কোরবানি হোক স্বাস্থ্যবিধি মেনে
মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা বা কোরবানি ঈদ। কোরবানি শুধু আত্মত্যাগ বা পশু জবাই নয়, পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি এরসঙ্গে গভীরভাবে জড়িত। দেশের কোরবানিদাতাদের একটি বড় অংশই সুষ্ঠুভাবে পশু কোরবানি দিতে কী কী করণীয় সে বিষয়ে সচেতন নয়।
উন্নত মুসলিম দেশগুলোতে রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা কোরবানি ঈদের জন্য। তারা নিজেদের পছন্দমতো গৃহপালিত পশু ক্রয় করে নির্ধারিত স্থানে দিয়ে দেন এবং স্বাস্থ্যসম্মত ও হালাল উপায়ে জবাই করে বর্জ্য আলাদা করে শুধু হাড়, মাংস পশু মালিকের কাছে হস্তান্তর করে দেওয়া হয় এবং বর্জ্যগুলো সঠিকভাবে ডাম্পিং/পুনর্ব্যবহারের জন্য প্রক্রিয়াজাত করা হয়।
কিন্তু আমাদের দেশে এমন নয়। আমাদের নিজেদেরই সকল ব্যবস্থা করতে হয়। তাই আমাদের নিজেদের কোরবানির সকল পরিচ্ছন্নতার বিষয়টি খেয়াল রাখা অত্যন্ত জরুরি।
অনেকেই যারা কোরবানি দিয়ে থাকেন তারা কোরবানির চামড়া, রক্ত, ব্যবহৃত চাটাই ইত্যাদি যাবতীয় আবর্জনা যেখানে-সেখানে ফেলে দেয়। ফলে খুব দ্রুত জীবাণু সংক্রমণসহ দুর্গন্ধ ছড়াতে থাকে। এতে বায়ু, পানি ও মাটি- তিনটি প্রাকৃতিক উপাদানই দূষিত হয়। সরকার গত কয়েক বছর ধরে সিটি কর্পোরেশনের মাধ্যমে পশু কোরবানি দেওয়ার জন্য স্থান নির্ধারণ করে দিয়েছে এবং বর্জ্য ফেলার জন্য ব্যাগ সরবরাহের উদ্যোগ নিয়েছে।
যেসব ব্যবস্থাপনা করা যেতে পারে
- বিচ্ছিন্ন স্থানে পশু কোরবানি না দিয়ে এলাকার লোকজন মিলে এক স্থানে কোরবানি করা বা সিটি কর্পোরেশনের নির্ধারিত স্থানে পশু জবাই করা যেতে পারে।
- প্রথমে পানি একবার এরপর স্যাভলন দিয়ে একবার এবং গুঁড়া সাবান বা ব্লিচিং পাউডার দিয়ে ধুয়ে ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করতে হবে এবং শেষে চারদিকে ব্লিচিং পাউডার ছিটিয়ে রাখতে হবে। কোরবানি করা পশুর হাড়, লেজ, কান, মাথার খুলি ও পায়ের অবশিষ্টাংশ অবশ্যই বর্জ্য ফেলার ব্যাগে জড়িয়ে সেটি কাছাকাছি নির্দিষ্ট স্থানে রেখে দিতে হবে। সিটি কর্পোরেশন কর্তৃপক্ষ ১-২ দিনের মধ্যেই তা সরিয়ে নেওয়ার ব্যবস্থা করে থাকে।
- গ্রামে বা যেখানে খোলা জায়গা আছে, সেখানে কুরবানির আগে খালি জায়গায় একটি গর্ত করে, পশু-বর্জ্যগুলো ঐ গর্তে ফেলে মাটিচাপা দিয়ে দিতে হবে। এতে দুর্গন্ধ ছড়াবে না এবং মশার উপদ্রব ও রোগবালাই সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে।
- সামান্য পরিকল্পনার এবং সচেতনতার অভাবে কোরবানির পশুর বর্জ্য অব্যবস্থাপনার কারণে পরিবেশ দূষিত হয়। সচেতন হলে এই পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনার তাহলে ঈদের আনন্দ হবে দ্বিগুণ।