কুইন্সল্যান্ডে ভয়াবহ বন্যা মোকাবিলায় হিমশিম খাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া

Share Now..

কুইন্সল্যান্ড রাজ্যে ভয়াবহ বন্যা সামাল দিতে হিমশিম খাচ্ছে অস্ট্রেলিয়া কর্তৃপক্ষ। জরুরি অবস্থার কারণে হাজার হাজার লোককে সরিয়ে নিতে হচ্ছে, বাড়ি-ঘরের বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মহাসড়কের কিছু অংশে পানি ওঠার পর বিচ্ছিন্ন জনগোষ্ঠীর কাছে সহায়তা পৌঁছাতে বেগ পেতে হচ্ছে কর্তৃপক্ষকে।

বিবিসি জানিয়েছে, বন্যায় এখন পর্যন্ত এক নারীর প্রাণহানি ঘটেছে। রাজ্যের উত্তরাঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন মধ্যে টাউনসভিল, ইনহাম এবং কার্ডওয়েলের বাসিন্দারা। কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, শনিবার থেকে এই অঞ্চলের কিছু অংশে প্রায় ১.৩ মিটার (৪.২ ফুট) বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকবে। ফলে নদী-নালা উপচে পড়বে। দেশটির প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি অ্যালবানিজ এক্স পোস্টে লিখেছেন, এই বিপর্যয়ে আমি দেখেছি অস্ট্রেলিয়ানরা তাদের প্রয়োজনের সময় একে অপরকে সাহায্য করছে। বন্যার পানির হুমকি ক্ষতিগ্রস্ত অঞ্চলগুলোতে কয়েকদিন ধরে অব্যাহত থাকবে।

কুইন্সল্যান্ড ট্রাকিং অ্যাসোসিয়েশন এবিসি নিউজকে জানিয়েছে, একটি সেতুর আংশিক ধসে পড়েছে। ফলে অতিরিক্ত ৭০০ কিলোমিটার ঘুরে যাতায়াত করতে হতে পারে। সেখানে গুরুত্বপূর্ণ সরবরাহ ব্যবস্থার গতি কমে যেতে পারে। কুইন্সল্যান্ডের প্রিমিয়ার ডেভিড ক্রিসাফুলি রোববার (২ ফেব্রুয়রি) উদ্ধার চেষ্টার সময় স্টেট ইমার্জেন্সি সার্ভিসের (এসইএস) একটি ডিঙ্গি নৌকাডুবিতে ৬৩ বছর বয়সী নারীর মৃত্যুর পর ইনহাম শহরের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন। সোমবার সাংবাদিকদের তিনি বলেন, তাদের ক্ষতির জন্য আমরা গভীরভাবে ব্যথিত।

টাউনসভিল স্থানীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা গ্রুপ সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, আগামীকাল মঙ্গলবার সর্বোচ্চ পর্যায়ে প্লাবনের আশঙ্কা করা হচ্ছে। এর আগেই পানির স্তর বেড়ে যাওয়ায় প্রায় দুই হাজার বাড়ি প্লাবিত হতে পারে।

বিবিসির প্রতিবেদন বলছে, ইতোমধ্যে অনেক ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে। বৃদ্ধ মায়ের সঙ্গে বসবাসকারী ইংহামের এক বাসিন্দা স্থানীয় সংবাদমাধ্যম টাউনসভিল বুলেটিনকে বলেন, তাদের সম্পত্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। জরুরি সেবার জন্য তিনি সাত ঘণ্টা ধরে অপেক্ষা করেছেন। তিনি বলেন, আমি কাঁদছিলাম। এমনকি আমি যখন জরুরি নম্বরে কল করি, তখন কেউ একজন আমাকে ফোন করে বলে, ‘আমরা ব্যস্ত আছি’।

যদিও এখন বৃষ্টিপাত কমে আসছে, তবে বেশ কয়েকটি নদীর তীরবর্তী সম্প্রদায়ের জন্য বড় বন্যা সতর্কতা জারি রয়েছে। রাজ্যের প্রধান ডেভিড ক্রিসাফুলি সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, হারবার্ট নদীর উচ্চতা ১৫.২ মিটার ছাড়িয়ে গেলে ইনহাম অঞ্চল ৬০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যার মুখোমুখি হতে পারে।

এদিকে, দেশটিতে কুমিরের উপদ্রব থাকায় কর্তৃপক্ষ স্থানীয়দের এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে বলেছে। পানি বেড়ে যাওয়ায় কুমিরগুলো তাদের স্বাভাবিক বাসস্থান থেকে দূরে এসে লুকিয়ে থাকতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *