কেঁদে-কাঁদিয়ে সুয়ারেজের বিদায় 

Share Now..

সালটা ২০১১ তারিখ ১৪ জুলাই। প্যারাগুয়েকে হারিয়ে কোপা আমেরিকার শিরোপা জিতেছিল উরুগুয়ে। এরপর আর কোনো আন্তর্জাতিক ট্রফি জয়ের স্বাদ পায়নি উরুগুয়ে। সেই প্যারাগুয়ের বিপক্ষে নিজের ক্যারিয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জনটি করেছিলেন সুয়ারেজ। এবার প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ইতি টানলেন নিজের আন্তর্জাতিক ফুটবল ক্যারিয়ারের। গতকাল বাংলাদেশ সময় সকালে ঘরের মাটিতে ২০২৬ ফিফা বিশ্বকাপ বাছাই পর্বের ম্যাচে প্যারাগুয়ের বিপক্ষে নামে উরুগুয়ে। সেই ম্যাচে গোলশূন্য থেকে মাঠ ছাড়ে দুই দল। তবে এদিন সব আলো কেড়ে নেন লুইস সুয়ারেজ। 

গতকাল ৩৭ বছর বয়সী এই তারকার বিদায়ী ম্যাচে উপস্থিত ছিলেন তার পরিবারের সদস্যরা ও উরুগুয়ের কিংবদন্তি কোচ অস্কার তাবারেজ। এ দিন এই কিংবদন্তিকে বিদায় জানাতে বড় বড় ব্যানারে সুয়ারেজের নাম লিখে নিয়ে মাঠে আসেন দর্শকরা। ম্যাচ শেষে আর নিজের আবেগ ধরে রাখতে পারেননি সুয়ারেজ। তার চোখ বেয়ে তখন পরছিল বেদনার অশ্রু। শুধু তিনিই নয়, তার পরিবারের সদস্য থেকে শুরু করে সতীর্থ ও গ্যালারিতে থাকা দর্শক সবাই অশ্রুসিক্ত চোখে বিদায় দিয়েছেন এই কিংবদন্তিকে।  এর আগে ২০০৭ সালে আন্তর্জাতিক ফুটবলে অভিষেক হয় সুয়ারেজের। উরুগুয়ের জার্সি গায়ে ১৪৩টি ম্যাচ খেলে করছেন ৬৯টি গোল। উরুগুয়ের ইতিহাসে সর্বোচ্চ গোলদাতার তমকা সুয়ারেজের গায়ে। দেশের হয়ে তার একমাত্র ট্রফি ২০১১ সালের কোপা আমেরিকা। সেবার কোপা আমেরিকার সেরা খেলোয়াড়ও নির্বাচিত হন তিনি। তার বিদায়ী ম্যাচে ২০১১ সালের কোপার সেই ট্রফিকে নিয়ে আসা হয়। সেটি নিয়ে উদযাপনও করে সুয়ারেজ। ম্যাচ শেষে কান্না ভেজা চোখে তিনি বলেন, ‘উরুগুয়ে যেকোনো খেলোয়াড়, কোচ, পরিচালক কিংবা যে কারো চেয়ে বড়। আগামীকাল থেকে আমি শুধুই আরেক জন ভক্ত। যারা এরপর খেলতে আসবে, সবার জন্য শুভকামনা। নিশ্চিতভাবে তারাও আমাদের মতো দেশের প্রতিনিধিত্ব করবে। উরুগুয়েকে অনেক দূর নিয়ে যাবে। আমি সব সময় উরুগুয়ের মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ থাকব।’

সুয়ারেজের সবচেয়ে ভালো বন্ধু আর্জেন্টাইন কিংবদন্তি লিওনেল মেসি। ক্লাব ফুটবলে বার্সেলোনার হয়ে একসাথে মাঠ মাতিয়েছেন প্রায় এক দশক। একসঙ্গে গড়েছেন অসংখ্য রেকর্ড। বতর্মানেও ইন্টার মায়ামির হয়ে খেলছেন মেসি-সুয়ারেজ। প্রিয় বন্ধুর বিদায় বেলা আবেগঘন ভিডিও বার্তা দেন আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়ক লিওনেল মেসি। যা স্টেডিয়ামের বড় পর্দায় দেখানো হয়। বন্ধু সুয়ারেজকে নিয়ে মেসি বলেন, ‘বিশেষ এই দিনে আমি তোমার জন্য এই ভিডিও রেকর্ড করেছি। এটা তোমার, তোমার পরিবারের, উরুগুয়ের এবং ফুটবলপ্রেমীদের জন্য বিশেষ একটি দিন। তুমি জাতীয় দলকে এবং দেশকে যা দিয়েছ, সেটা আজীবন মনে রাখবে পুরো জাতি।’  এছাড়াও মেসি আরও বলেন, ‘আমি ভাগ্যবান ছিলাম যে তোমার পাশে থাকতে পেরেছি। আমি জানি এই সিদ্ধান্ত নেওয়া কতটা কঠিন ছিল। উরুগুয়ের হয়ে খেলা তোমার কাছে কতটা অর্থবহ, সেটাও আমি জানি। আমি আশা করব, যে ভালোবাসা তোমাকে দেওয়া হচ্ছে, তা তুমি উপভোগ করবে। আমি যা বললাম, তুমি তার চেয়েও বেশি যোগ্য। কারণ, শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত তুমি সবকিছু উজাড় করে দিয়েছো। আজ যারা সেখানে উপস্থিত আছে, তুমি তাদের জন্য বিশাল এক উত্তরাধিকার রেখে যাচ্ছো।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *