খেজুর গুড়ের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চৌগাছায় তিনদিন ব্যাপী গুড় মেলার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন

Share Now..

\ চৌগাছা প্রতিনিধি \
খেজুর গুড়ের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে গত দুই বছরের মত এ বছরও যশোরের চৌগাছায় তিনদিন ব্যাপী গুড় মেলার আয়োজন করা হয়েছে। সম্পূর্ণ ব্যতিক্রমধর্মী এই মেলাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার (১৪ জানুয়ারি) বেলা ১১ টায় উপজেলা পরিষদ হলরুমে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের কাছে প্রেস ব্রিফিং করেন উপজেলা প্রশাসন। প্রেস ব্রিফিং এ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সুস্মিতা সাহা জানান, উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে স্থানীয় গাছিদের নিয়ে আগামী ১৫, ১৬ ও ১৭ জানুয়ারি বুধ, বৃহস্পতি ও শুক্রবার গুড়ের মেলা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে আমাদের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। তিনি জানান, উপজেলা চত্তরে অনুষ্ঠিত গুড়ের মেলা ১৫ জানুয়ারি সকাল ১০ টায় যশোরের জেলা প্রশাসক আজাহারুল হাসান মজুমদার স্যার মেলার উদ্বোধন করবেন। এছাড়া ১৭ জানুয়ারি সমাপনী দিনে প্রধান অতিথি হিসাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি মেলায় উপস্থিত থাকবেন। তিনি আরো জানান, যশোরসহ অত্র অঞ্চলে খেজুরের গুড়ের জন্য বিখ্যাত। গুড়ের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে এবং গাছিদের উদ্বুদ্ধ করার পাশাপাশি অর্থনৈতিক সম্ভবনা সৃষ্টির লক্ষে গুড়ের মেলা আয়োজন করা হয়েছে। বিগত দুই বছরের মত এ বছরও গুড়ের মেলা ব্যাপক সাড়া ফেলবে বলে তিনি প্রত্যাশা করেন। এ জন্য তিনি সাংবাদিকদের সহযোগীতা কামনা করেন। এ সময় উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তাসমিন জাহানসহ উপজেলা প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
প্রসঙ্গত, সেভ দ্যা ট্যাডিশন এ্যান্ড এনভায়রনমেন্টের পরিচালক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মোহাম্মদ আবু বকর যশোর অঞ্চলের খেজুর গাছ ও সংশ্লিষ্ট গাছিদের নিয়ে বিগত কয়েক বছর ধরে ব্যাপক গবেষনা করেন। উপজেলা প্রতিটি গ্রামে গ্রামে যেয়ে গাছিদের নিয়ে শুরু করেন উঠান বৈঠক। গাছিদের উন্নয়নে ও যশোরের ঐতিহ্য ধরে রাখতে প্রেসক্লাব চৌগাছা ও রিপোর্টার্স ক্লাবের সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের সাথে দফায় দফায় মতবিনিময় করেন। এছাড়া খেজুর গাছ রক্ষা ও গাছিদের নিয়ে নানা কর্মকান্ড চালাতে থাকেন। ওই সময়ে তিনি তথ্য প্রকাশ করেন অত্র উপজেলা এক দশক আগেও খেজুর গাছের সংখ্যা দেড় লাখের বেশি ছিল। বর্তমানে তা নেমে ৫৫ হাজারে এসেছে। এছাড়া এক দশক আগেও উপজেলাতে ৪ থেকে ৫ হাজার গাছি থাকলেও নানা কারনে সেই সংখ্যা কমে এখন দাড়িয়েছে সাড়ে ৮শ মত। খেজুর গাছ রক্ষা, গাছিদের উন্নয়ন ও গুড় বাজারজাতের নিশ্চিয়তা প্রদান করা হলে খেজুর গাছের প্রতি গাছিদের আগ্রহ তৈরী হবে। একই সাথে গুড়ের উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে। খেজুর গাছ নিয়ে তার এই আন্দোলন ও গবেষনার বিষয়টি নিয়ে সাংবাদিকদের সহযোগিতায় সাবেক উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইরুফা সুলতানার কাছে অবহিত করেন। একই সাথে তিনি সার্বিক সহযোগীতা কামনা করেন। মোহাম্মদ আবু বকরের এই কার্যক্রম নিয়ে নির্বাহী কর্মকর্তা খোঁজখবর নেন। পরবর্তীতে সরকারীভাবে খেঁজুর গাছ রক্ষা ও গুড়ের ঐতিহ্য টিকিয়ে রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ নেন। একপর্যায় ২০২৩ সালে প্রথম গুড়ের মেলার প্রচলন শুরু হয় চৌগাছায়।

3 thoughts on “খেজুর গুড়ের ঐতিহ্যকে ধরে রাখতে চৌগাছায় তিনদিন ব্যাপী গুড় মেলার সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *