চাল সরবরাহে মিলারদের লোকসান ধানে সাড়া নেই ঝিনাইদহের খাদ্য গুদামগুলোতে কৃষক ও চাল ব্যাসায়ীদের পদাচারণা নেই

Share Now..


আসিফ কাজলঃ
ধান চাল কেনার এই ভরা মৌসুমে ঝিনাইদহের সরকারী খাদ্য গুদামগুলো এখন জনমানবহীন। সর্বত্র যেন শুনসান নীরবতা। গোডাউন এলাকায় নেই কৃষক ও চালকল ব্যাসায়ীদের পদাচারণা। এমন চিত্র নিয়ে হতাশায় দিন পার করছেন খাদ্য বিভাগের কর্মকর্তা কর্মচারীদের। তথ্য নিয়ে জানা গেছে, চলতি আমন সংগ্রহ মৌসুমে ঝিনাইদহ জেলায় ৬ হাজার ৭০৩ মেট্রিক টন ধান কেনার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু দুই মাস পার হলেও ছয় উপজেলায় এক ছাটক ধানও সংগ্রহ যায়নি। সরকারী রেটের চেয়ে বাজার মুল্য বেশি হওয়ায় কৃষকরা ধান বিক্রি করেনি। মৌসুমের শুরুতে ঝিনাইদহে প্রতিমন ধান ১৩০০ থেকে ১৪০০ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছিল। গতকাল বুধবার পর্যন্ত ধানের দাম কমে ১১৮০ থেকে ১২০০ টাকা মনে দাড়িয়েছে। অথচ সরকারী রেট অনুযায়ী ধানের দাম ১১২০ টাকা মন। এদিকে ঝিনাইদহের ৬ উপজেলায় আমন সিদ্ধ চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৮ হাজার ২২৯ মেট্রিক টন। গতকাল বুধবার পর্যন্ত সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ১৮০৫ মেট্রিক টন চাল। এর মধ্যে সদর উপজেলায় ১৩৯৭ মেট্রিক টন, কালীগঞ্জে ২৫০ মেট্রিক টন, কোটচাঁদপুরে ৫৪ মেট্রিক টন ও হরিণাকুন্ডু উপজেলায় ১০৩ মেট্রিক টন চাল কেনা সম্ভব হয়েছে। শৈলকুপা ও মহেশপুর উপজেলায় মিলাররা চাল সরবরাহে সাড়া দেয়নি। ঝিনাইদহ খাদ্য বিভাগ সুত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহে মোট চালকলের সংখ্যা ২৪০টি। এরমধ্যে মাত্র ৮০ জন মিল মালিক চাল সরবরাহের জন্য চুক্তি করেছেন। বাকী ১৬০ জন মিলার চাল সরবরাহে আগ্রহ দেখায়নি। চাল সরবরাহ করেছেন এমন একাধিক মিল মালিকরা জানিয়েছেন, তারা প্রতি কেজিতে আড়াই টাকা লোকসান দিয়ে চাল সরবরাহ করেছেন। ঝিনাইদহ মিল মালিক সমিতির সভাপতি বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ধান চালের দাম সরকারী ভাবে বৃদ্ধি না করলে এই সংগ্রহ অভিযান সফল হবে না। কারণ এক মন মোটা ধানে ২৬ কেজি চাল হয়। মোটা ধান মনপ্রতি কিনতে হয়েছে ১১৮০ টাকায়। এবার এক মন ধান মাড়াই করতে খরচ হচ্ছে ১৩০ টাকা। সব খরচ দিয়ে প্রতি কেজি মোটা চালের উৎপাদন ব্যায় পড়ে যাচ্ছে ৪৪ টাকা ৫১ পয়সা। সেখানে সরকারী ভাবে প্রতি কেজি চালের দাম দেয়া হচ্ছে ৪২ টাকা করে। এতে চাল ব্যাসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছেন। তিনি বলেন মিলাররা ট্রাক প্রতি ৫০ হাজার টাকা লোকসান দিয়ে এবার চাল সরবরাহ করেছে। তাও অনেকেই সরকারের আহবানে সাড়া দেয়নি। বিষয়টি নিয়ে ঝিনাইদহ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক হাসান আলী জানান, গত বছরের ১৭ নভেম্বর থেকে ধান চাল কেনার মৌসুম শুরু হয়। চলবে আগামী ২৮ ফেব্রয়ারি পর্যন্ত। এই সময়ের মধ্যে ধান চাল কেনার চেষ্টা করা হচ্ছে। তিনি বলেন ১১ জানুয়ারী ২০২৩ পর্যন্ত জেলায় ১৮০৫ মেট্রিক টন চাল কেনা হলেও ধান সংগ্রহ হয়নি। তিনি বলেন বাজারের সঙ্গে সরকারী রেটের মিল না থাকায় কৃষক ও মিলাররা সাড়া দিচ্ছে না। তারপরও জেলা খাদ্যগুদামগুলোতে পর্যাপ্ত পরিমান খাদ্য মজুদ রয়েছে বলে তিনি জানান।

One thought on “চাল সরবরাহে মিলারদের লোকসান ধানে সাড়া নেই ঝিনাইদহের খাদ্য গুদামগুলোতে কৃষক ও চাল ব্যাসায়ীদের পদাচারণা নেই

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *