ইচ্ছাকৃতভাবে লাগানো আগুনে পুড়ছে লস অ্যাঞ্জেলেস?

Share Now..

যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস অ্যাঞ্জেলেসে ছড়িয়ে পড়েছে অনিয়ন্ত্রিত আগুন। ভয়ংকর দাবানলে শহরের পৃথক স্থানে দাবানলে এখন পর্যন্ত কমপক্ষে ১০ হাজারের বেশি বাড়িঘর ও অন্যান্য অবকাঠামো পুড়ে গেছে। সেই সঙ্গে প্রাণ গেছে ১০ জনের।

গত মঙ্গলবার রাতে ইটন এলাকা থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এরপর আরও কয়েকটি এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে এটি নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। আগুনের সূত্রপাত হওয়া এলাকা ইটনে পুড়েছে ১৩ হাজার একর জমি। এছাড়া প্যালিসেডে পুড়েছে ১৯ হাজার একর জমি। তবে প্রাথমিকভাবে আগুন কীভাবে লাগলো, তা নিয়ে ধোঁয়াশা দেখা দিয়েছে। ন্যাশনাল ফায়ার প্রোটেকশন অ্যাসোসিয়েশনের মতে, যুক্তরাষ্ট্রে আগুনের সবচেয়ে সবচেয়ে সাধারণ উত্স হলো বজ্রপাত। তবে তদন্তকারীরা এবারের আগুনের পেছনে বজ্রপাতকে কারণ মানতে নারাজ। এপি বলছে, পূর্ব লস অ্যাঞ্জেলেসের ইটন, প্যালিসেড কিংবা আশেপাশের ভূখণ্ডে বজ্রপাতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি।

দেশটিতে দাবানলের আরও দুটি সাধারণ কারণের মধ্যে রয়েছে, ইচ্ছাকৃতভাবে আগুন লাগানো এবং ইউটিলিটি লাইন থেকে ছড়িয়ে পড়া আগুন। তবে এখন পর্যন্ত ইচ্ছাকৃতভাবে অগ্নিসংযোগের কোনো আনুষ্ঠানিক ইঙ্গিত পাওয়া যায়নি বলে জানিয়েছে এপি। সেই সঙ্গে ইউটিলিটি লাইনগুলোকেও কারণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয়নি।

১৯৯১ সালে ওকল্যান্ড হিলসের অগ্নিকাণ্ডসহ ক্যালিফোর্নিয়ায় বড় ধরনের অগ্নিকাণ্ডের তদন্ত করেছেন ফ্লোরিডার সায়েন্টিফিক ফায়ার অ্যানালাইসিসের মালিক জন লেন্টিনি। তিনি বলেন, আগুনের আকার এবং পরিধির কারণ সবসময় একই থাকে। একসময় ছোট অগ্নিকাণ্ড, পরে পড় আকার ধারণ।

২০১৭ সালের ক্যালিফোর্নিয়ার ‘থমাস ফায়ার’ নামক দাবানলে রাজ্যের ইতিহাসে বৃহত্তম ক্ষতি হয়েছিল। তদন্তে দেখা গিয়েছিল, দক্ষিণ ক্যালিফোর্নিয়া এডিসনের বিদ্যুৎ লাইন থেকে ছড়িয়ে পড়েছিল এই আগুন। উচ্চ বাতাসের সময় কোনো কিছু বিদ্যুৎ লাইনের সংস্পর্শে এসেছিল। সেই দাবানলে ১১৪০ বর্গ কিলোমিটারেরও বেশি পুড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ধ্বংসাবশেষ পোড়ানো এবং আতশবাজিগুলিও দাবানলের উতপত্তির সাধারণ কারণ। কেননা অতীতে দুর্ঘটনাসহ অসংখ্য সূত্র থেকেও আগুন লাগার নজির রয়েছে।

২০২১ সালে এক দম্পতির বাসা থেকে বড় আগুনের সূত্রপাত হয়েছিল, প্রায় ৯০ বর্গ কিলোমিটার ভূখণ্ড পুড়ে যায়। পাঁচটি বাড়ি এবং আরও ১৫টি ভবন ধ্বংস হয়ে যায়। চার্লি মর্টন নামে একজন দমকলকর্মীর প্রাণও গিয়েছিল।

এদিকে, ইটন এবং প্যালিসেডসের দাবানল নিয়ন্ত্রণহীনভাবে এখনও জ্বলে যাচ্ছে। বাতাস স্তব্ধ হলেও আগুনের লেলিহান শিখা মাইলের পর মাইল শুকনো ভূদৃশ্যের মধ্য দিয়ে চলে গেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *