আমানতকারীদের ওপর মূল্যস্ফীতির আঘাত
জমানো টাকা ব্যাংকে আমানত হিসেবে রেখে তার সুদ দিয়ে যারা সংসার চালান তারা পড়েছেন মহাবিপাকে। অস্বাভাবিক হারে মূল্যস্ফীতি বাড়ায় এবং সুদের হার কমে যাওয়ায় বছর শেষে দেখা যাচ্ছে তাদের ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা প্রকৃতপক্ষে কমে গেছে। এক বছর মেয়াদে ১ লাখ টাকা ব্যাংকে গচ্ছিত রেখে আমানতকারী যে পরিমাণ সুদ পাচ্ছেন;
নির্ধারিত সময় শেষে ঐ সুদসহ টাকা দিয়েও আগের সময়ের যে কোনো সেবা ও পণ্য কেনা অসম্ভব হয়ে দাঁড়াচ্ছে।অর্থাৎ সুদের টাকায় পণ্য ও সেবা কিনতে আগের চেয়ে বেশি টাকা খরচ করতে হচ্ছে তাদের। যারা শুধু সুদ আয়ের ওপর নির্ভরশীল, তারা সুদের হার কমে যাওয়া ও খরচ বেড়ে যাওয়ার কষ্ট ভালোভাবেই টের পাচ্ছেন। মূল্যস্ফীতি খেয়ে ফেলছে তাদের আমানতের সুদের টাকা।
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, মূল্যস্ফীতির চেয়ে আমানতের সুদের হার বেশি থাকা উচিত। নইলে সাধারণ আমানতকারীরা বিপাকে পড়েন। এখন ঠিক তা-ই হয়েছে। ব্যাংকগুলোকে সঞ্চয়ের ওপর সুদের হার বাড়ানোর ব্যবস্থা করতে হবে। এ জন্য ব্যাংকের খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনতে হবে। খেলাপি ঋণের ধাক্কা সামলিয়ে ব্যাংকের পক্ষে ওপরে ওঠা কঠিন হয়ে পড়েছে বলেও উল্লেখ করেন তারা।
কোভিড-১৯-এর সংক্রমণ দুই বছর পরে কমলেও তারপর শুরু হয়েছে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ। ফলে আন্তর্জাতিক অর্থনীতির সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পৃক্ততা আছে, এমন প্রায় সব ক্ষেত্রেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। বিশ্বব্যাপী বেড়েছে মূল্যস্ফীতির চাপ। বাংলাদেশও এই বাইরে থাকতে পারেনি।
বিশ্লেষকেরা বলেন, মূল্যস্ফীতি একধরনের কর। জিনিসপত্রের মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে পাল্লা দিয়ে মজুরি বা আয় না বাড়লে সীমিত আয়ের মানুষের ওপর চাপ বাড়ে। তাদের প্রকৃত ক্রয়ক্ষমতা কমে যায়। ফলে দারিদ্র্যসীমার কিছুটা ওপরে থাকা অনেক মানুষের আবার গরিব হওয়ার আশঙ্কা থাকে।