কোটচাঁদপুরে তীব্র গরমে ঘন ঘন লোডশেডিং \ অতিষ্ঠ জনজীবন
\ কোটচাঁদপুর প্রতিনিধি \
বইছে তাপপ্রবাহ। পাশাপাশি রয়েছে কাঠফাটা রোদ। এই গরমে অস্বস্তিতে রয়েছে মানুষ। গরমের সঙ্গে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে পাল্লা দিয়ে শুরু হয়েছে লোডশেডিং। দিনে-রাতে ৪ থেকে ৫ ঘণ্টার লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে জনজীবন। এতে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বিদ্যুতের গ্রাহকরা। তারা নিজেদের ক্ষোভের কথা জানাচ্ছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, গরম ও লোডশেডিংয়ে বেশি বিপদে পড়েছে উপজেলার কয়েক হাজার এইচএসসি ও সমমানের পরীক্ষার্থী। ৩০ জুন এ পরীক্ষা শুরু হবে। শিক্ষার্থীরা রাত- দিন এক করে সেরে নিচ্ছে শেষ মুহর্তের প্রস্তুতি। তবে তাদের এ প্রস্তুতিতে বাদ সেধেছে ঘন ঘন লোডশেডিং। এতে ভালো ফলাফল নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে শিক্ষার্থীরা। মুহিদুল ইসলাম নামে এক এইচএসসি পরীক্ষার্থী জানায় কদিন পরেই পরীক্ষা। এখন শেষ সময়ের প্রস্তুতি নিচ্ছি। কিন্তু দিন-রাত মিলে ৪-৫ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকে না। ফলে তীব্র গরমে পড়াশোনা করতে পারি না। সারারাত গরমে ঘরের বাইরে বসে থাকতে হয়। ঘুমাতেও পারি না। গত শনিবার সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত শহর অঞ্চলের বিদ্যুৎ লাইন যাওয়া সড়কের গাছের ডাল পালা পরিষ্কার করার জন্য অন্তত ৮ ঘণ্টা লোডশেডিং দেওয়া হয়েছে বলে স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন। তবে গ্রামাঞ্চলে পল্লী বিদ্যুৎতের এর মাত্রা আরও বেশি। এক ঘণ্টা পর পর গ্রামে লোডশেডিং হচ্ছে বলে অভিযোগ অনেকের। এতে গরমে মানুষের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হচ্ছে। দিনমজুর থেকে রিকশা ও ভ্যানচালক, ব্যবসায়ী থেকে কর্মজীবী, শিক্ষার্থী কিংবা শিশু কিশোর-সবার মধ্যে অস্বস্তি বিরাজ করছে। দৈনন্দিন কাজকর্ম করতে পারছেন না নি¤œ আয়ের মানুষ। বুধবার সকালে ভাড়ায়চালিত পাখি ভ্যান নিয়ে বের হয়েছিলেন মফিজুর রহমান। তবে যাত্রী না থাকা ও প্রচÐ গরমে অতিষ্ঠ হয়ে কিছুটা স্বস্তির পেতে কোটচাঁদপুর শহরের উপজেলা পরিষদের সামনে একটি চায়ের দোকানে দাঁড়িয়ে ছিলেন। সেখানে বৈদ্যুতিক পাখার বাতাসে পরশ পাওয়ার আশায় ছিলেন তিনি। তবে বিদ্যুৎ না থাকায় অস্বস্তি কাটেনি তাঁর। মফিজুর রহমানের ভাষ্য, ‘গরমে বাইরে বের হতে পারি না। বাড়িতে স্ত্রীসহ দুই সন্তান রয়েছে। নিজের জায়গা-জমি নেই। অন্যের ভ্যান ও রিকশা চালিয়ে ২৫০-৩০০ টাকা আয় হয়। তা দিয়ে চলে ৪ জনের সংসার। এক দিন বের না হলে সংসারে চুলা জ্বলে না। ঘরে চাল-ডাল না থাকায় সকাল করে বের হয়েছিলাম আয়ের আশায়। তবে যাত্রী নেই। গরমে ভ্যানও ঠিকমতো চালাতে পারছি না। সারারাত বিদ্যুৎ না থাকায় ঘুমাতেও পারি না। জানা গেছে কয়েকদিন ধরে উপজেলায় তাপমাত্রা ৩৬-৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে রয়েছে। এর সঙ্গে ভ্যাপসা গরম আর তীব্র রোদ। পাশাপাশি বিদ্যুতের আসা-যাওয়াও চলছে। তবে দ্রæত সংকট কেটে যাবে বলে দাবি বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষের। এ বিষয়ে কোটচাঁদপুর ওয়েস্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেড অফিসের আবাসিক প্রকৌশলী মোঃ শহিদুজ্জামান বলেন, উপজেলায় ১৩ হাজার ৫শত ২২ গ্রাহক রয়েছেন। ৩ টা ফিডারের মাধ্যমে এসব গ্রাহকের বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এখানে গড়ে প্রতিদিন ৫ থেকে সাড়ে ৬ মেগাওয়াট বিদ্যুতের চাহিদা রয়েছে। তবে বরাদ্দের কম পাওয়ার ফলে লোডশেডিং হচ্ছে। আগামী মাস থেকে ঠিক হয়ে যাবে বলে তিনি আশা করছেন।