চার বছর পর বৃত্তির টাকা পেয়েও শিক্ষার্থীদের অসন্তোষ

Share Now..


বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক, ইবি-
প্রথম বর্ষের শিক্ষাবৃত্তির টাকা চতুর্থবর্ষে পেলেও অসন্তোষের দানা বেঁধেছে ইসলামী বিশ^বিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা। হিসাব অনুযায়ী প্রাপ্ত টাকার এক তৃতীয়াংশ কম পেয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।
একাডেমিক অফিসের বৃত্তি শাখা সূত্রে, বিশ^বিদ্যালয়ের মোট বিভাগ ৩৪ টি। এর মধ্যে ২৫ টি (নতুন ৯ টি বাদে) বিভাগে মেধা ও সাধারণ দুই ক্যাটাগরিতে শিক্ষাবৃত্তি চালু রয়েছে। প্রতিটি বিভাগের প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থবর্ষের মেধবাতালিকায় থাকা প্রথম ছয়জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষাবৃত্তি দেয় বিশ^বিদ্যালয় প্রশাসন। চার শিক্ষাবর্ষ থেকে প্রথম তিনজন করে মোট ৩০০ জনকে মেধায় এবং পরের তিনজন থেকে মোট ৩০০ শিক্ষার্থীকে সাধারণ বৃত্তি দেয়া হয়।
মেধাতালিকায় থাকা একজন শিক্ষার্থীকে মাসিক ১২০ টাকা এবং সাধারণে ১০০ টাকা করে বৃত্তি প্রদান করা হয়। মেধাতালিকাদের থেকে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের বেতন ফেরত বাবদ ৩০০ এবং কলা ও বানিজ্যের শিক্ষার্থীদের ১৯২ টাকা বৃত্তির টাকার সঙ্গে যোগ করা হয়। সেই হিসাবে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা একবর্ষে পায় ১৭৪০ টাকা এবং কলা ও বানিজ্যের শিক্ষার্থীরা ১৬৩২ টাকা। এছাড়া সাধারণ তালিকায় থাকা শিক্ষার্থীরা পায় বাৎসরিক ১২০০ টাকা। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে ২০১৮ সালের দিকে বৃত্তির টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন প্রশাসন। ওই বছরের পহেলা অক্টোবর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটের ২৪২ তম সভায় মেধাবৃত্তি ১২০ থেকে বাড়িয়ে ২০০ এবং সাধারণ বৃত্তি ১০০ থেকে বাড়িয়ে ১৫০ টাকার অনুমোদন দেয় প্রশাসন।
সিন্ডিকেট অনুমোদিত হিসাব অনুযায়ী গতবছরের ১৫ মার্চ এক বিজ্ঞপ্তিতে ৭ এপ্রিলের মধ্যে শিক্ষার্থীদের বৃত্তির টাকা গ্রহণের জন্য আবেদন করতে বলা হয়। এক্ষেত্রে ২০১৬-১৭, ২০১৫-১৬ ও ২০১৪-১৫ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের যথাক্রমে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের ফলাফলের উপর ভিত্তি করে বৃত্তি প্রস্তুতের কথা জানানো হয়। কিন্তু ১৭ মার্চ থেকে করোনায় ক্যাম্পাস ছুটি হওয়ায় শিক্ষার্থীরা আবেদন করতে পারেনি। পরে গত মার্চে বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তালিকা চেয়ে স্ব-স্ব বিভাগে নোটিশ পাঠায় কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষার্থীদের আবেদন করতে বলা হয়। বিভাগ কর্তৃক তালিকা পাঠানো ও আবেদন শেষ হলে তা পর্যবেক্ষণ শেষে গত বৃহস্পতিবার ( ২৬ আগস্ট) মোবাইল ব্যাংকিং এ শিক্ষার্থীদের মাঝে টাকা পাঠানো হয়। তবে শিক্ষার্থীদের সিন্ডিকেট অনুমোদিত টাকা দেয়া হয়নি বরং পূর্বের হিসাবে টাকা প্রদান করা হয়েছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীরা।

এবিষয়ে ফলিত পুষ্টি ও খাদ্য প্রযুক্তি বিভাগের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান বলেন, প্রথম বর্ষের টাকা চার বছর পর পেলাম। পরের বর্ষগুলোর টাকা হয়তো দেখে যেতে পারবো না। তারপরও আবার টাকা এক-তৃতীয়াংশ কম দেয়া হলো। এ সামান্য বৃত্তি পেতে আবার ব্যাংকে ৫০০ টাকা জমা দিতে হয়। অথচ অন্য বিশ^বিদ্যালয়ে আমাদের থেকে তিন-চারগুন বেশি টাকা প্রদান করা হয়।
হৃদয় পাল নামের আরেক শিক্ষার্থী বলেন, ১৬৩২ টাকা পেয়েছি। ৩ বছর পরে দিয়েও ৮০০ টাকা কম দিয়েছে। এর সমাধান কোথায়?
এ বিষয়ে বৃত্তি শাখার সহকারী রেজিস্ট্রার ইনামুল কবির বলেন, এবার আগের নিয়মে টাকা দেওয়া হয়েছে। নতুন করে বাড়ানোর পর এটি এখনো কার্যকর হয়নি। পরবর্তী সেশন থেকে কার্যকর হবে। তবে এবার বিভাগসমূহে ভুলবশত নতুন কার্যকর হওয়ার নোটিশটি পাঠানো হয়েছে। যার কারণে শিক্ষার্থীরা ভুল তথ্য পেয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক শাখার প্রধান এ. টি. এম এমদাদুল আলম বলেন, ‘প্রশাসন যে টাকা দিবে একাডেমিক শাখা সে টাকা শিক্ষার্থীদের অবশ্যই দিবে। আমি এবিষয়ে খোঁজ নিব।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *