ঘুষের টাকাসহ গ্রেফতার প্রতারক দুর্নীতির মামলা থেকে বাঁচতে ভুয়া দুদক কর্মকর্তাকে ঘুষ দিলেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা!

Share Now..


আসিফ কাজল, ঝিনাইদহঃ
দুর্নীতি দমন কমিশনের খলনা অফিসের কর্মকর্তা পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজী করার দায়ে শরীফ মিয়া নামে এক ভুয়া দুদক কর্মকর্তাকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। মোহাম্মদ শরীফ মিয়া ময়মিনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার পরশিপাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে। এ ঘটনায় ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ থানায় একটি মামলা হয়েছে। জানা গেছে, কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শামীমা শিরিন লুবনার বিরুদ্ধে করোনাকালীন সরকারি বরাদ্দের টাকা আত্মসাৎ নিয়ে গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। তদন্তে টাকা আত্মসাতের ঘটনা প্রমানিত হলেও স্বাস্থ্য বিভাগ তার কেশ স্পর্শ করতে পারেনি। উপরন্ত তাকে শাস্তি না দিয়ে ঢাকায় বদলী করে। স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কাছ থেকে চাঁদা আদায়ের জন্য ফাঁদ পাতে শরীফ মিয়া। খুলনা দুদক অফিসার অফিসার পরিচয় দিয়ে ওই স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে ফোন করেন। টাকা না দিলে মামলা ও গ্রেফতারের ভয় দেখায়। নিজের চাকরী ও গ্রেফতার এড়াতে ভুয়া দুদক অফিসের ফাঁদে পা দেয় ডা: শামীমা শিরিন লুবনা। পর্যায়ক্রমে বিকাশ, নগদ ও রকেট নম্বরে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা প্রদান করেন তিনি। পরে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন শরীফ মিয়া ভুয়া দুদক অফিসার। স্ত্রীর পক্ষে গত ৫ নভেম্বর মামলা করেন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: শামীমা শিরিন লুবনার স্বামী ডা: আব্দুল্লাহিল কাফী। মামলার এজাহারে স্বামী ডা: আব্দুল্লাহিল কাফী উল্লেখ করেন, ২০২১ সালের ৬ জুন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা শামীমা শিরিন লুবনার ফোনে ফোন দিয়ে দুদকে মামলা ও গ্রেফতারের হুমকী দেন। টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানালে স্ত্রীর চাকুরির ক্ষতি ও গ্রেফতার করা হবে বলেও জানানো হয়। আত্মসম্মানের ভয়ে তার স্ত্রী একটি নম্বরের বিকাশ, রকেট ও নগদ একাউন্টে ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা প্রদান করেন। কালীগঞ্জ থানার এসআই জাকারিয়া মাসুদ জানান, তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৬ নভেম্বর কালীগঞ্জ থানা পুলিশ ময়মিনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার পরশিপাড়া এলাকার সিরাজুল ইসলামের ছেলে মোহাম্মদ শরীফ মিয়া নামে ওই ভূয়া দুদক কর্মকর্তাকে আটক করেছে। এ সময় তার কাছ থেকে ঘুষের ৭৭ হাজার টাকা জব্দ করা হয়েছে। তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। উল্লেখ্য, কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শামীমা শিরিন লুবনার বিরুদ্ধে অত্র দৈনিকে “করোনায় হোটেলে না থেকেও চিকিৎসকদের বিল ৫৭৬০০ টাকা!” শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের তদন্তে টাকা আত্মসাৎ ঘটনা প্রমানিত হলেও কোন শাস্তিমুলক ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়নি। ভুয়া দুদক অফিসারকে মোটা অংকের টাকা প্রদান প্রমান করে কালীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সাবেক স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা: শামীমা শিরিন লুবনা সরকারী অর্থ আত্মসাতের সঙ্গে জড়িত।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *