ক্রিকেটকে নতুন উচ্চতায় নিতে বুলবুলের পরামর্শ 

Share Now..

আইসিসিতে উন্নয়ন ব্যবস্থাপক হিসেবে এশিয়ান অঞ্চলে আইসিসির সহযোগী সদস্য ২০ দেশের ক্রিকেট উন্নয়নে কাজ করেন আমিনুল ইসলাম বুলবুল। সেই সুবাদে এশিয়ার বিভিন্ন দেশে যেতে হয় বাংলাদেশের ক্রিকেটের উজ্জ্বল নক্ষত্র বুলবুলকে। এশিয়া অঞ্চল সফরের বিভিন্ন সময় বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সঙ্গে, গেমসে যাওয়া ক্রীড়া সাংবাদিকদের সঙ্গেও দেখা হয় বুলবুলের। কিন্তু বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে কথা বলতে ভয় পেতেন ব্যক্তিত্ব নিয়ে চলা সাবেক তারকা ক্রিকেটার আমিনুল ইসলাম বুলবুল। 

দেশের ক্রিকেটে কোথায় ভুলভ্রান্তি হচ্ছে তা নিয়ে কথা বলতে গেলে পাপন যুগে সমস্যায় পড়তে হতো বুলবুলকে। নাজমুল হাসান পাপনের বিসিসিবি ভুল পথে হাঁটলে সেটি নিয়ে কথা বলা যেত না। ভালো পরামর্শ গ্রহণ করার মতো মানসিকতা ছিল না পাপনগংদের। বুলবুল কেন বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে কথা বলেন? সে কারণে আইসিসিতেও বুলবুলের বিরুদ্ধে বলা হয়েছিল। সে কথা বুলবুল নিজে প্রকাশ না করলেও এক কান, দুই কান হয়ে কথা ছড়িয়ে গিয়েছিল।  বুলবুল সারা জীবন ক্রিকেট খেলেছেন ভদ্র ছেলের মতোই। মাঠের ভেতরে কিংবা বাইরে বুলবুল আপদমস্তক ভদ্র মানুষ। ক্রিকেট ভালোবেসে এখন ক্রিকেট নিয়েই কাজ করছেন। অস্ট্রেলিয়ায় নিজের ছেলেকেও ক্রিকেটার বানাচ্ছেন। ২০০০ সালে অভিষেক টেস্টে ভারতের বিপক্ষে বুলবুল সেঞ্চুরি করেছিলেন, ঢাকায় বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে। দেশের প্রথম টেস্ট সেঞ্চুরিয়ান সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশের ক্রিকেট নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন। 

ক্রিকেটকে নতুন উচ্চতায় নিতে পরামর্শ দিয়েছেন বুলবুল। তিনি বলেন, ‘আমাদের দেশের ক্রিকেট এমন এক সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়েছে, যেখানে ঘরোয়া ক্রিকেটের শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি করা অত্যন্ত জরুরি। দেশের ঘরোয়া ক্রিকেটকে প্রতিযোগিতামূলক করতে একটি সমন্বিত এবং বিস্তৃত প্রকল্প গ্রহণ করতে হবে। এই প্রকল্পটি উপজেলা, জেলা, এবং বিভাগ পর্যায়ে সুষ্ঠু বাস্তবায়ন করা দরকার। প্রথম ধাপে, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটের গুরুত্ব দিতে হবে। দেশের ক্রিকেট সংস্কৃতিতে টেস্ট ক্রিকেট একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলেও, দর্শকদের আগ্রহ বর্তমানে কমে এসেছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে, প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট আবারও টেস্ট ম্যাচের প্রতি নতুন প্রজন্মের আগ্রহ তৈরি করতে সহায়ক হবে।’  বুলবুলের মতে, চারটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে পারে বিসিবি: 

১. স্টেডিয়াম ব্র্যান্ডিং: প্রথম শ্রেণির লিগের জন্য সব স্টেডিয়ামকে নতুনভাবে সাজাতে হবে। এর ফলে ক্রিকেটাররা আরও পেশাদার পরিবেশে খেলার সুযোগ পাবেন, দর্শকও আরও আকৃষ্ট হবেন। 

২. খেলোয়াড়দের ম্যাচ ফি বৃদ্ধি: খেলোয়াড়দের প্রণোদনা বৃদ্ধি করা, ম্যাচ ফি দ্বিগুণ বা তিনগুণ করা জরুরি। এর ফলে খেলোয়াড়রা আরও বেশি প্রতিযোগিতায় মনোযোগী ও উৎসাহী হবেন। 

৩. সেরা কোচ ও সহায়ক স্টাফ নিয়োগ: ঘরোয়া ক্রিকেটের মান বাড়াতে সর্বোচ্চ মানের কোচ এবং সাপোর্ট স্টাফ প্রয়োজন। 

৪. আকর্ষণীয় খেলার শর্তাবলী-কিছু নিয়মকানুনে পরিবর্তন এনে খেলার শর্তগুলোকে আরও প্রতিযোগিতামূলক এবং উত্তেজনাপূর্ণ করা যেতে পারে, যা দর্শকদের মধ্যে খেলার প্রতি আরো আকর্ষণ সৃষ্টি করবে। প্রতিটি ম্যাচ সরাসরি সম্প্রচার করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হবে, যা সারা দেশের মানুষকে ঘরোয়া ক্রিকেটের প্রতি অগ্রহী করে তুলবে। 

এছাড়া, ডে-নাইট ফরম্যাটে গোলাপি বল দিয়ে ফাইনাল চারটি ম্যাচ আয়োজন করলে তা দেশের ক্রিকেটে নতুন এক যুগের সূচনা করবে। এর মাধ্যমে আমরা ডে-নাইট টেস্ট ম্যাচের সফল আয়োজন করতে পারব, যা টেস্ট ক্রিকেটের প্রতি দর্শকদের পুনরায় আকর্ষণ বাড়াবে। টেস্ট ম্যাচের দর্শক তৈরি হবে, ক্রিকেটের ঐতিহ্য ফিরে আসবে এবং আমরা বিশ্ব ক্রিকেটে নতুন উচ্চতায় পৌঁছতে সক্ষম হব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *