অল্পতেই তুষ্ট থাকা মানুষ আমি: রিচি

Share Now..

নব্বই দশকের শেষ ভাগে টিভি পর্দায় শমী-মিমি-বিপাশার পর একঝাঁক অভিনেতা-অভিনেত্রী কাজ শুরু করেন। তাদের ভেতরে অন্যতম প্রিয়মুখ রিচি সোলায়মান। দীর্ঘদিন টিভি পর্দায় কাজের পর আবারও দেশে ফিরেছেন এই অভিনেত্রী।

গত প্রায় ১ বছরের বেশি সময় হলো তিনি বাংলাদেশে থাকছেন। কিন্তু কেন? এমন প্রশ্ন করতেই বলেন, ‘আমেরিকায় থাকাকালীন সবসময়ই আমার হাজবেন্ড রাশেক বলতো যে, আমেরিকার গুড সাইড, ব্যাড সাইড দুটোই রয়েছে। এখানে বাচ্চাদের শেখানো হয়, কী করে তুমি পরিবার থেকে তোমার অধিকার আদায় বা রক্ষা করবে। কিন্তু বাবা-মা, পরিবারের সাথে কী রকম শিষ্টাচার পালন করতে হবে তা শেখানো হয় না। আবার দেখুন, ওখানে সন্তানের বয়স ১৮ হলেই বাবা-মাকে ছেড়ে চলে যাবে এটাই নিয়ম। কিন্তু আমাদের এখানে ব্যাপারটি সেরকম নয়। একারণেই দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে দেশে এসেছি। ওদের আমেরিকান পাসপোর্ট আছে। সুতরাং ওরা তো যাবেই কোনো না কোনো সময়ই। অন্তত বাবা-মা পরিবারের প্রতি শিষ্টাচার শিখে যাক।

অভিনয়ে ফেরা

দেখুন, এটা আমি কখনোই মানতে পারি না বা বিশ্বাস করতে পারি না যে, কেউ অভিনয় ছেড়ে চলে যায়! সে কি অবসরে গিয়ে পেনশনের ভাতা নেয়? তা কিন্তু না। হয়তো মাঝে বিরতি দেয়। কিন্তু সবাই এই ফেরা, কামব্যাক এসব শব্দে ব্র্যাকেটবন্দি করে রাখে। এটা ঠিক না।’

রিচি সোলায়মান এরই ভেতরে নতুন কিছু কাজের ব্যাপারে প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এসময়ের নির্মাতাদের নিয়ে রিচি বলেন, ‘এখন প্রায়ই শুনি যে, আমরা সিনিয়রদের শিডিউল পাই না। অমুক কি রাজী হবে কিনা। আমার প্রশ্ন, তোমরা অন্তত একবার নক করে তো দেখো। তারপর না হয় বলো যে সে রাজি না। কিন্তু আমরা নিজেরাই ধারণাপ্রসূত একটা মনগড়া ভাবনা নিয়ে চলি। এখন ভালো গল্পের কাজ অবশ্যই করতে চাই। কিন্তু ঐসব নাটক যদি হয়  ‘এক্স গার্লফ্রেন্ড আমার বাড়িতে’ এমন হয়—তাহলে তো করা মুশকিল। এটা একদমই বাড়িয়ে বলা হবে না। কিন্তু অনেকের কাছেই আমার এখনো শুনতে হয় যে, ‘সর্বশেষ আপনাদের পর্যন্তই নাটক পরিবারসহ বসে দেখা যেত। এখন আর দেখা সম্ভব হয় না। এটা কিন্তু অনেকেই বলেন। এই অবক্ষয় দীর্ঘদিনের। তবে এখন বেশ কিছু নির্মাতা ওটিটির ওয়েব সিরিজে দারুণ কাজ করছেন। সেক্ষেত্রে আমি বলবো ভালো ভালো কাজের সুযোগ রয়েছে। তরুণ নির্মাতাদের এমন কাজ হলে অবশ্যই তা করতে চাই।

নিজের পছন্দকেও প্রাধান্য দেওয়া

নাসির উদ্দিন ইউসুফ বাচ্চু’র চলচ্চিত্র গেরিলা, তৌকির আহমেদের জয়যাত্রা বা মাহফুজ আহমেদের ‘চৈতা পাগল’ সহ একাধিক জনপ্রিয় কাজ ফিরিয়ে দিয়েছিলেন রিচি সোলায়মান। কারণ ব্যক্তিগত কাজ বা সন্তান নিয়ে সংসারের দায়িত্ব এসবকেই প্রাধান্য দিতে গিয়ে না বলেছেন। কিন্তু তাতে কোনো আক্ষেপ নেই রিচির। তার মতে, আমি নিজেই ব্যক্তিজীবনকে প্রায়োরিটি দিয়েছি। আমি বরাবরই অল্পতেই তুষ্ট থাকা মানুষ।’

ঠিক যখন এদেশের প্রায় দেড় শতাধিক তারকা ও তার পরিবার দেশ ছেড়ে আমেরিকায় পাড়ি দেয়ার খবর আসে—তখন রিচি সোলায়মান তার দুই সন্তানকে দেশীয় কালচারে লালন করার জন্যই দেশে ফিরেছেন। কিন্তু নানান কানকথা শুনতে হয় তার। কেউ বলেন,‘তবে কি রিচির সংসারে ভাঙন? এসব গুঞ্জন প্রসঙ্গে খানিক হেসেই বলেন, আমার হাজবেন্ড আমেরিকার পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগে পদোন্নতি পেয়েছে। খুব স্বাভাবিকভাবেই সে তুমুল ব্যস্ত। এরমাঝেও নিয়মিতই দেশে আসছে। চলতি মাসেও একবার আসবে। আমিও ছেলেদের নিয়ে ছুটিতে যাচ্ছি। তাই এসব খবর শুনে আমার হাসি পাওয়া ছাড়া কিছু করার থাকে না। তবে যে যাই বলুক, জীবনটা তো আমারই। তাই নিজের মতো করেই স্বামী সন্তান-সংসার নিয়ে আলহামদুলিল্লাহ খুব ভালো আছি। এখন বেছে বেছে কিছু ভালো গল্পের নাটক বা সিনেমায় কাজ করতে চাই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *