আজকে ওর লাশ বের হবে: জাবি ছাত্রলীগ নেতা

Share Now..


জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি) শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি হাসান মাহমুদ ফরিদের বিরুদ্ধে থাপ্পড় মেরে এক শিক্ষার্থীর কান ফাটিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ সময় আহত ওই শিক্ষার্থীকে তার বন্ধুরা হাসপাতালে নিতে চাইলে জাবি ছাত্রলীগের আরেক সহসভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফারুক ইমরান বলেন, ‘ও নাটক করতেছে। আজকে ওর লাশ বের হবে।’ মঙ্গলবার (২১ মার্চ) রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের মীর মশাররফ হোসেন হলের গেস্টরুমে (অতিথি কক্ষ) এ ঘটনা ঘটে।

এ সময় উপস্থিত ছিলো জাবি শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আবুল কালাম আজাদ, সামিন ইয়াসির শাফিন ও শাহ পরান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, উপ-ছাত্রবৃত্তি বিষয়ক সম্পাদক আলরাজি সরকার।

ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম সজীব আহমেদ। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৮-১৯ শিক্ষাবর্ষের (৪৮তম ব্যাচ) ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী।
অন্যদিকে অভিযুক্ত হাসান মাহমুদ ফরিদ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের (৪৪তম ব্যাচ) পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী।

জানা যায়, হলের সিনিয়র এক শিক্ষার্থীর অতিথির সঙ্গে জুনিয়র শিক্ষার্থীদের খারাপ ব্যবহার করাকে কেন্দ্র করে ‘গেস্টরুম’ ডাকা হয়। সেখানে একপর্যায়ে সজীব আহমেদের কানে এলোপাথাড়ি থাপ্পড় মারে অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা হাসান মাহমুদ ফরিদ। এতে ভুক্তভোগী সজিবের কান থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হলে রাতেই বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়া হয়। অবস্থার অবনতি হলে তাকে সাভারের এনাম মেডিক্যালে নিয়ে যাওয়া হয়। এদিকে ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য জুনিয়রদের হুমকি ও আহত সজীবের চিকিৎসায় বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, হাসান মাহমুদ ফরিদের থাপ্পড়ে সজীবের কান ফেটে রক্ত বের হয়। তখন সজীব কেঁদে কেঁদে অনুরোধ করেন, ‘ভাই আমাকে ছেড়ে দিন।’ এ সময় জাবি শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফারুক ইমরান বলে- ও (সজীব) নাটক করতেছে। আজকে ওর লাশ বের হবে।’ আহত সজীবকে তার বন্ধুরা বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল সেন্টারে নিয়ে যেতে চাইলে জাবি শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি আব্দুল্লাহ আল ফারুক ইমরান বাঁধা দেয়।

অভিযুক্ত হাসান মাহমুদ ফরিদ বলেন, গেস্টরুমে এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। কেউ অসুস্থ হয়েছে কিনা তাও জানিনা। কেউ অসুস্থ হলেও তাতে আমার কি করার আছে?

আরেক অভিযুক্ত আব্দুল্লাহ আল ফারুক ইমরান বলেন, রমজান মাস উপলক্ষে সাংগঠনিক দিকনির্দেশনা দেওয়ার জন্য গেস্টরুম করানো হয়। সজীব গেস্টরুমে এসে শারীরিক দুর্বলতার কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে। তবে চিকিৎসায় বাঁধা দেওয়ার অভিযোগ উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
মীর মশাররফ হোসেন হলের প্রাধ্যক্ষ এম ওবায়দুর রহমান বলেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলেছি। সে এখনও লিখিত অভিযোগ দেয়নি। আলোচনা ও তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *