চলতি মাসেও বড় ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস, নাম হবে ম্যান্দোস

Share Now..


প্রলয়ংকরী ঘূর্ণিঝড়ের মাস নভেম্বর। উপকূলবাসীদের কাছে এই মাসটি আতঙ্কের। কারণ গত ৫ দশকে দেশে যত প্রলয়ংকরী হারিকেন, সুপার সাইক্লোন, ঘূর্ণিঝড় হয়েছে তা নভেম্বরে। চলতি নভেম্বরেও বড় ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ মাসে বঙ্গোপসাগরে দুইটি লঘুচাপ-নিম্নচাপ সৃষ্টি হতে পারে, এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ পরিগ্রহ করতে পারে। বঙ্গোপসাগরের নতুন করে কোনো ঘূর্ণিঝড় সৃষ্টি হলে তার নাম হবে ‘ম্যান্দোস’। এ নামটি সংযুক্ত আরব আমিরাতের দেওয়া।আবহাওয়া অধিদপ্তর মাসিক পর্যালোচনা বৈঠক শেষে গতকাল আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিচালক ও বিশেষজ্ঞ কমিটির চেয়ারম্যান মো. আজিজুর রহমান জানান, এ দেশে ঘূর্ণিঝড়ের অতীত পর্যায়ক্রম থেকে জানা যায়, কার্তিক-অগ্রহায়ণ মাসে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট প্রবল ঘূর্ণিঝড়-জলোচ্ছ্বাস এ অঞ্চলে আঘাত হানে এবং ব্যাপক ক্ষতি সাধিত হয়। চলতি মাসে বঙ্গোপসাগরে সৃষ্টি হতে পারে দুটি লঘুচাপ। যার একটি শেষ পর্যন্ত বড় ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। এ মাসে দেশে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হতে পারে। বর্তমানে মৌসুমের একটি স্বাভাবিক লঘুচাপ দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে অবস্থান করছে। যার বর্ধিতাংশ উত্তরপূর্ব বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। এখন দিন ও রাতের তাপমাত্রা ক্রমশ কমবে। এ মাসে দেশের উত্তরাঞ্চল ও নদী অববাহিকায় ভোর থেকে সকাল পর্যন্ত হালকা বা মাঝারি ধরনের কুয়াশা পড়তে পারে। এ ছাড়া দেশের প্রধান নদ-নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ বিরাজমান থাকতে পারে।

আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়াবিদ মনোয়ার হোসেন বলেন, গত ২০ অক্টোবর বাংলাদেশ থেকে দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু বিদায় নিয়েছে। এখন বর্ষা-পরবতী সময়। এ সময়ে সাইক্লোন বা নিম্নচাপের সৃষ্টি হতে পারে। সেটা ঘূর্ণিঝড়েও রূপ নিতে পারে। সিডর হয়েছিল ২০০৭ সালের ১৫ নভেম্বর।

কানাডার সাসকাচুয়ান বিশ্ববিদ্যালয়ের আবহাওয়া ও জলবায়ু বিষয়ক গবেষক মোস্তফা কামাল পলাশ যুক্তরাষ্ট্রের আবহাওয়া পূর্বাভাস মডেল থেকে প্রাপ্ত সর্বশেষ তথ্য বিশ্লেষণ করে বলেন, সিত্রাংয়ের রেশ কাটতে না কটতে চলতি নভেম্বরে বঙ্গোপসাগরে আরেকটি ঘূর্ণিঝড় তৈরি হতে পারে। আগামী ৭ থেকে ১০ নভেম্বরের ভেতর একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়ে নিম্নচাপে রূপ নিতে পারে। ১১ থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে স্থলভাগে আঘাত হানতে পারে।
সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত বরিশালে : আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, অক্টোবর মাসে সার্বিকভাবে সারা দেশে স্বাভাবিকের চেয়ে ৪২ দশমিক ৯ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। অতি ভারী বর্ষণ ঘটিয়েছে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। সে সময় বরিশালে দেশের সর্বোচ্চ ৩২৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। অক্টোবরে বরিশালে স্বাভাবিকের চেয়ে ১৫০ শতাংশ বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে। এছাড়া স্বাভাবিকের চেয়ে ২২ দশমিক ২ শতাংশ কম বৃষ্টিপাত হয়েছে রাজশাহীতে। অক্টোবরে ঢাকায় বৃষ্টিপাত হয়েছে ৩১২ মিলিমিটার। ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ২৩-২৫ অক্টোবর দেশের অধিকাংশ স্থানে মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বৃষ্টিপাত হয়। এছাড়া সিত্রাংয়ের প্রভাবে ঢাকাতেও ঐ দিন ১৩ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত হয়।

1,067 thoughts on “চলতি মাসেও বড় ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাস, নাম হবে ম্যান্দোস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *