ঈদের আগে রেমিট্যান্সের ঢল
পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স প্রবাহ আগের চেয়ে বেড়েছে। সদ্য শেষ হওয়া এপ্রিল মাসের প্রথম ২৭ দিনেই ১৮২ কোটি ২০ লাখ (১.৮২ বিলিয়ন) ডলার পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে (প্রতি ডলার ৮৬ টাকা ৪৫ পয়সা) টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ১৫ হাজার ৭৫১ কোটি টাকা। এই হিসাবে ঈদের আগে এই ২৭ দিনে প্রতিদিন প্রায় ৬০০ কোটি টাকা দেশে পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।
সাধারণত প্রতি বছর ঈদের সময় দেশে থাকা আত্মীয়স্বজনের কাছে বেশি রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। গত ৩ এপ্রিল থেকে রোজা শুরু হয়েছে। সে হিসাবে ২ অথবা ৩ মে ঈদ উদযাপিত হবে দেশে। ঈদেও বন্ধের কারণে এপ্রিলের পুরো মাসের রেমিট্যান্সের তথ্য ঈদের পর ছাড়া পাওয়া যাবে না। তবে এই ২৭ দিনে দেশে যে পরিমাণ রেমিট্যান্স এসেছে, সেই হারে এলে এপ্রিল শেষে মোট রেমিট্যান্সের পরিমাণ ২০০ কোটি ডলার বা ২ বিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন ব্যাংকাররা। এর আগে গত বছরের মে মাসে ২ বিলিয়ন ডলারের বেশি (২.১৭ বিলিয়ন) রেমিট্যান্স পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা।
বাংলাদেশ ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘ঈদের বাকি এই কয় দিনে আরো বেশি রেমিট্যান্স আসবে বলে আশা করা হচ্ছে। সে হিসাবে এপ্রিলে রেমিট্যান্সের পরিমাণ সোয়া ২ বিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকতে পারে।’ সর্বশেষ গত মার্চে ১৮৬ কোটি ডলারের রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা, যা ছিল গত আট মাসের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। টানা পাঁচ মাস কমার পর ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে বেড়েছিল অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ এই সূচক।কিন্তু ফেব্রুয়ারিতে ফের হোঁচট খায়। ঐ মাসে ১৪৯ কোটি ৬০ লাখ ডলার পাঠিয়েছিলেন প্রবাসীরা। তার আগের দুই মাস ডিসেম্বর ও জানুয়ারিতে এসেছিল যথাক্রমে ১৬৩ কোটি ৬ লাখ ও ১৭০ কোটি ৪৫ লাখ ডলার। ফেব্রুয়ারি মাস ২৮ দিন, অর্থাৎ বছরের সবচেয়ে ছোট মাস হওয়ায় ঐ মাসে রেমিট্যান্সের প্রবাহ কমেছিল বলে জানায় ব্যাংকগুলো। তবে মার্চে এই সূচকে ফের গতি ফিরে আসে। ঐ মাসে ফেব্রুয়ারির চেয়ে ২৪ দশমিক ৪৫ শতাংশ বেশি রেমিট্যান্স দেশে আসে।২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনার প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর রেমিট্যান্সের প্রবাহেও তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ে। ঐ বছরের এপ্রিলে মাত্র ১০৯ কোটি ২৯ লাখ ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা। এরপর থেকে অবশ্য মহামারির মধ্যেও ২০২০-২১ অর্থবছরের পুরোটা সময়ে (২০২০ সালের জুলাই থেকে ২০২১ সালের জুন) রেমিট্যান্সের উল্লম্ফন দেখা যায়। ঐ অর্থবছরে অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ২ হাজার ৪৭৮ কোটি ডলার রেমিট্যান্স পাঠান প্রবাসীরা, যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ৩৬ দশমিক ১০ শতাংশ বেশি।