‘এমন প্রেশারের ম্যাচ আমি আর খেলিনি’

Share Now..

গেল কয়েক বছর ধরে ক্রিকেটে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা যে ফরম্যাটেই মুখোমুখি হোক না কেন, সেই ম্যাচটা রোমাঞ্চ ছড়াবেই। গেল বছর অনুষ্ঠিত হওয়া ওয়ানডে ফরম্যাটের এশিয়া কাপ কিংবা বিশ্বকাপ-পরবর্তীতে চলতি বছরে সিলেটে ও চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত হওয়া সিরিজ সবখানেই ছিল উত্তেজনা। তাই আগে থেকেই ধারণা করা হচ্ছিল, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেও দেখা যাবে টানটান উত্তেজনার ম্যাচ। হয়েছেও তাই—লো স্কোরিং ম্যাচ হলেও লড়াইটা হয়েছে সমানে সমান। দুই দলের বোলাররাই দেখিয়েছেন নিজেদের দক্ষতা। 

তবে শেষ অবধি হৃদয়, লিটন ও অভিজ্ঞ মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ব্যাটে ২ উইকেটে জয় তুলে নেন টাইগাররা। তাতে চলমান নবম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ভালো শুরু পেল বাংলাদেশ। যদিও ম্যাচ শেষে লাল-সবুজদের অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত বলেছেন, এমন প্রেশারের ম্যাচ তিনি আগে খেলেননি।

ডালাসের গ্র্যান্ড প্রেইরি ক্রিকেট স্টেডিয়ামে গতকাল বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৬টায় চলমান নবম টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে নিজেদের প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশ মুখোমুখি হয় শ্রীলঙ্কার। এই ম্যাচে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নেমে ভালো শুরু পেলেও তা ধরে রাখতে পারেনি লঙ্কানরা। মুস্তাফিজুর রহমান, তাসকিন আহমেদ এবং প্রথম বিশ্বকাপ খেলতে আশা লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেইনের আক্রমণে স্বল্প সংগ্রহই পায় হাসারাঙ্গা বাহিনী। টাইগাররা লক্ষ্য পান ১২৫ রানের। তা করতেও বাংলাদেশের খেলতে হয় ১৯ ওভার পর্যন্ত। অপেক্ষা করতে হয় টপ অর্ডারের। নিয়মিত ব্যর্থতাও ছিল অব্যাহত। তবে তাওহিদ হূদয়ের আক্রমণাত্মক ব্যাটিং, লিটন দাসের রানে ফেরা ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের ফিনিশিংয়ে ১ ওভার হাতে রেখেই জয় পান লাল-সবুজের প্রতিনিধিরা।

এমন রোমাঞ্চকর ম্যাচে জয় তুলে নিয়ে আসর শুরু করার পর সংবাদ সম্মেলনে এসে অধিনায়ক শান্ত জানিয়েই দিলেন যে এমন চাপের ম্যাচ তিনি এর আগে আর খেলেননি। বলেন, ‘বলা যেতে পারে (প্রেশারের ম্যাচ), আমার কাছে তাই লেগেছে খেলা শুরু হওয়ার আগে। দুই দিন আগে থেকেই আমরা সবাই জানতাম। ব্যাক্তিগতভাবে আমার কাছে মনে হয়েছে, এমন প্রেশারের ম্যাচ আমি এর আগে আর খেলিনি। আল্লাহর রহমতে দিন শেষে খেলাটায় জিতেছি।’ তবে যাই হোক, জয় দিয়ে শুরু করার লক্ষ্যটা পূরণ হয়েছে। বলা যায়, আসরের প্রথম মিশন সম্পন্ন হয়েছে। 

এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘আমরা সবাই জানতাম ম্যাচটা আমাদের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ হবে। তবে আমার মনে হয় যে আমরা শুরুটা ভালো পাইনি বোলিংয়ে। এর পরও সবাই যেভাবে শান্ত ছিল। যেভাবে আমরা মিডল ওভারে কামব্যাক করেছি, সেটা দারুণ ছিল, বিশেষ করে বোলার ও ফিল্ডারের।  সেখানে যে যার যার কাজটা ভালোভাবেই করেছে। তবে আমাদের ব্যাটিংটাও ভালো হয়নি। কিন্তু এ ধরনের উইকেটে বা চাপের ম্যাচে ওরাও ভালো করেছে। তবে আমরা ২ পয়েন্ট পেয়েছি, ভালো লেগেছে।’

যদিও লঙ্কানদের বিপক্ষে এই জয়েও প্রশ্নবিদ্ধ ছিল টাইগারদের ব্যাটিং। ওপেনার সৌম্য সরকার আউট হয়েছেন রানের খাতা খোলার আগেই। তরুণ ওপেনার তানজিদ তামিমও ৩ রান করে ফেরেন। তাতে ৬ রানেই ২ উইকেট হারান টাইগাররা। অধিনায়ক শান্ত-সাকিব আল হাসানও ছিলেন সেই ব্যর্থতার কাতারেই। যদিও এ নিয়ে খুব বেশি একটা ভাবছেন না অধিনায়ক। বলেন, ‘আমার মনে হয় না চিন্তুার খুব বেশি কারণ রয়েছে। এ কারণেই বলব কথাটা, খুব প্রেশারের ম্যাচ ছিল। তবে দিন শেষে আমরা জিততে চেয়েছি। তো ফলাফল যদি চিন্তা করি, ২টা পয়েন্ট পেয়েছি। ব্যাটাররা সবাই জানে যে আমরা হয়তো ভালো ব্যাটিং করিনি, কিন্তু সবাই প্রতিদিন ভালো খেলবে না। 

যেমন হূদয় খুব ভালো ইনিংস খেলেছে, রিয়াদ ভাই খেলাটা শেষ করলেন, লিটন অনেক দিন পর সুন্দর একটা শুরু এনে দিয়েছে। তো কিছু কিছু জায়গায় ভালো আছে। আমি যেটা আশা করব, যে যেদিন সেট হবে, সে যেন খেলাটা জেতায়। আমি প্রত্যাশা করব না যে দলের সাত জন ব্যাটারই ভালো খেলবে।’  এ সময় ওপেনার ব্যর্থতা নিয়ে বলেন, ‘যেটা বললাম, খেলাটা শুধু ওপেনারের না। যে সাত-আট জন ব্যাটিং করি আমরা, আমদের সবারই দায়িত্ব। আমি যেটা অধিনায়ক হিসেবে চাই যে, যে সেট হবে, যে শুরু করতে পারবে, সে যেন খেলাটা শেষ করে। হয়তো পরবর্তী ম্যাচে ওপেনাররা ভালো একটা শুরু করবে এবং  খেলাটা শেষ করে আসবে। আমি খুবই আশাবাদী ভালো করবে সবাই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *