে পরিবারের সদস্য বা পরিচিতরা পর্যটকদের সঙ্গে পরিচয় করে দিতেন। তবে এখন বিভিন্ন এজেন্সি এটি নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে। 

কাহায়া নামে এক তরুণী লস এঞ্জেলেস টাইমসকে বলেছেন, তিনি ১৫বারের বেশি বিয়ে করেছেন এবং তার প্রতিটা ‘স্বামীই’ ছিল মধ্যপ্রাচ্যের। প্রথমবার তিনি যে পর্যটককে বিয়ে করেছিলেন তিনি ছিলেন সৌদি আরবের। বয়স ছিল ৫০ বছর।

ওই ব্যক্তি বিয়ের জন্য খরচ করে ৮৫০ মার্কিন ডলার। তবে যেই এজেন্ট এবং ব্যক্তি এই বিয়ের আয়োজন করে তারা এই অর্থের অর্ধেক নিজে নেয়। বাকি অর্ধেক অর্থ নেয় কাহায়া।

সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট বলছে, বিয়ের পাঁচদিন পর সৌদির ওই ব্যক্তি দেশে চলে যায় এবং তাদের তালাক হয়। কাহায়া জানান, প্রতি বিয়ে থেকে তিনি ৩০০ থেকে ৫০০ ডলার আয় করতে পারেন। 

নিসা নামে আরেক নারী জানান, তার অন্তত ২০বার বিয়ে হয়েছে। তবে তিনি এই ব্যবসা ছাড়তে পেরেছেন।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নিকাহ মুত’আ বা প্লেজার ম্যারেজ শিয়াদের সংস্কৃতির অংশ। তবে বেশিরভাগ শিয়াপন্থী স্কলার বলেছেন, এমন বিয়ে পদ্ধতি পুরোপুরি অগ্রহণযোগ্য।  এ ছাড়া ইন্দোনেশিয়ার আইনে এই বিয়ের স্বীকৃতি নাই বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার বিয়ের আইন কেউ না মানলে তার জরিমানা, জেল হতে পারে। 

চীনের মিডিয়ায় এই খবর আসার পর দেশটির সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এ নিয়ে ব্যাপক আলোচনা চলছে। এক ব্যক্তি বলেছেন,  সাময়িক বিয়ের এই অন্ধকার ব্যবসা অঞ্চলটির পর্যটন খাতকে এবং স্থানীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করায় দেশটির সরকার হয়তো এটি বন্ধে শক্তিহীন। তবে বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ নিয়ে তোলপাড় চলছে। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *