অস্ট্রেলিয়ায় খ্রিস্টীয় ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

Share Now..

ধর্ষণের অভিযোগ ওঠেছে অস্ট্রেলিয়ার বিশপ ক্রিস্টোফার স্যান্ডার্সের বিরুদ্ধে। এছাড়াও ধারাবাহিক যৌন অপরাধে অভিযুক্ত হয়েছেন তিনি। বলা হয়েছে, তার এসব যৌন নির্যাতনের শিকার হয়েছে শিশুরাও। খবর বিবিসির।

অভিযুক্ত ৭৪ বছর বয়সী এই বিশপকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে ব্রুমি থেকে। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ান পুলিশ এবং পোপ ফ্রাঁসিসের নির্দেশের পর সমান্তরালভাবে এ বিষয়ে তদন্ত করা হয়। তবে অভিযোগ ওঠার পর তা অস্বীকার করেছিলেন বিশপ স্যান্ডার্স। এদিন তার জামিন আবেদন করা হলে তা প্রত্যাখ্যান করা হয়েছে।

স্থানীয় সময় আজ বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করার কথা তাকে। এই ধরনের অভিযোগে অভিযুক্ত সবচেয়ে জ্যেষ্ঠ ক্যাথলিক ধর্মীয় নেতাদের মধ্যে তিনি অন্যতম। তার বিরুদ্ধে দুটি ধর্ষণের অভিযোগ আনা হয়েছে।

১৪টি বেআইনি এবং অশালীন কর্মকাণ্ডের অভিযোগ আনা হয়েছে স্যান্ডার্সের বিরুদ্ধে। ধর্মীয় একজন অভিভাবক হয়ে তিনি শিশুদের সঙ্গে যে অশালীন আচরণ করেছেন তার তিনটি অভিযোগ তোলা হয়েছে। ২০০৮ থেকে ২০১৪ সালের মধ্যে অস্ট্রেলিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ব্রমি, কুনুনুরা এবং কালুমবুরু আদিবাসী সম্প্রদায়ে এসব ঘটনা ঘটান তিনি।

এর আগে প্রয়াত কার্ডিনাল জর্জ পেল’কে এমন অভিযোগে জেল দেয়া হয়। পরে তাকে খালাস দেয়া হয়। তিনি ছাড়াও বিশপ স্যান্ডার্স অস্ট্রেলিয়ার সবচেয়ে সিনিয়র কার্ডিনাল কর্মকর্তাদের মধ্যে শিশুদের বিরুদ্ধে যৌন অপরাধে অভিযুক্ত হলেন।

অস্ট্রেলিয়ান ক্যাথলিক বিশপস কনফারেন্স বৃহস্পতিবার এক বিবৃতিতে পুলিশকে তদন্তে সহায়তার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। তারা বলেছে, বিশপ স্যান্ডার্সের বিরুদ্ধে অভিযোগ অত্যন্ত গুরুতর, গভীর হতাশাজনক, বিশেষ করে যারা এসব অভিযোগ করেছেন তাদের জন্য। পার্থের আর্চবিশপ টিমোথি কস্টেলো বলেন, এসব অভিযোগ পূর্ণাঙ্গভাবে তদন্ত করা উচিত এবং তা অবশ্যই প্রয়োজনীয় ও যথার্থ। 

১৯৭৬ সালে অস্ট্রেলিয়ার উত্তর-পশ্চিম প্রান্তে অবস্থিত প্রত্যন্ত কিমবারলি অঞ্চলে ক্যারিয়ারের বেশির ভাগ সময় ব্যয় করেন বিশপ স্যান্ডার্স। ১৯৯৬ সালে তাকে ব্রুমির বিশপ নিয়োগ করা হয়। এই এলাকাটির আয়তন প্রায় ৭ লাখ ৭০ হাজার বর্গকিলোমিটার। আকারে তা প্রায় তুরস্কের সমান। এর মধ্যেই আছে দেশটির সবচেয়ে প্রত্যন্ত এলাকাগুলো। সামাজিক হিসেবে তিনি সুপরিচিত ছিলেন। তাই পরামর্শ বিষয়ক কাজ করতেন। ক্যাম্পিং বা মাছ ধরার সময় অল্প বয়সী ছেলেদের সঙ্গে নিয়ে যেতেন। স্থানীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে তিনি ছিলেন একজন শক্তিধর ব্যক্তি। 

কিন্তু ওই এলাকার কিছু আদিবাসী সম্প্রদায়ের পুরুষ যৌন নির্যাতনের অভিযোগ তোলার পর তার বিরুদ্ধে দ্বৈত তদন্ত শুরু হয়। প্রথমে ২০২০ সালে এই অভিযোগ প্রকাশ্যে আসে। কিন্তু পুলিশ প্রথমে যে তদন্ত করে তা কোনো অভিযোগ গঠন ছাড়াই বন্ধ করে দেয়া হয়। ২০২০ সালে ব্রমির বিশপ পদ তিনি স্বেচ্ছায় ত্যাগ করেন। তবে এমিরেটাস বিশপ হিসেবে থেকেই যান। কিন্তু পোপ ফ্রাঁসিস তদন্তের নির্দেশ দেন। গত বছর এ বিষয়ে ২০০ পৃষ্ঠার রিপোর্ট ফাঁস হয়ে পড়ে গণমাধ্যমে। ফলে নতুন করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।

One thought on “অস্ট্রেলিয়ায় খ্রিস্টীয় ধর্মগুরুর বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *