আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু করা ইসির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ
নির্বাচন ব্যবস্থা ও নির্বাচন কমিশনের (ইসি) ওপর মানুষের আস্থার চরম সংকট রয়েছে জানিয়ে তা উদ্ধারে বর্তমান কমিশনকে সাহসী পদক্ষেপ নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন দেশের গণমাধ্যমের সিনিয়র সাংবাদিকরা। আগামী জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু করাই বর্তমান ইসির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। নির্বাচন কমিশনের উদ্দেশে তারা বলেছেন, আপনারা সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজনের উদ্যোগ নিন।
বুধবার (৬ এপ্রিল) নির্বাচন ভবনে ইসির সঙ্গে সংলাপে এসব বক্তব্য উঠে আসে।
সংলাপের পর প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল বলেন, ‘নির্বাচনকালীন সরকারের বিষয়ে আমরা কিছুই বলব না। কারণ আমরা আইন ও সাংবিধানিক বিধিবিধান অনুযায়ী নির্বাচন পরিচালনা করব বলে শপথ নিয়েছি। এ বিষয়ে যে পরামর্শ এসেছে, সেগুলো রাজনৈতিক নেতৃত্বের ব্যাপার।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে ধারাবাহিক সংলাপের অংশ হিসেবে প্রিন্ট মিডিয়ার সম্পাদক ও সিনিয়র সাংবাদিকদের সঙ্গে এ সংলাপ অনুষ্ঠিত হলো। সিইসির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সংলাপে ২৩ জন সাংবাদিক অংশ নেন। যদিও সংলাপে ৩৪ জনকে আমন্ত্রণ জানানো হয়।
বিভাগ-জেলায় একেক দিন নির্বাচনের প্রস্তাব করে ইত্তেফাকের সম্পাদক তাসমিমা হোসেন বলেন, সারা দেশে এক দিনে নির্বাচনের পরিবর্তে বিভাগ বা জেলায় একেক দিন নির্বাচন করলে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী বা প্রশাসনের সক্ষমতা বাড়বে। এক সপ্তাহে একটি আবার অন্য সপ্তাহে আরেকটি বিভাগে নির্বাচন করা যেতে পারে।
তিনি বলেন, আপনাদের ওপর প্রেশার থাকবেই। আপনারা শতভাগ সুষ্ঠু ভোট করতে পারবেন তা আমি আশা করি না। বর্তমান বাস্তবতায় ৫০ ভাগ সুষ্ঠু করতে পারলেই স্যালুট জানাব। আগামী নির্বাচন ভালোমতো না হলে খুনোখুনি হবে।
সংলাপে দেওয়া বক্তব্যের বিষয়ে দ্য ডেইলি অবজারভার সম্পাদক ইকবাল সোবহান চৌধুরী বলেন, নির্বাচন কমিশনকে বলেছি, আপনারা সংবিধানের আওতায় দায়িত্ব ও শপথ গ্রহণ করেছেন। সেই দায়িত্ব পালনে কোথায় বাধা আসতে পারে, কোথায় দুর্বলতা আছে—তা অনুধাবনের ক্ষমতা আপনাদের আছে। সামনের নির্বাচনগুলো ভাল করলে আস্থা ফিরবে।
যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম বলেন, নির্বাচন কমিশনকে একটি আস্থা ও বিশ্বাসের জায়গায় প্রতিষ্ঠিত হতে হবে। আর তা হলো ভোটারদের আস্থা ও বিশ্বাস। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে তাদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারে সেই পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
দ্য নিউ এজ সম্পাদক নূরুল কবির বলেন, ১৯৭০ সালের একটি নির্বাচনের ফলাফল পাকিস্তানিরা মানেনি বলে স্বাধীনতার যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। আপনারা চাইলে নির্বাহী বিভাগকে আপনাদের কথা শুনতে বাধ্য করতে পারেন। সেটা করবেন কি না—সেটা আপনাদের সিদ্ধান্ত। মানুষের আস্থার সংকট আছে।
ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত বলেন, বিগত নির্বাচন কমিশনের ভাবমূর্তি শূন্যের কোঠায় চলে গিয়েছিল। বর্তমান কমিশনের দায়িত্ব হচ্ছে ভাবমূর্তি ফিরিয়ে আনা।
জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ইসির সামনে প্রথম চ্যালেঞ্জ হচ্ছে—জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সব দল যেন অংশগ্রহণ করে সেই উদ্যোগ নেওয়া। ইসি চাইলে ভালো নির্বাচন সম্ভব।