ঘরের সাজে পূজার আমেজ

Share Now..

দুর্গাপূজায় পোশাক-আশাকসহ অন্যান্য সাজসজ্জার পাশাপাশি ঘরের দিকেও দিতে হবে বিশেষ নজর। পূজার দিনগুলো মনে যেন অন্যরকম এক আনন্দ বিরাজ করে।  

তবে আনন্দকে আরও দ্বিগুণ বাড়িয়ে তুলতে অবশ্যই ঘরের সাজসজ্জার দিকে বিশেষ নজর দিতে হবে।  পূজায় সারাদিন বাইরে ঘুরাঘুরি হলেও পূজার সময় কমবেশি অনেক অতিথি বেড়াতে আসে বাড়িতে। তাই পূজার সময় ঘরকে অবশ্যই নান্দনিকভাবে সাজাতে হবে। পূজায় ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে আলপনা, নানা ধরনের ফুল, এছাড়া অবশ্যই দেশীয় আসবাবপত্রের দিকে প্রাধান্য দেওয়া উচিত । বিশেষ নজর দিতে হবে ঘরের মেঝেতে ঘরের দেয়ালে। 

ঘরের মেঝেতে আলপনা 
পূজার আসল আমেজ হচ্ছে আলপনা পূজা মানেই নানান রঙের নকশায় আলপনা দিয়ে ঘরের মেঝে সাজানো হবে। আলপনা নকশার ক্ষেত্রে বেশিরভাগ সময় প্রাধান্য দেওয়া হয় মান্ডালাকে এছাড়াও বিভিন্ন ধরনের ফুল লতাপাতা কিংবা কোন ধর্মীয় শুভ চিহ্ন কেউ ব্যবহার করা হয়। আগেকার দিনগুলোতে চালের গুলা গুলিয়ে আলপনা দেওয়ার প্রচলন ছিল তবে এখন যুগের সাথে সাথে সবকিছুই পরিবর্তন এসেছে।  তাই আলপনা দেওয়ার ক্ষেত্রে রঙকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে। 

অন্দর সজ্জায় ফুল 
পূজা মানেই ঘরের চারিদিক যেন ফুলের গন্ধে ভরে যায় পূজা মানেই চারিদিকে নানা ধরনের ফুল দিয়ে ঘরকে সাজানো যেন ঘরে এলেই ফুলের আভা মনকে ভরিয়ে তোলে এছাড়াও কি দিয়া গাঁদা ফুল দিয়ে পূজা ঘর সাজানো তো সব সময় প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে। পুজোর দিন গুলোতে ফুলদানিতে চেষ্টা করতে হবে রজনীগন্ধা কিংবা দোলনচাঁপার মতো সুগন্ধ যুক্ত কাঁচা ফুল রাখতে। মাটির বড় পানি দিয়ে গোলাপ ফুলের পাপড়ি দিয়ে সাজিয়ে রাখতে পারেন।

বসার ঘর 
বসার ঘরটা নান্দনিক করার জন্য ঘরের এক পাশে বেতের ল্যাম্প রাখতে পারেন। কিছু বড় ছোট মিলিয়ে মাটির শোপিজ রাখা যেতে পারে যেমন হাতি, পুতুল, ঘোড়া ইত্যাদি। চাইলে ঘরটি কোনো একটি নির্দিষ্ট থিমেও সাজানো যেতে পারে, যেমন বেত কিংবা জুট দিয়ে বসার ঘরটি সাজাতে পারেন। ঘরের কোণে বেতের একটি মোড়া রেখে দিতেন পারে, আবার বুক সেলফের উপর পেইন্ট করা কোনো হ্যারিকেন। এতে আপনার ঘরে গ্রামীণ ঐতিহ্যের ছোঁয়া পাবে। এছাড়া বারান্দায় বড় হলে বেতের সোফা রাখতে পারেন, তাহলে বন্ধুবান্ধব বাড়িতে এলে সেখানে বলেও আড্ডা দেয়া যাবে। যেহেতু পুজোতে অনেক অতিথি আসে সেক্ষেত্রে নিচে বসার ব্যবস্থা করে দেয়ার জন্য পাটের কার্পেট কিন্তু শীতল পাটির ব্যবস্থা রাখতে পারেন। রুমের নান্দনিকতা বাড়াতে ব্যবহার করতে পারেন বেতের আসবাব। বেডের ওপর হরেক রং এর কুশন রাখতে পারেন। সোফার কভার উজ্জ্বল রঙের রাখার চেষ্টা করতে হবে। বাড়িতে পুরনো কোনো টাংক কিংবা বাক্স থাকলে তা নিজের হাতে পেইন্ট করেও ঘরের কোনো রেখে দিতে পারেন যা আপনার ঘরের সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি করবে।

  • পর্দা ও চাদর 
  • পর্দা হালকা রঙের মধ্যে ফুল লতাপাতা এই ধরনের প্রিন্টের পর্দা লাগাতে পারেন। এছাড়াও নেটের পর্দা পূজার ক্ষেত্রে ঘর সাজানোর জন্য বিশেষ নজর করে। চাদরের জন্য  ব্যবহার করতে পারেন নকশী কাঁথা কিংবা জামদানী মোটিভের চাদর। বিছানায় কয়েকটা রঙিন কুশন রাখতে পারেন। 
  • দেওয়ালের সজ্জা 
  • দেয়ালকে দেশীয় ঐতিহ্য সাজাতে হাত পাখা, কুলা ইত্যাদি টানিয়ে দিতে পারেন। এছাড়া বাসার গাছ গুলো জুটের টন কিংবা রঙিন হাঁড়িতে রাখতে পারেন। এতে করে বাড়ির গাছগুলোও শোপিজে পরিণত হবে। ঘরের বিভিন্ন জায়গায় ল্যাম্প রেখে দিতে পারেন কারণ ঘরের নান্দনিকতা বাড়াতে আলোকসজ্জার অনেক ভূমিকা রয়েছে। ঘরের বিভিন্ন জায়গার দেয়ালে বেত কিংবা কাঠের আয়না ভুলে দিতে পারেন। চাইলে ঘরের যেকোনো একটি দেয়ালে গণেশ, রাধা-কৃষ্ণ, মাদুর্গা, সরস্বতী যেকোনো মূর্তি লাগাতে পারেন আপনার পছন্দ অনুযায়ী। 

খাবার টেবিল 
একঘেয়ে ডিনার সেটে খাবার পরিবেশন না করে কাঁসা কিংবা মাটির সেটে খাবার পরিবেশন করা যেতে পারে। খাবারের ঘরের চেয়ার দেশীয় কাপড়ে তৈরি রানার লাগিয়ে নিতে পারেন। খাবারের টেবিলে উপরে সিলিং এ বেতের ঝুলন্ত ল্যাম্প লাগিয়ে নিতে পারেন। ডাইনিং টেবিলের পাশে জায়গা থাকলে বনসাই গাছ রাখতে পারেন। সম্ভব হলে নতুন করে ঘরে রঙ করে নিতে হবে, এতে আপনার ঘরটি বেশ উজ্জ্বল দেখাবে। 

পুজোতে ঘর সাজাতে আপনার খুব দামী জিনিস ব্যবহার করতে হবে এমন নয়। কম খরচে যে কেউ নিজের ঘরকে নান্দনিকভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারে। ঘর সাজানো অনেকটা কচির ব্যাপার যে যার ইচ্ছে মতো ঘর সাজাবে কিন্তু পূজোতে ঘর সাজানোর ক্ষেত্রে দেশীয় ছোঁয়া ধরে রাখার চেষ্টা করতে হবে এবং ঘরের প্রতিটা জিনিস উজ্জ্বল রঙের রাখা যেতে পারে। এতে পুজোর সময় আপনার ঘরটি প্রাণ ফিরে পাবে। উৎসবের আমেজ আনন্দে কাটুক প্রত্যেকের জীবন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *