ইন্দোনেশিয়ায় ভয়াবহ বন্যা, ঘরছাড়া হাজারো মানুষ
প্রবল বর্ষণের ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় ডুবে গেছে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী জাকার্তার বিস্তীর্ণ এলাকা। বিপর্যয়ের মুখে ঘরবাড়ি ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ের দিকে ছুটছেন হাজারো মানুষ।
সোমবার (৩ মার্চ) থেকে শুরু হওয়া প্রবল বৃষ্টিপাত মঙ্গলবারও অব্যাহত ছিল। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই সময়ে ৩ মিটার (প্রায় ১০ ফুট) সমপরিমাণ বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। দেশটির দুর্যোগ মোকাবিলা দপ্তরের এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, টানা বর্ষণের কারণে জাকার্তার প্রধান সড়ক, এক হাজারেরও বেশি ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান পানিতে তলিয়ে গেছে। এর মধ্যে হাসপাতাল, সরকারি দপ্তরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাও রয়েছে।
বন্যার কারণে বিদ্যুৎ সংকট দেখা দিয়েছে অনেক এলাকায়। স্থানীয় গণমাধ্যমে প্রকাশিত ফুটেজে দেখা গেছে, জাকার্তার পূর্বাঞ্চলীয় উপশহর বেকাসির হাসপাতালসহ বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভবন পানিতে নিমজ্জিত। পরিস্থিতি মোকাবিলায় জাকার্তার গভর্নর প্রামোনো আনুং দ্বিতীয় সর্বোচ্চ বিপদ সংকেত জারি করেছেন। একইসঙ্গে, যেসব এলাকায় পানি জমে আছে, সেখানে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের জন্য পাম্প মেশিন ব্যবহারের নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার থেকেই বন্যাকবলিত এলাকাগুলোতে উদ্ধার কার্যক্রম শুরু হয়েছে। দুর্যোগ মোকাবিলা কর্মীরা রাবারের নৌকা ব্যবহার করে পানিবন্দি মানুষদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিচ্ছেন।
ইন্দোনেশিয়ার আবহাওয়া দফতর পূর্বাভাস দিয়েছে, আগামী ১১ মার্চ পর্যন্ত থেমে থেমে কিংবা লাগাতার ভারী বর্ষণ অব্যাহত থাকবে। এতে বন্যার অবস্থা আরও জটিল হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ইন্দোনেশিয়ার সমাজকল্যাণমন্ত্রী সাইফুল্লাহ ইউসুফ জানিয়েছেন, স্কুল, মসজিদ ও চার্চগুলোকে অস্থায়ী আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। আশ্রয় নেওয়া মানুষদের জন্য খাবার, পোশাক ও ওষুধ সরবরাহ করছে সরকার।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালেও জাকার্তায় ভয়াবহ বন্যা হয়েছিল, যেখানে কয়েক ডজন মানুষ প্রাণ হারান এবং হাজার হাজার মানুষ গৃহহীন হয়ে পড়েন। এবারের বন্যা সেই স্মৃতি আবারও উসকে দিয়েছে।