আমি কিছু করিনি যা করার সাহারা খাতুন করেছে: টুকু

Share Now..

সম্পদ অর্জনের বিষয়ে নতুন তথ্য দিয়েছেন ডিবি হেফাজতে রিমান্ডে থাকা সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু। তার কোনো সম্পদ অবৈধভাবে অজর্ন নয় বলে তিনি জানিয়েছেন ডিবি কর্মকর্তাদের।

শামসুল হক টুকুর কাছে প্রশ্ন ছিল, আপনি বাম রাজনীতির মাধ্যমে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন করেছেন। পরে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে যোগ দিয়ে বৈষম্যের মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের মালিক হয়েছেন কীভাবে?জবাবে টুকু বলেন, আমার কোনো অবৈধ সম্পদ নেই। আমার বাবার ব্যবসা ছিল। আমার যা সম্পদ সবই ওই ব্যবসার মাধ্যমে অর্জিত। তিনি বলেন, আমি যখন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলাম তখন মন্ত্রী ছিলেন অ্যাডভোকেট সাহারা খাতুন, যা করার তিনিই করেছেন। তখন ডিবি কর্মকর্তা বলেন, সাহারার তেমন কোনো লোকজন ছিল না। তখন যা লুটপাট হয়েছে তা আপনার লোকজনই করেছে। আপনার অজান্তে কিছু হয়নি।

এর আগে, রিমান্ডে সাবেক ডেপুটি স্পিকার টুকুকে প্রশ্ন করা হয়, ‘আপনারা কেন টাকার বিনিময়ে পুলিশ নিয়োগ দিলেন? জবাবে তিনি বলেন, টাকার বিনিময়ে পুলিশে নিয়োগের বিষয়টি আপনাদের কাছ থেকেই প্রথম শুনলাম। ডিবি কর্মকর্তা টুকুকে সুনির্দিষ্টভাবে বলেন, আপনি যখন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ছিলেন তখন অপনার ভাই এবং আপনার ছেলে সরাসরি টাকা নিয়েছেন। অন্য একজন ব্যক্তির কাছ থেকে আপনি নিজে সরাসরি টাকা নিয়েছেন।

অভিযোগ অস্বীকার করে সাবেক এই মন্ত্রী বলেন, আমি সব সময় আল্লাহর কাছে চেয়েছি, আমি যেন সংসদে যেতে পারি। আমার বয়স যখন ২৫ বছর তখন থেকেই এটা চাচ্ছিলাম। কিন্তু ৬০ বছর বয়সে আল্লাহ কবুল করেছেন। আমি মন্ত্রিত্ব চাইনি। জামায়াতের তৎকালীন আমির মতিউর রহমান নিজামীকে হারানোর (নির্বাচনে) কারণে ২০০৯ সালে শেখ হাসিনা নিজেই আমাকে মন্ত্রী হওয়ার অফার করেন।

উল্লেখ্য, ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ছাড়েন। এরপর থেকে প্রতিদিনই দেশের বিভিন্ন থানায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও মন্ত্রীদের নামে হত্যা মামলাসহ বিভিন্ন মামলা হচ্ছে। এরই মধ্যে গ্রেপ্তার হয়েছেন বেশ কয়েকজন আওয়ামী লীগ নেতা। আদালত গ্রেপ্তারকৃতদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডও দিয়েছেন। বর্তমানে তারা ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) হেফাজতে রয়েছেন। সেখানেই তারা আওয়ামী লীগের শাসন আমলের বিভিন্ন তথ্য দিচ্ছেন। এই মুহূর্তে যারা ডিবি হেফাজতে রিমান্ডে আছেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন, সাবেক ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু, সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগ উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হক, সাবেক তথ্য ও প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক, ন্যাশনাল টেলিকমিউনিকেশন মনিটরিং সেন্টারের (এনটিএমসি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল (অব.) জিয়াউল আহসান।

এছাড়াও সাবেক এমপি সাদেক খান, জাতীয় সংসদের সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ, ওয়ার্কার্স পার্টির রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, চট্টগ্রাম বন্দরের সাবেক চেয়ারম্যান রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মোহাম্মদ সোহায়েল, সাবেক ক্রীড়া উপমন্ত্রী আরিফ খান জয়, সাবেক সমাজকল্যাণমন্ত্রী ডা. দীপু মনি, সাবেক সিনিয়র সচিব শাহ কামাল, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তানভীর হাসান সৈকত প্রমুখ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *