ইবির মেগা প্রকল্পে আর্থিক অনিয়ম, শাস্তি নির্ধারণে ৩ সদস্যের কমিটি
\ ইবি প্রতিনিধি \
ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) উন্নয়ন প্রকল্পের (৩য় পর্যায়) সর্বশেষ বিল প্রদানের ক্ষেত্রে আর্থিক গড়মিলের সত্যতা পাওয়া গেছে। পরে এ ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে কি ধরনের শাস্তি নির্ধারণ করা হবে তা নির্ণয় করতে একটি কমিটি গঠন করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কিউ এম মাহবুবকে আহবায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়েছে। শনিবার (২৫ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এইচ এম আলী হাসান স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এই তথ্য জানানো হয়। এছাড়া ওই প্রজ্ঞাপনে তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটিকে আগামী এক মাসের মধ্যে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার জন্য বলা হয়েছে। কমিটিতে সদস্য হিসেবে আছেন ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রেজওয়ানুল ইসলাম এবং সদস্য-সচিব বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনিচুর রহমান। প্রজ্ঞাপন ও ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ মে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৬৩ তম সিন্ডিকেট সভায় সংশ্লিষ্ট ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। তবে ওই প্রতিবেদনে ‘ইসলামিক ইউনিভার্সিটি এমপ্লয়ি এফিসিয়েন্সি অ্যান্ড ডিসিপ্লিন রুলস’ এর আলোকে অভিযুক্তদের বিষয়ে কি ধরনের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে তা নির্দিষ্ট করা ছিলো না। ফলে সংশ্লিষ্টদের শাস্তির বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেনি সিন্ডিকেট। তবে তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পর্যালোচনা ও সুপারিশ অনুযায়ী শাস্তির ধারা নির্ণয় ও নির্দিষ্ট করার জন্য সভায় সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এদিকে, গত বছরের নভেম্বরে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে ৫৩৭ কোটি টাকার মেগাপ্রকল্পের কাজের সোয়া ৬ কোটি টাকার ভুয়া বিল উত্তোলন ও ভাগ-বাটোয়ারার অভিযোগ উঠে। এ নিয়ে বিশ্ববিদ্যারয় প্রশাসন, শিক্ষক সমিতি, শাপলা ফোরামসহ বিভিন্ন দফতরে এ সংক্রান্ত একটি বেনামি চিঠি আসে। সেই চিঠিতে আর্থিক সুবিধাভোগী ও সহযোগিতাকারী হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকল্প পরিচালক, সাবেক প্রধান প্রকৌশলী, নির্বাহী প্রকৌশলী, তত্ত¡াবধায়ক প্রকৌশলী, শাখা ছাত্রলীগের সাবেক ও বর্তমানে পদে রয়েছেন এমন ৬ জন নেতাকর্মীর নাম রয়েছে বলে জানা যায়। এই অভিযোগ তদন্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ আবদুস সালাম গত ১২ ডিসেম্বর একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। কমিটিকে এক মাসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে বলা হলেও তিন মাস পর গত ৯ মার্চ তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেয় এই কমিটি। তিন পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনে অভিযুক্ত ঠিকাদারসহ সংশ্লিষ্টদের অনিয়মের বিষয় উঠে আসে। এছাড়া ওই প্রতিবেদনে আর্থিক অনিয়মেরও৷ সত্যতা পাওয়া যায়। গত ১৯ মে ২৬৩ তম সিন্ডিকেট সভায় এই প্রতিবেদন খোলা হয়। এদিকে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও বেনামি ওই চিঠির মাধ্যমে একই অভিযোগ দায়ের করা হয়। এর পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে তদন্ত শুরু করে দুদক। দুদকের তদন্ত প্রতিবেদনেও এই আর্থিক অনিয়মের সত্যতা পাওয়া গেছে বলে জানা যায়।