ইউক্রেনকে যৌথভাবে গোলাবারুদ দেবে ইইউ

Share Now..


ইউরোপীয় ইউনিয়ন যৌথভাবে ইউক্রেনকে গোলাবারুদ সরবরাহের উদ্যোগ চূড়ান্ত করছে। চীনা প্রেসিডেন্টের রাশিয়া সফরের সময় পশ্চিমা বিশ্ব ইউক্রেনের প্রতি আরও জোরালো সংহতি দেখাচ্ছে।রাশিয়ার হামলা মোকাবিলা করতে ইউক্রেনের সামরিক সরঞ্জাম, অস্ত্রও গোলাবারুদের লাগাতার চাহিদা ও দাবি মেটাতে মিত্র দেশগুলি হিমসিম খাচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে নীতিগত দ্বন্দ্ব কাজ করলেও বাকিগুলোর ক্ষেত্রে উৎপাদন, সরবরাহ ও অর্থায়নের সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সেই সমস্যা কিছুটা হলেও দূর করতে ইউরোপীয় ইউনিয়ন ২০০ কোটি ইউরো অংকের যৌথ তহবিল গড়ে ইউক্রেনের জন্য গোলাবারুদ কেনা ও সরবরাহের উদ্যোগ নিচ্ছে। রোববার রাষ্ট্রদূতেরা সেই পরিকল্পনার রূপরেখা প্রস্তুত করার পর সোমবার ২৭ সদস্যের রাষ্ট্রজোটের পররাষ্ট্র ও প্রতিরক্ষামন্ত্রীরা ব্রাসেলসে মিলিত হয়ে সেই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করতে চলেছেন।রাশিয়ার সেনাবাহিনীর মোকাবিলা করতে মাসে সাড়ে তিন লাখ গোলাবারুদের প্রয়োজন বলে ইউক্রেন ইইউ-কে জানিয়েছে। বর্তমানে সেই ক্ষমতা সীমিত থাকায় সে দেশকে ভেবেচিন্তে গোলাবারুদ ব্যবহার করতে হচ্ছে। তাছাড়া হারানো জমি ফিরে পেতে পালটা অভিযানের প্রস্তুতির ক্ষেত্রেও সমস্যা হচ্ছে। সেই ডাকে সাড়া দিয়ে ইইউ সবার আগে সদস্য দেশগুলোর নিজস্ব গোলাবারুদের ভাণ্ডার থেকে যতটা সম্ভব ইউক্রেনকে দ্রুত সরবরাহ করতে চায়। সেইসঙ্গে উৎপাদন বাড়ানোর লক্ষ্যে প্রতিরক্ষা শিল্পখাতকে নানাভাবে উৎসাহ দেবার পরিকল্পনাও করছেন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রীরা। যৌথভাবে কামানের গোলার অর্ডার দিয়ে সরাসরি উৎপাদন বাড়ানোর

পদক্ষেপও নিচ্ছেন তারা। উল্লেখ্য এর আগে ইউরোপীয় ইউনিয়ন কখনো এমন মাত্রায় যৌথভাবে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম কেনে নি।

এদিকে ইউরোপ তথা পশ্চিমা বিশ্ব ইউক্রেনের প্রতি সংহতি দেখিয়ে চললেও রাশিয়া মোটেই পুরোপুরি কোণঠাসা হয়ে পড়ছে না। সোমবার চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং মস্কো সফরে গিয়ে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের পাশে দাঁড়িয়েছেন। পুতিনের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক ফৌজদারি আদালত সমন জারি করার পর প্রথম রাষ্ট্রনেতা হিসেবে শি তার করমর্দন করছেন। সফরের প্রাক্কালে চীনের প্রেসিডেন্ট এক লেখনিতে ইউক্রেনের জন্য শান্তি পরিকল্পনার উল্লেখ করেছেন। তবে তিনি স্বীকার করেন যে সমাধানসূত্র মোটেই সহজ হবে না। পুতিনও এক চীনা সংবাদপত্রে শি জিংপিং-কে ‘পুরানো ভালো বন্ধু’ হিসেবে উল্লেখ করে চীনের মধ্যস্থতার উদ্যোগকে স্বাগত জানান। তবে প্রকাশ্যে ইউক্রেনের উপর রাশিয়ার হামলার নিন্দা না করায় অ্যামেরিকা তথা পশ্চিমা বিশ্ব চীনের মতলব সম্পর্কে গভীর সংশয় প্রকাশ করে আসছে। নিষেধাজ্ঞার বদলে চীন যেভাবে রাশিয়ার সহায়তা করে আসছে, তার আলোকে ইউক্রেন সংকটে বেইজিং নিরপেক্ষ মধ্যস্থতাকারী হতে পারে না বলে ধারণা চালু আছে।

ইউক্রেনের পশ্চিমে বাখমুত শহরে রাশিয়ার সঙ্গে লাগাতার সংঘর্ষ চালু আছে। গোটা যুদ্ধজুড়ে অন্য কোনো জায়গায় দুই পক্ষের সংঘাত এমন মারাত্মক আকার ধারণ করে নি। রাশিয়ার পক্ষে সেই সংঘাতের নেতৃত্ব দিচ্ছে ভাড়াটে ভাগনার বাহিনী। ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির ফলে সেই গোষ্ঠী মে মাসের মধ্যে বাড়তি ৩০,০০০ যোদ্ধা নিয়োগের পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে। ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর সূত্র অনুযায়ী ভাগনার গ্রুপের প্রায় ৩০ হাজার সদস্য হয় হতাহত হয়েছে বা পালিয়ে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *