গাজায় হাসপাতাল প্রাঙ্গণে সমাহিত ১৭৯ ফিলিস্তিনি
ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকার সবচেয়ে বড় চিকিত্সাকেন্দ্র আল-শিফা হাসপাতালে ১৭৯ জনকে কবর দেওয়া হয়েছে। সেখানে ‘গণকবর’ খুঁড়ে তাদের সমাহিত করা হয়েছে। আল-শিফার পরিচালক মোহাম্মদ আবু সালমিয়া মঙ্গলবার এমন তথ্য জানিয়েছেন। এদিকে ইসরাইলের বিমান হামলায় নোয়া মারসিয়ানো নামের এক ইসরাইলি জিম্মির মৃত্যু হয়েছে। তিনি ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন। আলজাজিরা
মোহাম্মদ আবু সালমিয়া বলেছেন, ‘আমরা তাদের গণকবরে সমাহিত করতে বাধ্য হয়েছি।’ হাসপাতাল প্রাঙ্গণেই যাদের চিরনিদ্রায় শায়িত করা হয়েছে তাদের মধ্যে সাতটি শিশু। আর ২৯ জন নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে (আইসিইউ) ভর্তি ছিলেন। গত তিন-চার দিন ধরে আল-শিফা হাসপাতালকে ঘিরে রেখেছে ইসরাইলি বাহিনী। হাসপাতালটির চারপাশে ট্যাংক নিয়ে অবস্থান নিয়েছে তারা। দখলদার ইসরাইলি বাহিনী হাসপাতাল ঘিরে ধরে রাখা ছাড়াও এটির ভেতর সরাসরি হামলা চালিয়েছে। এতে করে আল-শিফা হাসপাতালের কার্যক্রম বন্ধ হয়ে গেছে। ইসরাইলি বাহিনীর অভিযোগ, হাসপাতালের ভেতর থেকে হামাস তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে। আর এ কারণেই তারা এখন হাসপাতাল টার্গেট করেছে। অন্যদিকে ফিলিস্তিনিরা বলছে, অসহায় মানুষকে টার্গেট করছে ইসরাইলি বাহিনী। নানা অজুহাত দাঁড় করিয়ে তারা তাদের হামলাকে যৌক্তিক বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করছে।
গত ৭ অক্টোবর হামাস ও ইসরাইলের মধ্যে যুদ্ধ বাধার পর গাজা উপত্যকার বৃহত্ এ হাসপাতাল প্রাঙ্গণে আশ্রয় নিয়েছিল কয়েক হাজার মানুষ। এছাড়া আহত হয়ে ভর্তি ছিল আরো কয়েক শ মানুষ। কিন্তু ইসরাইলি সেনারা ট্যাংক নিয়ে হাসপাতালের কাছে আসার পর এবং এটির ভেতর সরাসরি হামলা চালানোর পর অনেকে সেখান থেকে চলে যায়। জ্বালানির অভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়া আল-শিফা হাসপাতালের ভেতর এখন সবচেয়ে শঙ্কায় আছে ইনকিউবেটরে থাকা সদ্য জন্ম নেওয়া কয়েক শিশু। যদিও ইসরাইলি সেনাবাহিনী জানিয়েছিল, এসব শিশুকে সরিয়ে নিতে তারা সহায়তা করবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত এ ধরনের কোনো কিছু দেখা যায়নি।
এদিকে ইসরাইলের বিমানবাহিনীর হামলায় নোয়া মারসিয়ানো নামের এক ইসরাইলি জিম্মির মৃত্যু হয়েছে। তিনি ইসরাইলি সেনাবাহিনীর সদস্য ছিলেন। সোমবার রাতে হামাসের সামরিক শাখা আল-কাসেম ব্রিগেডসের টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে একটি ভিডিও প্রকাশ করা হয়। ঐ ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, নোয়া মারসিয়ানো কথা বলছেন। তিনি তার পরিচয় দিচ্ছেন এবং বলছেন চার দিন আগে তাকে গাজায় ধরে নিয়ে আসা হয়েছে। ভিডিওটির শেষে তার মরদেহ দেখানো হয়। মরদেহটির মাথায় গভীর ক্ষতও দেখা যাচ্ছিল। নোয়ার কথা বলার এ ভিডিওটি গত ১১ অক্টোবর ধারণ করা হয়েছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে। হামাস দাবি করেছে, ইসরাইলিদের চালানো বিমান হামলায় আহত হয়ে নোয়া গত ৯ নভেম্বর প্রাণ হারিয়েছেন।