কালবৈশাখী ঝড়ে ঘরবাড়ি গাছপালা লন্ডভন্ড বজ্রপাতে এক নারী ও দুই মহিষের মৃত্যু

Share Now..


স্টাফ রিপোর্টার, ঝিনাইদহঃ
ঝিনাইদহে কালবৈশালী ঝড়ে ব্যপক ক্ষতি সাধিত হয়েছে। অনেক এলাকা জড়ে লন্ডলন্ড হয়ে গেছে। কালীগঞ্জসহ কিছু এলাকায় বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। বজ্রবৃষ্টিপাতে মাঠে কাজ করা অবস্থায় রুপসি বেগম নামে শৈলকুপায় এক নারীর মৃত্যু হয়েছে। কালীগঞ্জে বজ্রপাতে ধানের ক্ষেত ভুস্মিভুত হয়েছে। গাছপালা ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেছে। সদর উপজেলার ডেফলবাড়ি গ্রামের কৃষক আশরাফুল ইসলামের ৬ লাখ টাকা দামের দুইটি মহিষের মৃত্যু হয়েছে বজ্রপাতে। এছাড়া কালীগঞ্জ ও হরিণাকুন্ডু এলাকায় ঝড়ে গাছপালা, ঘরবাড়ি ও উঠতি ফসলের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। শনিবার সকাল ৬ টার দিকে এসব ঘটনা ঘটে। সব থেকে বেশী ক্ষতিগ্রস্থ হয় জেলার কালীগঞ্জ ও সদর উপজেলার বিভিন্ন এলাকা। জানা যায়, সকাল ৬ টার দিকে হঠাৎ আকাশ মেঘাচ্ছন্ন হয়ে ওঠে। কিছুক্ষনের মধ্যেই তীব্র ঝড়, বৃষ্টি ও বজ্রপাত শুরু হয়। ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার কুলচারা গ্রামের মাঠে ক্ষেতে বেগুন তুলছিল রুপসী বেগম ও তার স্বামী গোলাম নবী। হঠাৎ ঝড় বৃষ্টি শুরু হলে বজ্রপাতে স্বামী-স্ত্রী আহত হন। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ দমকল বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ জেনারেল হাসপাতালে আনলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রুপসী বেগমকে মৃত ঘোষণা করে। গুরুতর আহত স্বামী গোলাম নবী’কে জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি রাখা হয়েছে। এদিকে তীব্র ঝড়ে ঝিনাইদহ সদরের গোয়ালপাড়া, ক্যাডেট কলেজ সংলগ্ন সড়ক, কালীগঞ্জে বারোবাজার, রঘুনাথপুর, কোটচাদপুরের এলাঙ্গী সহ বিভিন্ন স্থানে রাস্তায় ও রাস্তার পাশে ভেঙে পড়ে ছোটবড় প্রায় শতাধীক গাছ। এতে সকাল ৬ টা থেকে বন্ধ হয়ে যায় ঝিনাইদহ-যশোর সড়কে যানবাহন চলাচল। এ সময় ঝড়ের কবলে পড়ে আহত হয় আরো ৪ জন। খবর পেয়ে ঝিনাইদহ, কালীগঞ্জ ও কোটচাদপুর ফায়ার সার্ভিসের ৪ টি ইউনিট ঘটনা স্থলে পৌছে প্রায় ৪ ঘন্টা চেষ্টা করে গাছ কেটে অপসারন করে। প্রায় ৪ ঘন্টা পর সকাল ১০ টা থেকে যানচলাচল স্বাভাবিক হয়। ঝড়ের সময় বজ্রপাতের আগুনে কালীগঞ্জ উপজেলার কাঠালিয়া মাঠে এক কৃষকের কেটে রাখা ধান ভস্মিভুত হয়। ঝড়ের সময় জেলা সদর ও কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বৈদ্যুতিক খুটি ভেঙে ও তার ছিড়ে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুৎ সরবরাহ। উদ্ধারে অংশ নেওয়া কালীগঞ্জ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার শেখ মামুনুর রশিদ জানান, ঝড়ের পরপরই বিভিন্ন স্থান থেকে সড়কে গাছ ভেঙে পড়ার খবর আসে। সেসময় ঘটনা স্থলে গিয়ে গাছ কেটে রাস্তার পাশে সরিয়ে রাখি। প্রায় চার ঘন্টা কাজ শেষে সম্পুর্ণরুপে সড়কে ও গুরুত্বপুর্নস্থানে ভেঙেপড়া গাছ অপসারন করতে সক্ষম হই। এরপরই সকল মহাসড়ক ও আঞ্চলিক গুরুত্বপুর্ণ সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক হয়। কালীগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার রথীন্দ্রনাথ বসাক বলেন, ঝড়ে ৩৩ টি বিদ্যুতের পোল ভেঙ্গেছে। তাছাড়া ৩৩ কেভি লাইনের উপর গাছ পড়েছে আর তার ছিড়ে গেছে। সব স্থানেই মেরামতের কাজ চলছে। ঝিনাইদহ ওয়েস্টজোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানীর নির্বাহী প্রকৌশলী ইঞ্জিনিয়ার রাশিদুল ইসলাম চৌধুরী জানান, ঝড়ে কিছু স্থানে গাছ পড়ে বিদ্যুৎ লাইন ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মীরা কাজ করছ্ েদ্রুত লাইন চালু করেরেছ। তবে কিছু কিছু এলাকায় বিকাল পর্যন্ত লাইন চালু করেত পারেনি। এদিকে ঝড়ের পর জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার তালিকা প্রণয়নের কাজ শুরু করেছে। ঝিনাইদহের জেলা প্রশাসক মনিরা বেগম বলেন, আমরা ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করছি। তালিকা শেষ হলে তারা যাতে সহযোগীতা পান সে ব্যাপারে মন্ত্রনালয়ে আবেদন করা হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *