কয়রায় চরম দুর্ভোগে পানিবন্দি মানুষ
ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে খুলনার কয়রার ৬টি পয়েন্টের পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) বেড়িবাঁধ ভেঙে এলাকা প্লাবিত হয়েছে। এতে মৎস্যঘের তলিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি, ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পানিবন্দি অবস্থায় মানুষ সীমাহীন কষ্টের মধ্যে দিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সাগর হোসেন সৈকত বলেন, ‘কয়রায় ইয়াসের তাণ্ডবে উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের সব এলাকায় কমবেশি ক্ষতি হয়েছে। অনেক এলাকায় ঘর ভেঙে পড়েছে। অনেক এলাকায় ঘর আংশিক ক্ষতি হয়েছে। সব মিলিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ঘরের সংখ্যা ৭ হাজার। এর মধ্যে ৫০টি ঘর সম্পূর্ণ, ১ হাজার ২০০ ঘরবাড়ি আংশিক ও ৫ হাজার ৮০০ ঘরবাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সকল এলাকার মানুষ এখনও পানিবন্দি অবস্থায় দিন যাপন করছে। এর ফলে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।’
উপজেলা মৎস্য অফিসার এস এম আলউদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘ইয়াসের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাসে কয়রা উপজেলায় ২ হাজার ১০০ মৎস্য ঘের ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া অসংখ্য মাছের পুকুর ডুবে গেছে। মৎস্যখাতে প্রায় ২০ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। পাউবোর বেড়িবাঁধ ভেঙে যাওয়ায় কৃষির ব্যাপক ফসল নষ্ট হয়েছে। গবাদি পশুর ক্ষয়ক্ষতি হওয়ার পাওয়া গেছে।’
কয়রা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মোহা. হুমায়ুন কবির বলেন, ‘ভেঙে যাওয়া বাঁধের মহারাজপুর ইউনিয়নের মঠবাড়ির পবনা, দশহালিয়া ও উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের গাতির বেড়িবাঁধ এখনও বাঁধা সম্ভব হয়নি। তবে দক্ষিণ বেদকাশি ও মহেশ্বরীপুর ইউনিয়নের ভেঙে যাওয়া বাঁধ কোনরকম বাঁধতে সম্ভব হয়েছে। তবে এসকল বাঁধে জরুরি ভিত্তিতে কাজ করা প্রয়োজন।’
উপজেলা নির্বাহী অফিসার অনিমেষ বিশ্বাস বলেন, ‘বাঁধ বাঁধার কাজ চলছে। ইতিমধ্যে অনেক বাঁধ মেরামত করা সম্ভব হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের সহযোগিতা করা হবে।’
কয়রা-পাইকগাছার সংসদ সদস্য মো. আক্তারুজ্জামান বাবু বলেন, ‘ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করা হয়েছে। বাঁধ মেরামতের ব্যাপারে সার্বিক সহযোগিতা করা হচ্ছে।’
পানিবন্দি মানুষের মাঝে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ করা হবে বলে জানান তিনি।