ইসরায়েলিরা ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে: ডেভিড ক্যামেরন

Share Now..

ইরানের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার স্পষ্টত সিদ্ধান্ত নিয়েছে ইসরায়েল। ব্রিটেনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন বুধবার ইসরায়েল সফরের সময় এ কথা বলেছেন। খবর রয়টার্সের।

জেরুজালেম সফরের শুরুতে ক্যামেরন সাংবাদিকদের বলেন, ‘এটা পরিষ্কার যে ইসরায়েলিরা কাজ করার সিদ্ধান্ত নিচ্ছে। আমরা আশা করি তারা এটি এমনভাবে করবে যাতে যতটা সম্ভব উত্তেজনা নিয়ন্ত্রণে থাকে।’

শনিবার রাতে ইরানের হামলার পর বিশ্ব নেতারা মধ্যপ্রাচ্যে সংঘাত ছড়িয়ে পড়া ঠেকানোর চেষ্টা করছে। কয়েক দশকের প্রক্সি যুদ্ধের পর প্রথমবার ইসরায়েলি ভূখণ্ডে সরাসরি হামলা চালিয়েছে ইরান। হামলায় তিন শতাধিক ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবহার করেছে তেহরান।

গত ১ এপ্রিল সিরিয়ায় ইরানি কনস্যুলেটে বিমান হামলা চালায় ইসরায়েল। এতে দুই জেনারেলসহ বেশ কয়েকজন ইরানি কর্মকর্তা নিহত হয়। সেই হামলার প্রতিশোধ নিতেই ১৩ এপ্রিল পাল্টা হামলা চালানোর কথা জানিয়েছে ইরান।

ইসরায়েল ও ইরান-সমর্থিত ফিলিস্তিনি গোষ্ঠী হামাসের মধ্যে যুদ্ধ সাত মাসে গড়িয়েছে। এতে মধ্যপ্রাচ্য এখন অস্থিতিশীলতা বিরাজমান। এর মধ্যে ইরানের জড়িয়ে পড়ায় নতুন করে সংঘাত বৃদ্ধির আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। কূটনীতিকরা ইসরায়েল ও ইরানের সরাসরি যুদ্ধ এড়ানোর উপায় খুঁজছেন।

ইরানের হামলায় ব্যবহৃত বেশিরভাগ ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্রের বেশিরভাগই ইসরায়েল ও তার মিত্ররা ঠেকিয়েছে। হামলায় কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে ইসরায়েল বলেছে যে তাদের প্রতিরোধকারীদের বিশ্বাসযোগ্যতা রক্ষা করতে অবশ্যই প্রতিশোধ নিতে হবে।

ইরান বলেছে, তারা আপাতত কোনো হামলার কথা ভাবছে না। কিন্তু যদি ইসরায়েল বাড়াবাড়ি করে তবে তারা জবাব দেবে।

ওয়াশিংটন এবং অন্যান্য পশ্চিমা সরকার আশা করছে ইরানের বিরুদ্ধে নতুন অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা ইসরায়েলকে তার প্রতিশোধ নেওয়ার সুযোগ দেবে। ক্যামেরন বলেন, ব্রিটেন ইরানের বিরুদ্ধে সমন্বিত নিষেধাজ্ঞা দেখতে চায়। এ নিয়ে জি৭ নেতারা বৈঠক করছে।

ক্যামেরন বলেন, জি৭ এর পক্ষ থেকে তাদেরকে একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া দরকার।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুর যুদ্ধ মন্ত্রিসভার একটি বৈঠকে ইরানের প্রতি তার প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। আলোচনায় ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার পর ঘটে যাওয়া সার্বিক বিষয় অন্তর্ভুক্ত থাকবে।

ওয়াশিংটন আগামী দিনে ইরানের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন কর্মসূচিকে লক্ষ্য করে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপের পরিকল্পনা করছে। আশা করছে তার মিত্ররাও একই পথে হাঁটবে। মঙ্গলবার জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জ্যাক সুলিভান এক বিবৃতিতে এ কথা বলেছেন।

এর আগে, ট্রেজারি সেক্রেটারি জ্যানেট ইয়েলেন বলেছিলেন, যুক্তরাষ্ট্র নিষেধাজ্ঞা আরোপ করবে এবং মিত্রদের নিয়েই কাজ করবে যাতে ইরানের ‘ক্ষতিকর ও অস্থিতিশীল কার্যকলাপ’ থামানো যায়।

ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতির প্রধান জোসেপ বোরেল, ইইউ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের জরুরি ভিডিও কনফারেন্সের পর ব্রাসেলসে বক্তৃতায় বলেছেন, কিছু সদস্য রাষ্ট্র ইরানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বাড়ানোর কথা বলেছে।

বোরেল বলেছিলেন, প্রস্তাবে রাশিয়াকে ইরানি ড্রোন দেওয়ার মতো কাজে নিষেধাজ্ঞা আরোপ অন্তর্ভুক্ত থাকবে। পাশাপাশি মধ্যপ্রাচ্যে ইরানের প্রক্সিরা যেন সরবরাহ না পায় সেটিকেও অন্তর্ভুক্ত করবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *