এইচপি ক্যাম্পকে এগিয়ে রাখলেন জাকির
কোনো আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট এলেই জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা ব্যস্ত হয়ে ওঠেন। এর বাইরে ঘরোয়া দুই-একটি যে টুর্নামেন্ট রয়েছে, সেগুলোতে খুব বেশি নিজেদের ঝালিয়ে নেওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠে না। সেই জায়গা থেকে ২৫ জন ক্রিকেটারকে নিয়ে হাই পারফরম্যান্স (এইচপি) ক্যাম্প শুরু করেছে বিসিবি।
জাতীয় দলে থাকা ক্রিকেটার যারা খেলার বাইরে রয়েছেন তাদেরসহ আরো তরুণদের নিয়ে এই আয়োজন করা হয়েছে, যেটি চলবে তিন মাস ধরে। এই ক্যাম্পকে জাতীয় দল থেকে এগিয়ে রেখেছেন জাকির হাসান। অন্যদিকে মাহমুদুল হাসান জয় সেটিকে দ্বিতীয় জাতীয় দল হিসেবেই দেখছেন।
গতকাল বিসিবির সাক্ষাত্কার জাকির বলেছেন, ‘আমাদের কাছে এই ক্যাম্প খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের যে সময়টাতে কোনো খেলা থাকে না তখন এই ধরনের আয়োজন করা হয়েছে। সামনে নতুন মৌসুম শুরু হবে। তার আগে একটা ছুটি পেলে ছোট ছোট যে ভুলগুলো রয়েছে সেখানে কাজ করা যায়। আর এটা একটা বড় আয়োজন, এক-দুই মাসের। তাতে সামনের টুর্নামেন্ট বা সিরিজ নিয়ে অনেক পরিকল্পনা করে এগোনো যায়।’
এর আগে জাতীয় দলের অবসর সময়ে ক্রিকেটারদের ব্যক্তিগতভাবে অনুশীলন করতে দেখা গেছে। কিন্তু এখন সকলে দলীয়ভাবে অনুশীলনের সুযোগ পেয়েছেন। এই বিষয়ে জাকির বলেছেন, ‘একা অনুশীলন করলে অনেক সময় সর্বোচ্চ ফলটা পাওয়া যায় না। কিন্তু দলীয়ভাবে যখন করা হয় তখন ভিন্ন ধরনের একটা আবহ তৈরি হয়। আমার কাছে মনে হয়, যখন সবাই মিলে অনুশীলন করা হয়, তখন যে পরিবেশটা তৈরি হয়, সেখানে নিজেকে এমনভাবে তৈরি করা সম্ভব হয় যে, সব ধরনের পরিস্থিতিতে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া যায়। আমাদের সবসময় প্রস্তুত থাকতে খুব সহায়তা করে।’
জাতীয় দল ও এইচপির অনুশীলন নিয়ে জাকির বলেছেন, ‘জাতীয় দলে যেভাবে কঠোর অনুশীলন হয়, সেটি এখানেও হচ্ছে। দুই জায়গাতেই সমানভাবে অনুশীলন হচ্ছে। আর এখানে আরও দীর্ঘ যাত্রা হচ্ছে। জাতীয় দলে কোনো সিরিজ বা টুর্নামেন্টের মধ্যে অনুশীলন করেছি। ঐখানে এরকম সারাদিন করার মতো সময় থাকে না। কিংবা ক্লান্তির বিষয় থাকে, তখন বিশ্রামের একটা বিষয় চলে আসে, ম্যাচ প্রস্তুতির বিষয়ও থাকে। আর এখানে সারা দিন বেশি বেশি করে কাজ করতে পারছি। তাতে আরো বেশি করে এগোতে পারব।’
জাকিরের মতো মাহমুদুল হাসান জয়ও এইচপির ক্যাম্প নিয়ে ইতিবাচক কথা বলেছেন। জয় বলেছেন, ‘এটা আমাদের জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যারা টেস্ট ক্রিকেটে খেলছি কিংবা সাদা বলে জাতীয় দলে খেলছে তাদের জন্য প্রস্তুত থাকাটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই জায়গা থেকে বিসিবি খুব ভালো একটা উদ্যোগ নিয়েছে। এরকম একটা ক্যাম্পের আয়োজন করায় আমরা খুব খুশি যতটুকু সম্ভব এই সুযোগ কাজে লাগানোর চেষ্টা করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘এখানে দেশের সেরা কোচ রয়েছেন, সিনিয়র ক্রিকেটাররা রয়েছেন। সেজন্য এটিকে দ্বিতীয় জাতীয় দল বলব এবং যে সুযোগ-সুবিধা আমরা পাচ্ছি সেটি জাতীয় দলের মতোই। জাতীয় দলের খেলা অনেক বেশি। আমরা যারা লাল বলের ক্রিকেট খেলছি, তাদের জন্য দুই মাসের একটা বিরতি রয়েছে। সামনে পাকিস্তান সিরিজ রয়েছে। আমরা যদি এই সময়টা কাজে লাগাতে পারি তাহলে সেটি পাকিস্তান সিরিজে কাজে দেবে।’
জয়কে সাধারণত সাদা পোশাকেই তাকে বেশি দেখা যায়। বর্তমানে ইনজুরিতে ভুগছেন টপ অর্ডারের এই ব্যাটার। সে বিষয়ে বলেন, ‘আমি ইনজুরিতে রয়েছি। আর এই ক্যাম্পে থাকার কারণে একজন ফিজিও নিয়ে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। সুতরাং আমি সেরে ওঠার কাজটি ভালোভাবে করতে পারছি। তারপরে এই ক্যাম্পের সুবিধা আদায় করে নেওয়ার চেষ্টা করব।’ এবারের এইচপি ক্যাম্প শুরু হয়েছে গেল ২০ মে। প্রথম পর্যায়ের কার্যক্রম শেষ হবে আগামী ১৪ জুন। এরপরে ২১ জুন থেকে ১৮ আগস্ট পর্যন্ত বগুড়া ও রাজশাহীতে দ্বিতীয় পর্যায়ের কার্যক্রম চলবে। তৃতীয় ধাপে ২৬ আগস্ট থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর কয়েকটি ম্যাচের মধ্য দিয়ে শেষ হবে এবারের ক্যাম্প।