অ্যান্ড্রয়েডের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ যত অ্যাপ

Share Now..

স্মার্টফোনের জন্য প্রতিনিয়ত তৈরি হচ্ছে নতুন সব সফটওয়্যার। এগুলো একদিকে যেমন  আমাদের জীবনকে সহজ করছে, তেমনি বাড়ছে সাইবার হামলা ও তথ্য চুরির মতো ঘটনা। সম্প্রতি অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের জন্য ক্ষতিকর ১৩টি অ্যাপের সন্ধান পেয়েছে মার্কিন কম্পিউটার সিকিউরিটি সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ম্যাকাফি। এসব অ্যাপ গুগল প্লেস্টোরেই রয়েছে।

ম্যালওয়্যার অ্যাপগুলো ব্যবহারকারীদের সামনে গুরুত্বপূর্ণ টুল হিসেবে ছদ্মবেশ ধারণ করে আছে বলে ম্যাকাফির অনুসন্ধানে উঠে এসেছে। এসব অ্যাপ ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই ডিভাইস থেকে ক্ষতিকর সার্ভারের সঙ্গে যোগাযোগ করতে ও তথ্য হাতিয়ে নিতে সক্ষম। সম্প্রতি গিজচায়নায় প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে ক্ষতিকর এসব অ্যাপের তথ্য উঠে এসেছে।

এসেনশিয়াল হরোস্কোপ ফর অ্যান্ড্রয়েড: হরোস্কোপ বা রাশিফল দেখার জন্য অ্যাপটি ব্যবহারকারীদের সামনে ছদ্মবেশে থাকে। কিন্তু আড়ালে এটি ব্যবহারকারীর অনুমতি ছাড়াই সংবেদনশীল তথ্য হাতিয়ে নেয়।

থ্রিডি স্কিন এডিটর ফর মাইনক্রাফট: এটি মূলত গেমারদের লক্ষ্য করে বানানো। এ  অ্যাপটিতে ক্ষতিকর কোড রয়েছে, যা ব্যবহারকারীর তথ্য চুরিতে সহায়তা করে থাকে।

লোগো মেকার প্রো: অ্যাপটি দিয়ে পেশাদার পর্যায়ের লোগো তৈরি করা যায়। এর পাশাপাশি ম্যালওয়্যার হিসেবে এটি ব্যবহারকারীদের তথ্য ক্ষতিকর সার্ভারে পাঠিয়ে থাকে।

অটো ক্লিক রিপিটার: যেসব কাজ প্রতিনিয়ত করতে হয় সেগুলোর জন্য অটো ক্লিক রিপিটার সহায়ক। কিন্তু অটোক্লিকের আড়ালে এটি তথ্য পাচার করে থাকে।

কাউন্ট ইজি ক্যালোরি ক্যালকুলেটর: স্বাস্থ্য সুরক্ষায় এ ধরনের অ্যাপ ব্যবহারকারীদের পছন্দের শীর্ষে রয়েছে। দিনে কী পরিমাণ ক্যালোরি শরীরে যুক্ত হচ্ছে ও বার্ন হচ্ছে এ ধরনের তথ্য অ্যাপে সংরক্ষণ করা হয়। এখানেও ব্যবহারকারীর সংবেদনশীল তথ্য গোপনে সংগ্রহ করা হয়।

সাউন্ড ভলিউম এক্সটেন্ডার: গান শোনা, গেম খেলা বা চলচ্চিত্র দেখার ক্ষেত্রে অনেকে ভলিউম বাড়ানোর জন্য এক্সটেন্ডার ব্যবহার করে। কিন্তু এটি মূলত ডিভাইসের নিরাপত্তা স্তরকে বিঘ্নিত করে এবং ম্যালওয়্যার আক্রমণের সুযোগ করে দেয়।

নিউমারোলজি পারসোনাল হরোস্কোপ অ্যান্ড নাম্বার প্রেডিকশনস: রাশিফল জানার জন্য আরো একটি ব্যবহূত অ্যাপ হচ্ছে এটি। এটিও ব্যবহারকারীদের তথ্য গোপনে সংগ্রহ করে থাকে।

স্টেপকিপার ইজি পেডোমিটার: ফিটনেস ট্র্যাকার হিসাবে বাজারজাত করা হয়েছে অ্যাপটি। হাঁটা, দৌড়ানোর সময় ও কত কিলোমিটার দূরত্ব অতিক্রম করা হয়েছে এসব তথ্যের আড়ালে ব্যবহারকারীর জন্য নিরাপত্তা হুমকি তৈরি করে থাকে।

ট্র্যাক ইয়োর স্লিপ: ঘুমের ধরন ট্র্যাক করার পরিবর্তে এ অ্যাপটি ব্যবহারকারীর তথ্য সংগ্রহ করে এবং গোপন সার্ভারে পাঠিয়ে থাকে। এর মাধ্যমে পরবর্তী সময়ে ভুয়া লেনদেন থেকে শুরু করে ব্ল্যাকমেইলের মতো ঘটনা রয়েছে।

সাউন্ড ভলিউম বুস্টার: সাউন্ড ভলিউম বুস্টার এক্সটেন্ডারের মতো একটি অ্যাপ। এটি সাউন্ড বাড়ানোর কাজের আড়ালে ডিভাইসের নিরাপত্তা ব্যবস্থা বিঘ্নিত করে, যা সাইবার হামলার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়।

ইউনিভার্সাল ক্যালকুলেটর: হিসাবসংক্রান্ত কাজের জন্য একটি ইউটিলিটি অ্যাপ হিসেবে পরিচিত ইউনিভার্সাল ক্যালকুলেটর। এটিও ব্যবহারকারীর অজান্তেই তথ্য সংগ্রহ করে থাকে।

ঝুঁকি থেকে বাঁচতে: অ্যান্ড্রয়েডের এসব ম্যালওয়্যার অ্যাপ এরইমধ্যে গুগল প্লেস্টোর থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। তবে কারো ডিভাইসে এখনো অ্যাপগুলো ইনস্টল করা থাকলে দ্রুত সেগুলো আনইনস্টল এবং সব পারমিশন মুছে ফেলার পরামর্শ দিয়েছেন বিশ্লেষকরা। এ অ্যাপগুলোর সঙ্গে যুক্ত প্রাথমিক ঝুঁকি হলো ব্যক্তিগত তথ্যে অননুমোদিত প্রবেশ, যার মাধ্যমে পরিচয় চুরি, আর্থিক ক্ষতিসহ অন্যান্য গুরুতর সমস্যা হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *