ইঁদুরের উৎপাতে দিশেহারা শৈলকুপার গম চাষি

Share Now..

\ শৈলকুপা (ঝিনাইদহ) প্রতিনিধি \
ঝিনাইদহের শৈলকুপায় গমক্ষেতে ইঁদুরের আক্রমণে চাষিরা দিশাহারা হয়ে পড়েছেন। নানা পদ্ধতি অবলম্বনেও দমন হচ্ছে না ওইসব ক্ষেতের ইঁদুর। এতে করে লোকসানের মুখে পড়ছেন শতাধিক কৃষক। তারা জানান, উপজেলার কবিরপুর, বারইপাড়া, আউশিয়াসহ বিভিন্ন গ্রামের শতাধিক কৃষকের গম খেতে ইঁদুর আক্রমণ করেছে। এক মাস আগে গমের শীষ বের হওয়ার সময় থেকে একটি দুটি করে খেতে ইঁদুর গর্ত তৈরি করে। এখন শত শত গর্তের মাধ্যমে গম খেয়ে ও গাছ কেটে গর্তে নিয়ে যাচ্ছে ইঁদুর। গ্যাস ট্যাবলেট, বিষ প্রয়োগ করেও মিলছে না প্রতিকার। দিনে ও রাতের বেলায় গমের গাছ ও দানা কেটে নিয়ে গর্তে ঢুকে পড়ছে ইঁদুরের দল। কৃষি বিভাগ বলছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ২ হাজার ৮৬০ হেক্টর জমিতে গমের আবাদ হয়েছে। তবে ঠিক কী পরিমাণ জমিতে ইঁদুরের আক্রমণ হয়েছে তা জানাতে পারেনি উপজেলা কৃষি বিভাগ। ইঁদুরের কারণে এবারের মৌসুমে ১২ মেট্রিক টন গম নষ্ট হতে পারে বলে জানানো হয়েছে। কৃষকরা বলছেন, যে যা বলছে শুনছি, কিন্তু ইঁদুর দমন করতে পারছি না। খেতের মাঝখান থেকে কেটে কেটে নষ্ট করছে। অনেকের অর্ধেক গমও খেতে নেই। এক বিঘা জমিতে গম চাষে ১৪-১৫ হাজার টাকা খরচ হয়। আর ফলন ভালো হলে বাজার দাম ভালো পেলে ২৮-৩০ হাজার টাকা আয় হয়। কিন্তু এবার মনে হচ্ছে অর্ধেক টাকাও আসবে না।
হাবিবপুর গ্রামের গম চাষি জামাল উদ্দিন বলেন, আমাদের ক্ষেতের গমের দানা হাওয়ার আগমুহূর্তে ইঁদুর লেগেছিল। প্রথম থেকে ওষুধ দিলেও কোনো কাজ হয়নি। জমি থেকে গম কেটে নিয়ে ইঁদুর গর্ত ভরছে। ইঁদুরের কারণে আমাদের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। কৃষক বাচ্চু হোসেন বলেন, সারা জমিতে এখন একই অবস্থা। ইঁদুর জমির গম কেটে নিয়ে তাদের গর্তে নিয়ে যাচ্ছে। আমার জমিতে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এছাড়া আশপাশের সবার এক অবস্থা। আশরাফুল নামের আরেক কৃষক বলেন, কৃষকদের অবস্থা খুব খারাপ। এমন পরিমাণ ইঁদুর লেগেছে অনেক ওষুধ দিয়েও কাজ হচ্ছে না। যে যা দিতে বলছে সবকিছুই দিয়েছি তাতেও কিছু হচ্ছে না। সবকিছুর দাম বেড়েছে কষ্ট করে গমের আবাদ করেছিলাম কিন্তু ইঁদুরের জন্য চাষি শেষ। খেতের এ অবস্থা দেখে কষ্টের জন্য আমরা এখন আর মাঠে আসি না। এ বছর গমের দানা ভালো হয়েছে তবে ইঁদুরের যন্ত্রণায় গম জমিতে থাকছে না। শৈলকুপা অতিরিক্ত কৃষি কর্মকর্তা মো. আবুল হাসনাত বলেন, যেসব জমিতে ইঁদুরের আক্রমণ হচ্ছে, সেই জমিতে গ্যাস ট্যাবলেট, গর্তে পানি দেওয়াসহ কীটনাশক ব্যবহারের পরামর্শ দিচ্ছি। ৮৫ শতাংশ গম মাঠে পরিপক্বভাবে রয়েছে। কৃষকদের আমরা কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে পরামর্শ দিচ্ছি। পরিপক্ব গমগুলো যেন দ্রæত কর্তন করে নেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *